গুয়াহাটি, ১৪ জুলাই (হি.স.) : একে করোনা-কাঁটা, তার ওপর প্রাকৃতিক দুর্যোগ। সবমিলিয়ে অসমের পরিস্থিতি ভয়াবহ। চলতি বছরের তৃতীয় দফার বন্যায় গতকাল একদিনে পাঁচজনের অকাল মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে গোটা রাজ্যে বন্যার কবলে পড়ে মৃত্যু হয়েছে ৪৪ জনের। উজান থেকে শুরু করে মধ্য এবং নিম্ন অসমের ২৭টি জেলার ৮৬টি রাজস্বচক্র এলাকার ২,৭৬৭টি গ্রামের ২১,৬৩,০১০ জন বন্যায় প্রভাবিত হয়েছেন। প্রথম, দ্বিতীয়ের পর এবারের তৃতীয় দফার বন্যা কবলিত জেলাগুলির মোট ১,০৩,৮০৬.১৫ হেক্টর কৃষিজমি জলে প্লাবিত হয়েছে বলে সরকারি তথ্যে জানা গেছে।
এদিকে বন্যার জলে তলিয়ে গিয়ে গতকাল পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। তারা লখিমপুর জেলার নাওবৈচার এক, বরপেটা জেলার বজালিগ্রামে এক, বঙাইগাঁও জেলার মানিকপুরের এক, কামরূপ গ্রামীণ জেলার অন্তর্গত রঙিয়ার এক, গোলাঘাটের বোকাখাতে এক এবং শিবসাগরের একজন। এ নিয়ে বন্যা পাহাড় ধসের চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছে মোট ৪৪ জনের। জলের তোড়ে চোখের সামনে ভেসে যাচ্ছে একের পর এক সেতু, রাস্তা ইত্যাদি
আসাম রাজ্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (এএসডিএমএ) সূত্রে জানা গেছে, প্রলয়ঙ্করী বন্যার কবলে পড়েছে রাজ্যের ২৭টি জেলা। এগুলি ধেমাজি, লখিমপুর, বিশ্বনাথ, চিরাং, শোণিতপুর, ওদালগুড়ি, দরং, বাকসা, নলবাড়ি, বরপেটা, চিরাং, বঙাইগাঁও, কোকরাঝাড়, ধুবড়ি, দক্ষিণ শালমারা-মানচাকর, গোয়ালপাড়া, কামরূপ (গ্রামীণ), কামরূপ মেট্রো, মরিগাঁও, নগাঁও, পশ্চিম কারবি আংলং, গোলাঘাট, যোরহাট, মাজুলি, শিবসাগর, ডিব্রুগড়, তিনসুকিয়া এবং কারবি আংলং জেলা।
এএসডিএমএ সূত্রটি আরও জানিয়েছে, ইতিমধ্যে বন্যা কবলিত জেলায় মোট ৪৮০টি ত্রাণশিবির খোলা হয়েছে। ওই শিবিরগুলিতে ৬০,৬৯৬ জন বন্যার্ত আশ্রয় নিয়েছেন। এছাড়া ৮,২৮,৭৯৬টি জীবজন্তু প্রভাবিত হয়েছে। গত বন্যার ২০৯টি ছাড়া নতুন করে বসতবাড়ি ধ্বংস হয়েছে ৫০টি। এর মধ্যে ওদালগুড়ি জেলায় ৩টি সম্পূর্ণ এবং ৭৬টি বসতবাড়ি আংশিক ধ্বংস হয়েছে। এভাবে চিরাঙের ৩৫টি সম্পূর্ণ এবং বরপেটার ১২টি বাড়ি সম্পূর্ণ এবং ৪২টি বসতবাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যাকবলিত ধেমাজি, লখিমপুর, বিশ্বনাথ, দরং, বরপেটা, বঙাইগাঁও, চিরাং, গোয়ালপাড়া, কামরূপ গ্রামীণ গোলাঘাট এবং যোরহাট জেলার বিভিন্ন স্থানে ৯৮টি নৌকা নিয়ে ১৯,৫৪৮ জন এনডিআরএফ, এসডিআরএফ জওয়ান, এসএসবি স্থানীয় মানুষ এবং প্রশাসনের লোকজন ত্রাণ ও উদ্ধারকার্যে নিয়োজিত হয়েছেন।