বাসন্তী, ৮ জানুয়ারি (হি. স.) দক্ষিণ ২৪ পরগনার গ্রামে নয় বছরের শিশুকন্যাকে খুন করে প্রতিবেশীর ঘরের মেঝেতে পুঁতে দেওয়ার ঘটনার তদন্তে এল ফরেন্সিক দল। রবিবার দুই সদস্যের ফরেন্সিক দলের সদস্যরা গ্রামে গিয়ে এ বিষয়ে আরও তদন্ত করেন। ঘটনাস্থল থেকে বেশ কিছু নমুনা সংগ্রহ করেন তদন্তকারীরা।
গত বুধবার থেকে নিখোঁজ ছিল ঐ শিশুকন্যা। চতুর্থ শ্রেণির ঐ ছাত্রী সেদিন স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পর থেকেই নিখোঁজ ছিল। পরিবারের সদস্যরা অনেক খোঁজাখুঁজি করলেও কোন খোঁজ মেলেনি দুদিন। স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়িতে মৌখিক অভিযোগও জানিয়েছিলেন ঐ শিশুর পরিবার। অবশেষে দুদিন বাদে গত শুক্রবার প্রতিবেশীর বাড়িতে ঘরের মেঝে খুঁড়ে উদ্ধার হয় ঐ শিশুটির মৃতদেহ। ঘটনার খবর পেয়েই বাসন্তী থানার পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। পুলিশের প্রাথমিক দাবি খুন করে দেহ লোপাটের জন্যই ঘরের মেঝেতে পুঁতে দেওয়া হয়েছিল। এই ঘটনায় নিহতের পরিবার বাসন্তী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ মূল অভিযুক্ত সহ মোট দুজনকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে। ধৃতদের ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ধৃতদের নিজেদের হাফাজতে নিয়ে এ বিষয়ে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে বাসন্তী থানার পুলিশ।
পাশাপাশি সঠিক কিভাবে খুন হয়েছে, খুনের আগে কোনওভাবে যৌন নির্যাতন হয়েছে কিনা, ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে কিনা, এই খুনের ঘটনায় আরও কে বা কারা জড়িত রয়েছে তা জানার চেষ্টা করছে বাসন্তী থানার পুলিশ। তাই আরও বিস্তারিত তদন্তের জন্য ফরেন্সিক দলের সাহায্যের আবেদন জানানো হয়েছিল পুলিশের তরফ থেকে। সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে রবিবাদ দুই সদস্যের ফরেন্সিক দল ডঃ সন্দীপ ঘোষের নেতৃত্বে এদিন ঘটনাস্থলে আসেন। পাশাপাশি এসডিপিও ক্যানিং, আইসি বাসন্তী সহ অন্যান্য পুলিশ আধিকারিকরাও ঘটনাস্থলে পৌঁছন। ফরেন্সিক দল এদিন ঘটনাস্থল এবং ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া মূল অভিযুক্তের ঘরে তল্লাশি চালিয়ে বেশ কিছু নমুনা সংগ্রহ করেছেন।
তাঁরা বলেন, “ ঘটনাস্থল থেকে বেশ কিছু নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে, সেগুলি ল্যাবরেটরিতে নিয়ে গিয়ে পরীক্ষার পর এই খুনের ঘটনা সম্পর্কে আরও তথ্য মিলবে।” এদিন এসডিপিও ক্যানিং বলেন, “ ইতিমধ্যেই আদালতের নির্দেশে ধৃত দুজনকেই পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। পুলিশি জেরায় খুন করে দেহ মেঝেতে পুঁতে দেওয়ার কথা স্বীকার করেছে অভিযুক্তরা। তবে এ সম্পর্কে আরও জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।” তবে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ পরিবারের সদস্যরা করলেও পুলিশের তরফে এ বিষয়ে এখনও কোন প্রতিক্রিয়া মেলেনি।