আঙ্কারা ও ইস্তানবুল, ৬ ফেব্রুয়ারি (হি.স.): ঘড়ির কাঁটা যত গড়াচ্ছে ততই তুরস্ক-সিরিয়ায় ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা লাফিয়ে বাড়ছে। ভারতীয় সময় সন্ধে সাতটা অনুযায়ী, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে দুই দেশে ২৩০০ জনের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। ধ্বংসস্তুপের নিচে চাপা পড়ে রয়েছেন আরও অসংখ্য মানুষ। ফলে মৃতের সংখ্যা লাফিয়ে শুধু প্রকৃতির ছোবলে যে মৃত্যুর ঢল নেমেছে তাই নয়, উদ্ধারকার্যেও বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রকৃতি। লাগাতার বৃষ্টি, তুষারপাত আর প্রচণ্ড ঠাণ্ডার কারণে উদ্ধারকার্য চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন উদ্ধারকারীরা। বহু জায়গায় বৃষ্টি আর তুষারপাতের কারণে উদ্ধারকার্য বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
সোমবার ভোরে শক্তিশালী ভূমিকম্পে উপর্যুপরি কেঁপেই চলেছে তুরস্ক ও সিরিয়া। সোমবার ভোরে অনুভূত হয়েছে ৭.৮ তীব্রতার ভূকম্পন। ভূকম্পনের উৎসস্থল ছিল দক্ষিণ তুরস্কে, গাজিয়ানতেপ প্রদেশের পূর্ব দিকে নুরদাগি শহর থেকে ২৩ কিলোমিটার পূর্বে ভূগর্ভের প্রায় ১৭.৯ কিলোমিটার গভীরে। এর কিছুক্ষণ পর আরও একটি কম্পন অনুভূত হয় মধ্য তুরস্কে। ইউনাইটেড স্টেটস জিওলজিক্যাল সার্ভে (ইউএসজিএস)-এর মতে, দ্বিতীয় কম্পনের তীব্রতা ছিল ৬.৭। প্রথমে ৭.৮ তীব্রতার ভূমিকম্প অনুভূত হয় ভোর ৪.১৭ মিনিট নাগাদ, এরপর প্রায় ১৫ মিনিট পর ৬.৭ তীব্রতার ভূমিকম্প অনুভুত হয়। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে দুই দেশে ২,৩০০ জনের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। তুরস্কে সর্বশেষ ১,৪৯৮ জন নিহত হয়েছেন। দেশটিতে পরপর দুটি বড় ভূমিকম্প হয়েছে। সিরিয়ায় ভূমিকম্পের আঘাতে মারা গেছে ৭৮৩ জন। ভূমিকম্পের সময়ে অনেকেই ঘুমিয়ে ছিলেন। ফলে প্রাণ নিয়ে পালানোর সময়টুকু পাননি তাঁরা। ঘুমের ঘোরেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন স্থানীয বাসিন্দারা।
ইতিমধ্যেই সর্বশক্তি নিয়ে উদ্ধারকার্যে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন উদ্ধারকারীরা। কিন্তু লাগাতার বৃষ্টি আর তুষারপাতের কারণে উদ্ধারকার্য চালাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন তাঁরা। তুরস্কের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফুয়াত ওকতেই সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, যে অঞ্চলে ভূমিকম্প হয়েছে সেখানকার আবহাওয়া যথেষ্টই প্রতিকুল। ফলে উদ্ধারকার্যে গতি আনা যাচ্ছে না। আর সঠিক সময়ে উদ্ধারকার্য চালাতে না পারায় ধ্বংসস্তুপের নিচে চাপা পড়া বহু মানুষ বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছেন। ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় যত দ্রুত সম্ভব উদ্ধারকারীরা পৌঁছনোর চেষ্টা করছেন।’
দুই দেশে ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তুরস্ক। এ দেশটিতেই কেবল নিহতের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে ধারণা করছে মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস। সংস্থাটি বলেছে, মৃতের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে এক লাখেও পৌঁছে যেতে পারে। ক্ষতি হতে পারে ১ থেকে ১০ বিলিয়ন ডলারের।