আগরতলা, ১ ডিসেম্বর (হি.স.) : কোভিড বিধি লঙ্ঘন করে জমায়েত এবং পুলিশের কাজে বাধা ও দৈহিকভাবে লাঞ্ছনার দায়ে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার সহ নয় জন সিপিএম নেতার বিরুদ্ধে পুলিশ মামলা দায়ের করেছিল। আজ বুধবার তাঁরা আদালতে হাজিরা দিয়ে জামিন নিয়েছেন। ওই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ২৫ জানুয়ারি ধার্য হয়েছে।
আদালতে জামিন নিয়ে বের হওয়ার পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার বলেন, ২০২০ সালের ২৬ আগস্ট সারা দেশের সাথে ত্রিপুরায় ১৬ দফা দাবিতে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছিল সিপিএম। কিন্তু পুলিশ ওই কর্মসূচি পালনে বাধা দেওয়ায় আমরা প্যারাডাইস চৌমুহনিতে প্রতিবাদী-সভায় শামিল হয়েছিলাম। সভা শেষে পুলিশ আমাদের গ্রেফতার করে। কিন্তু কর্মীদের বিক্ষোভের মুখে পড়ে কিছুক্ষণ পর পুলিশ আমাদের ছেড়ে দেয়। তিনি বলেন, কোভিড বিধি লঙ্ঘন হবে, এই অজুহাতে পুলিশ আমাদের সেদিন কর্মসূচি পালনে অনুমতি দেয়নি। তাই আমরা এক জায়গায় জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলাম।
মানিক সরকার বলেছেন, ওই ঘটনায় পুলিশ আমাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিল। আজ আদালতে হাজিরা দেওয়ার নোটিশ পাঠানো হয়েছিল। সে মোতাবেক আদালতে হাজিরা দিয়েছি এবং জামিন পেয়েছি। তাঁর দাবি, কোভিড বিধি থাকা সত্ত্বেও শাসক দলের কর্মসূচিতে ওই সময় কোনও বিধিনিষেধ ছিল না। কিন্তু বিরোধীদের কর্মসূচিতেই শুধু আপত্তি ছিল। তবে মানুষ তা মেনে নেননি। তাই সেদিন আমরা রাস্তায় নেমেছিলাম।
এদিকে, ওই মামলা সম্পর্কে এপিপি বিদ্যুৎ সূত্রধর বলেন, কোভিড বিধি লঙ্ঘন করে জমায়েত এবং পুলিশের কাজে বাধা ও পুলিশ কর্মীদের দৈহিক লাঞ্ছনার দায়ে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার, প্রাক্তন মন্ত্রী বাদল চৌধুরী, প্রয়াত সিপিএম রাজ্য সম্পাদক গৌতম দাস, প্রাক্তন উপাধ্যক্ষ পবিত্র কর, প্রাক্তন মন্ত্রী মানিক দে, প্রাক্তন সাংসদ শংকরপ্রসাদ দত্ত, সিপিএম নেতা মধুসূধন দাস, রাণা দাস এবং সিপিএম নেত্রী কৃষ্ণা রক্ষিতের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৮৮, ২০৭, ৩৫৩ এবং ৩৪ ধারা ও অ্যাপিডেমিক ডিজিজ অ্যাক্ট-এর ধারা ৩ এবং ত্রিপুরা পুলিশ অ্যাক্ট ধারা ৮২ মোতাবেক মামলা দায়ের করা হয়েছিল। ওই মামলায় তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিক আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছেন। সেই সুবাদে আজ তাঁদের আদালতে হাজিরা দেওয়ার নোটিশ পাঠানো হয়েছিল।
বিদ্যুৎবাবু বলেন, আদালতে অভিযুক্তরা জামিনের আবেদন জানিয়েছিলেন। সেই আবেদনের বিরোধিতা করে জোর সওয়াল করা হয়েছে। কিন্তু আদালত ব্যক্তিগত ২০ হাজার টাকার বন্ড এবং জামিনদারের বিনিময়ে তাঁদের জামিন মঞ্জুর করেছে। পরবর্তী শুনানির দিন ২৫ জানুয়ারি ধাৰ্য করেছে আদালত।