নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৪ মার্চ৷৷ রাজ্যে লকডাউন- কারফিউ জারি করা হয়েছে৷ মূলত, করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় এই কঠোর পদক্ষেপ নিতে হয়েছে৷ আদেশ অমান্য হলে এক বছরের জেল হবে৷ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সাংবাদিক সম্মেলনে এই ঘোষণা করার সাথে রাজ্যবাসীকে এ ভাবেই সতর্ক করেছেন মুখ্যসচিব মনোজ কুমার৷
রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ কুমার আজ বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলায় সারা দেশেই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে৷ সে মোতাবেক ত্রিপুরায় কোভিড-১৯ মোকাবিলায় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার৷ তাঁর কথায়, কোভিড-১৯ প্রতিরোধে সীমান্তে যাতায়াত নিষিদ্ধ, ট্রেন, বাস চলাচলে বিধিনিষেধ, দোকান, সিনেমা হল, সুকল, কলেজ, সুইমিং পুল, ব্যায়ামাগার বন্ধ করা হয়েছে৷ শুধু তা-ই নয়, জমায়েত আটকানোর জন্য ১৪৪ ধারাও জারি করা হয়েছে৷ তবুও, এই মহামারির পরিস্থিতি মোকাবিলায় আরও কঠোর পদক্ষেপের প্রয়োজন পড়েছে৷ এদিন মুখ্যসচিব জানিয়েছেন, রাস্তায় তিনের অধিক একত্রে যাতায়াত করতে পারবেন না কেউই৷ শুধু তাই নয় প্রত্যেক পরিবারের যেকোন একজন ব্যক্তি প্রয়োজনে বাড়ি থেকে বেরুতে পারবেন৷ সেক্ষেত্রে অপ্রয়োজনে বাড়ির বাইরে বেরুলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷ শুধু তাই নয়, যেকোনও দোকানে বিক্রেতা সহ তিনজন একত্রে থাকতে পারবেন৷ এই আদেশ অমান্য হলে নির্দিষ্ট ধারায় আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷
তাই, অ্যাপিডেমিক ডিজিজ ্যক্ট ১৮৯৭-এর ২ ধারা, দুযর্োগ মোকাবিলা আইন ২০০৫ এবং ভারতীয় ফৌজদারি দণ্ডবিধির ১৪৪ ধারা মোতাবেক ত্রিপুরায় লকডাউন কারফিউ জারি করা হয়েছে৷ আজ দুপুর ২-টা থেকে ৩১ মার্চ বিকেল ৫-টা পর্যন্ত এই আদেশ বলবৎ থাকবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যসচিব৷ এই সময়ের মধ্যে আদেশ অমান্য হলে এক বছরের জন্য কারাবাসের সাজা ভুগতে হবে৷ তিনি বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর দোকান, বাজার এই আদেশের বাইরে রাখা হয়েছে৷ তাতে, রেশন দোকান, দুধ, মিষ্টি, ফল, সব্জি, মাংস, মাছ বিক্রয় কেন্দ্র অন্তর্ভুক্ত রয়েছে৷ এছাড়া, হাসপাতাল, ঔষুধের দোকান, চশমার দোকান, চিকিৎসা সম্পর্কিত সামগ্রী বিক্রয় এবং উৎপাদক ও পরিবহণ এই আদেশের বাইরে রাখা হয়েছে৷ শুধু তাই নয়, পেট্রল পাম্প, রান্নার গ্যাস বিক্রয় কেন্দ্র, খাবার ও ঔষুধ হোম ডেলিভারি, ব্যাঙ্ক, এটিএম, প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক মিডিয়া, সোশ্যাল মিডিয়া-কেও ওই আদেশের বাইরে রাখা হয়েছে৷
রাজে পণ্য পরিবহণে কোনও বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়নি৷ তবে, সরকারি এবং বেসরকারি যাত্রী পরিবহণে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে৷ মুখ্যসচিব বলেন, কোনও সরকারি কর্মচারী এখন ছুটিতে যেতে পারবেন না৷ শুধু তাই নয়, অগ্রিম ছুটির অনুমতিও বাতিল করা হয়েছে৷ কেবল মাত্র মাতৃত্বকালীন ছুটির অনুমতি দেওয়া হয়েছে৷ শারীরিক অসুস্থতার জন্য ছুটি চিকিৎসকদের সুপারিশে মিলবে৷ এদিকে, বিভিন্ন সরকারি অফিস খোলা রাখার বিষয়ে পৃথক বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে৷ তিনি জানান, বিভিন্ন দপ্তর প্রধানরা সরকারী কর্মচারীদের ডিউটি রোস্টার তৈরী করবেন৷ প্রয়োজন নেই এমন কর্মচারীরা বাড়িতে থাকবেন৷ প্রয়োজনে তলব করা হবে৷
অন্যদিকে, ধর্মীয় স্থানগুলি আপাতত বন্ধ রাখার জন্য আদেশ জারি করা হয়েছে৷ তাছাড়া, কোভিড-১৯ মহামারি নিয়ে বিভ্রান্তিকর খবর কিংবা গুজব ছড়ানো হলে দুযর্োগ মোকাবিলা আইন ২০০৫-এর ধারা ৫৪ মোতাবেক কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷ ইন্দো-বাংলা সীমান্ত অতিক্রমে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে৷ মুখ্যসচিবের জারি বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, লকডাউন কারফিউ-এর আদেশ লঙ্ঘন হলে অ্যাপিডেমিক ডিজিজ কন্েন্টাল অ্যাক্ট ১৮৯৭-এর ধারা ১৮৮, ২৬৯ এবং ভারতীয় ফৌজদারি দণ্ডবিধির ২৭১ ধারা ও দুযর্োগ মোকাবিলা আইন ২০০৫ অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷