গুয়াহাটি, ৪ জুন (হি.স.) : ভারতীয় বায়ুসেনার নিখোঁজ এএন-৩২ এয়ারক্র্যাফ্টের এখনও সন্ধান পাওয়া যায়নি। গতকাল সন্ধ্যায় অরুণাচল প্রদেশের পশ্চিম সিয়াং জেলার পায়ুমবস্তির ঘন জঙ্গলে বিমানের সন্ধান পাওয়া গেছে বলে গ্রামের মানুষের উদ্ধৃতি দিয়ে এক সূত্র জানিয়েছিল। খবর পেয়ে বায়ু ও স্থল সেনার উদ্ধারকারী দল সেখানে গিয়ে তালাশি চালাচ্ছেন। এই খবর লেখা পর্যন্ত সন্ধান মিলেনি বলে জানা গেছে।
এদিকে ঘটনাটি সঙ্গে সঙ্গে নয়া প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংকে অবগত করা হলে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশ দিয়েছেন, বিমানের সব যাত্রীকে যাতে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা যায় সে অনুযায়ী যুদ্ধকালীন তৎপরতার সঙ্গে যাবতীয় ব্যবস্থা নিতে।
উল্লেখ্য, গতকাল সোমবার পণ্যবাহী ১৩০জে নম্বরের এএন-৩২ ডাবল ইঞ্জিনের বিমানটি রেশন সামগ্রী নিয়ে উজান অসমের যোরহাটে অবস্থিত ররৈয়া বিমানবন্দর থেকে বেলা প্রায় ১২.২৫ মিনিট নাগাদ অরুণাচল প্রদেশের উদ্দেশে উড়েছিল। বিমানে আটজন বায়ুসেনা এবং পাঁচজন স্থলসেনা-সহ মোট ১৩ জন যাত্রী ছিলেন। বিমানটি পণ্য সামগ্রী নিয়ে অরুণাচল প্রদেশের চীন সীমান্তবর্তী মেচুকা অ্যাডভান্স ল্যান্ডিং গ্ৰাউন্ডে অবতরণ করার কথা ছিল। জানা গেছে, মাত্ৰ ৩ ঘণ্টা ৩০ মিনিট উড়তে পারে সে অনুযায়ী ইন্ধন ছিল বিমানটিতে। ১৩০জে নম্বরের নিখোঁজ এএন-৩২ বিমানটি নাকি ১৯৮০ সালে রাশিয়ায় তৈরি।
বিমানে যাঁরা ছিলেন তাঁরা ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট এম গাৰ্গ, জনৈক মহান্তি, তানওয়ার, থাপা, সাৰ্জেন্ট অনুপ, কৰ্পোরাল, সারিন, স্কোয়াড্ৰন লিডার বিনোদ, ওয়ারেন্ট অফিসার কেকে মিশ্ৰ, লিডিং এয়ারক্ৰাফ্টম্যান পংকজ, এসকে সিং, নন কম্বেটেন্ট (এনরোল্ড) রাজেশ কুমার ও পুতলি, এবং উইং কমান্ডার চাৰ্লস। যাত্রীদের সম্পূর্ণ নাম ও পদবী এখনও জানা ষাষ়নি।
সূত্রটি জানিয়েছে, ররৈয়া বিমানবন্দর থেকে যাত্রা করার পর বেলা একটা (১৩:০০) পর্যন্ত বিমানের সঙ্গে শেষবারের মতো গ্ৰাউন্ড কন্রো্দলের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল। কিন্তু এর পর থেকে তার সঙ্গে যোগযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় বিমানবন্দরের কন্রো লের সঙ্গে। পরবর্তীতে খবর নিয়ে গন্তব্যস্থলে বিমানটি গিয়ে পৌঁছেনি বলে নিশ্চিত হলে শুরু হয় দৌড়ঝাঁপ। সন্ধানহীন বিমানের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে ব্যবহার করা হয় সবধরনের অত্যাধুনিক প্ৰযুক্তি। সন্ধানে সুখয় ৩০, এমআই-১৭ হেলিকপ্টার এবং সি-১৩০ জেটবিমান নিয়ে নিয়ে সেনা আধিকারিকরা বিশেষ অভিযানে বেরিয়ে পড়েন। তবে একে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া, তার ওপর রাতের অন্ধকারে সন্ধানী অভিযান স্থগিত রাখা হলেও আজ ভোর থেকে ফের নিখোঁজ বিমানের সন্ধানে নেমে পড়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সূত্রটি জানিয়েছে, বিমানটি ওড়ার কিছুক্ষণের মধ্যে আচমকা আবহাওয়া খারাপ হয়ে যায়। ঘন কুয়াশা ও প্রচণ্ড বৃষ্টিপাতের কবলে পড়ে সম্ভবত বিমানটি দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে, আশঙ্কা করেছেন খোদ বায়ুসেনা কর্তৃপক্ষ।
এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, গত ২০০০ সালে ঠিক একইভাবে বায়ুসেনার এক বিমান দুর্ঘটনার শিকার হয়েছিল। তাছাড়া ২০০৯ সালে সম্ভাব্য একই এলাকায় বিমান দুর্ঘটনায় ১৩ জন যাত্রী নিহত হয়েছিলেন। ফলে প্রতিকূল আবহাওয়ার দরুন এই বিমানও দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।