BRAKING NEWS

দুর্গোৎসবের আনন্দে মাতোয়ারা আনন্দধারা

পুণে, ৪ অক্টোবর : ‘‘যা দেবী সর্বভূতেষু মাতৃরূপেণ সংস্থিতা৷ নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমো নমোঃ৷৷’’ মহালয়ার পূণ্য প্রভাতে বেতার যন্ত্রে বীরেন্দ্র কিশোর ভদ্রের সুর বেজে উঠতেই শরীর শিহরিত হয়ে উঠে৷ আগমনীর বার্তায় আপন খেয়ালেই মন যেন দুলে উঠে৷

বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গোৎসবকে ঘিরে আয়োজনের কোনো কমতি হয় না কখনই৷ শুধু ভারত নয়, বহিঃবিশ্বের বিভিন্ন স্থানে মহা ধুমধামে পালিত হয় দুর্গাপূজা৷ ত্রিপুরা, পশ্চিমবঙ্গ সহ ভারত বর্ষের বিভিন্ন প্রান্তে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে৷ পুণের আনন্দধারা সংস্থার উদ্যোগেও তেমনি এক আয়োজন করা হয়েছে৷ মহারাষ্ট্রের অন্যতম একটি বাণিজ্যিক শহর পুণেতে বাঙালিয়ানার অভাব খুব একটা অনুভব হয় না৷ কারণ, কর্মসূত্রে পশ্চিমবঙ্গ এবং পার্বতী রাজ্য ত্রিপুরার বহু ছেলে-মেয়ে পুণেতে রয়েছেন৷ স্বাভাবিক ভাবেই নিজস্ব আবেগেই দুর্গোৎসবের তাগিদ অনুভব করেন সকলেই৷ কারণ, দুর্গোৎসবের এই চারটি দিন নিজ জন্মভিটেতে কাটাতে না পারার যন্ত্রণা নিজেরাই উপসমের ব্যবস্থা করে নেন৷

বাঙালি মানেই ঐতিহ্য এবং সাংস্কৃতিক প্রাচুর্য্যে ভরপুর৷ তেমনি দুর্গোৎসবেও এর ছাপ ফুটে উঠাটাই স্বাভাবিক বলেই মনে হওয়াটা ভুল হবে না৷ পুণেতে আনন্দধারা প্রবাসি সংস্থার উদ্যোগে আয়োজিত দুর্গোৎসবের পূজা কমিটির সদস্য কৌশিক সাহার চিন্তনে সাজিয়ে তুলা হয়েছে দুর্গাপূজার প্রাঙ্গণ৷ ‘‘জমিদারি বাড়ি’’ থিম নিয়ে দুর্গোৎসবের প্যান্ডেল সাজানো হয়েছে৷

মন্ডপ সাজসজ্জায় বাঁশ এবং কুটির শিল্প ও তাঁত শিল্পের সমাহার ঘটেছে৷ শুধু মন্ডপের বাইরের দিকের সাজসজ্জায় স্থানীয় ডেকুরেটারকে দিয়ে সাজানো হয়েছে৷ তবে ভেতরের সমস্ত সাজসজ্জাই সংস্থার সদস্যরা হাতে হাত মিলিয়ে করেছেন৷

এই পুজোতে বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে পরিবেশ এবং দেশ প্রেম ফুটে উঠেছে৷ কারণ, প্লাস্টিক বর্জন এবং কোন চিনা সামগ্রী ব্যবহার না করেই এই পুজো মন্ডপকে রাঙিয়ে তুলা হয়েছে৷
মায়ের প্রতিমা তৈরিতেও বাঙালিয়ানা পুরো খেয়াল রাখা হয়েছে৷ ৭৭ বছর বয়সী মৃৎশিল্পী জমিদার বাড়ির থিম মাথায় রেখেই মূর্তি তৈরি করেছেন৷

এই দুর্গোৎসবকে ঘিরে এলাহি আয়োজন শুরু হয়েছে মহালয়া থেকেই৷ ইন্দ্রায়নি নদীর তিরে দাঁড়িয়ে মহালয়ার সকালে চন্ডিপাঠ শুনে আবেগতাড়িত হয়েছেন ওই সংস্থার প্রত্যেকটি সদস্য৷ এছাড়া, দুর্গোৎসবের দিনগুলিতে কঁচিকাঁচাদের জন্য বিনোদনের নানা আয়োজন করেছে ওই সংস্থা৷ শ্লোকপাঠ, ক্যুইজ, বিশেষ করে দুর্গাপূজা এবং তার নিয়মনিষ্ঠা সংশ্লিষ্ট বিষয়েই৷ এছাড়া প্রতিদিন সাংসৃকতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়েছে৷ সরস্বতী অনাথ আশ্রমের কয়েকজন কঁচিকাঁচাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে৷ ওই সংস্থার সদস্যদের সাথেই দুর্গোৎসবে আনন্দ নেবেন তারা৷ পুণ্যার্থীদের জন্য প্রতিদিন দুপুরে খিচুরির আয়োজন করা হয়েছে৷ তাছাড়া, নিরামিশ এবং আমিশ খাবারের ব্যবস্থা রয়েছে৷

আনন্দধারা প্রবাসি সংস্থায় প্রায় ১০০ পরিবার মিলে এই দুর্গোৎসবের আয়োজন করেছে৷ সংস্থা আশা করছে পূজা মন্ডপে অন্তত তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার পুণ্যার্থীর সমাগম হবে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *