ধলাই (অসম), ২৭ জানুয়ারি (হি.স.) : কাছাড় জেলার ধলাই থানার অধীন ভাগাবাজারের পার্শ্ববর্তী রাজনগর এলাকা থেকে প্রায় ৭২ লক্ষ টাকার আড়াই কিলোগ্রাম হেরোইন সহ গ্রেফতার করা হয়েছে তিন ড্রাগস পাচারকারীকে। ধৃতদের রাজনগরেরই বাসিন্দা নাজিম উদ্দিন লস্কর (৩৭), ফারুক উদ্দিন লস্কর (৩৪) এবং নজরুল হক লস্কর (৪৫) বলে পরিচয় পাওয়া গেছে। আজ তাদের শিলচরের বিচারবিভাগীয় আদালতে পেশ করা হয়েছিল। আদালত ধৃত তিনজনকেই বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠিয়েছে।
বুধবার কাছাড়ের পুলিশ সুপার বানোয়ারিলাল মিনার কাছে জানা গেছে, গতকাল ছিল প্রজাতন্ত্র দিবস। এ উপলক্ষ্যে জেলার সামগ্রিক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ কর্মীরা অত্যন্ত ব্যস্ত ছিলেন। এরই মধ্যে তিনদিন আগে গোয়েন্দা সূত্রে খবর আসে মায়ানমার থেকে ধলাই থানার অন্তর্গত ভাগাবাজারের রাজনগর এলাকা দিয়ে নেশাদ্রব্য পাচার হবে। তাঁর নির্দেশে ধলাই থানার ওসি সাহাব উদ্দিন বড়ভুইয়াঁ দলবল রাজাবাজারে গিয়ে ওৎ পেতে বসে থাকেন। ইত্যবসরে সকাল প্রায় দশটা নাগাদ এএস ০১ এইচএফ ৭৮১৩ নম্বরের একটি অল্টো কারের গতিবিধি দেখে অভিযানকারী পুলিশ দলের সন্দেহ হয়। তাঁরা গাড়িতে তালাশি চালিয়ে প্রায় আড়াই কেজির পরিমাণের নেশাসামগ্রী হেরোইন উদ্ধার করে তিন পাচারকারীকে আটক করেন।
এদিকে ধলাই থানার ওসি সাহাব উদ্দিন বড়ভুইয়াঁ জানান, গাড়িতে তালাশি চালিয়ে ১৬টি বড় আকারের প্লাস্টিক বাক্সের ভেতর থেকে ছোট আকারের ১১টি কৌটা তাঁরা উদ্ধার করেন। ছোট কৌটার মধ্যে আবার ছোট ছোট ১২টি করে কৌটায় ছিল ১২ গ্রাম পরিমাণ করে হেরোইন। এভাবে মোট ১৭৬টি কৌটায় মোট আড়াই কিলোগ্রাম হেরোইন উদ্ধার করেছে পুলিশের দল। এগুলির ভারতীয় বাজারমূল্য প্রায় ৭২ লক্ষ টাকা হবে বলে ধারণা করছেন ওসি সাহাব উদ্দিন।
তিনি জানান, ধৃত তিন ব্যক্তি রাজনগরের বাসিন্দা নাজিম উদ্দিন লস্কর, ফারুক উদ্দিন লস্কর এবং নজরুল হক লস্করের বিরুদ্ধে নারকোটিক ড্রাগস অ্যান্ড সাইকোট্রপিক সাবসট্যান্সেস অ্যাক্ট, ১৯৮৫ (এনডিপিএস)-এর নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে গ্রেফতার করা হয়েছে। আজ তাদের শিলচরের বিচারবিভাগীয় আদালতে পেশ করা হয়েছিল। আদালত ধৃত তিনজনকেই বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠিয়েছে, জানান ওসি।
ওসি সাহাব উদ্দিন বড়ভুইয়াঁ বলেন, প্ৰজাতন্ত্ৰ দিবসেৰ অনুষ্ঠান ইত্যাদি নিয়ে পুলিশের ব্যস্ততার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে মিজোরাম থেকে ভাইরেংটি গেট হয়ে বরাক উপত্যকার বিভিন্ন অঞ্চল হয়ে বাংলাদেশে হেরোইন, ব্রাউন সুগার সহ অন্যান্য নেশা সামগ্রী পাচারের পরিকল্পনা করেছিল দুষ্কৃতকারীরা। তবে কাছাড় পুলিশের গোয়েন্দা শাখার বিশেষ নজরদারিতে ভেস্তে যায় পাচারকারীদের পরিকল্পনা। তিনি জানান, পুলিশের তৎপরতায় কিছুদিন পরপর নেশাদ্রব্য পাচার চক্রের একাধিক পাণ্ডা গ্রেফতার হয়েছে।