নিজস্ব প্রতিনিধি, বিলোনীয়া, ২৪ জুলাই৷৷ রাজ্যের জেলাস্তরে আইন-শৃঙ্খলার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে সোমবার থেকে জেলা সদর সফর শুরু
করেছেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব৷ মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিন মুখ্যমন্ত্রী বিলোনীয়া সফরে যান আইন- শৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষন করতে৷ সোমবারের মতো এদিনও তিনি রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলাজনি পরিবেশ সুদৃঢ় রাখতে থানায় ওসিদের সক্রিয় এ দায়িত্বশীল হওয়ার নির্দেশ দেন৷ সেখানে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন৷ বৈঠকে আইন-শৃঙ্খলা সুদৃঢ় রাখতে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়৷
উল্লেখ্য, জেলা সফরের প্রথম দিন মুখ্যমন্ত্রী উত্তর ও ঊনকোটি সফরে যান৷ সেখানে গিয়ে তিনি জেলার আইন-শৃঙ্খলার পরিস্থিতি সম্পর্কে যাবতীয় খোঁজখবর নেন৷ সেখানে তিনি পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন৷ উত্তর এবং ঊনকোটি জেলার মতো দক্ষিণ জেলায়ও মুখ্যমন্ত্রী আইন-শৃঙ্খলাজনিত যাবতীয় বিষয় নিয়ে বিস্তর আলোচনা করেন৷ জানা গেছে, পরিদর্শনকালে আইন-শৃঙ্খলার ব্যাপক ত্রুটি লক্ষ্য করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ এই ত্রুটিগুলি অতিসত্বর সারাই করতে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের নির্দেশ দেন তিনি৷
একদিনে চার জেলায় মুখ্যমন্ত্রীর পর্যালোচনা বৈঠকের ১২ ঘন্টার মধ্যে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে পুলিশ প্রশাসনে৷ জেলার পুলিশ সুপার থেকে শুরু করে নানা স্তরের আধিকারিক মঙ্গলবার সকাল থেকে নতুন উদ্যামে কাজ শুরু করেছেন৷
সোমবার একই দিনে জেলা সদরগুলিতেচ গিয়ে চারটি পর্যালোচনা বৈঠক করলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব৷ মুখ্যমন্ত্রীর পর্যায়ক্রমে চার জেলার পর্যালোচনা বৈঠকে সর্বাধিক গুরুত্ব পেয়েছে নেশাবিরোধী অভিযান ও আইন -শৃঙ্খলার উপর মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ঠ জানিয়ে দিয়েছেন, অপরাধের জন্য ওসি-রাই দায়বদ্ধ থাকবেন৷ মুখ্যমন্ত্রী এদিন প্রথমে চলে যান ধর্মনগর সেখান থেকে কৈলাসহর এবং আমবাসায় বৈঠক করেন রাতে বৈঠক করেন খোয়াইয়ে৷ এক দিনে চার চারটি জেলা পর্যায়ে পর্যালোচনা বৈঠক করার ঘটনা নজিরবিহীন বলে করছে ওয়াকিবহার মহল৷ সকাল থেকে টানা বৈঠকের পরও ক্লান্ত না হয়ে রাত দশটায় খোয়াইয়ে পর্যালোচনা বৈঠকে বসেন মুখ্যমন্ত্রী৷
সব কয়টি বৈঠকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও নেশাবিরোধী অভিযান প্রশঙ্গ বিশেষ করে নেশা ও অপরাধ নিয়ে দীর্ঘ চর্চা হয়েছে৷ প্রতিটি বৈঠকে৷ সব কয়টি বৈঠকেই মুখ্যমন্ত্রীর সাথে এদিন উপস্থিত রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশক একে শুক্লা, এডিজি এসএস চতুবেদি, আইজি আইনশৃঙ্খলা কেভি শ্রীজেশ প্রমুখ৷ এছাড়া জেলাস্তরের জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপার ছাড়াও ছিলেন সংশ্লিষ্ট জেলার সব কয়টি থানার ওসিরা৷ যে কোনও মূল্যে ত্রিপুরা থেকেক অপরাধ নির্মূল করতে পুলিশকে, বিশেষ করে থানার ওসিদের ভূমিকা নিতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ অপরাধ কমানোর ক্ষেত্রে ওসিরাই দায়বদ্ধ বলেও এদিন স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন তিনি৷ এছাড়া, যে সমস্ত সীমান্ত এলাকায় ফেন্সির কাজ অসমাপ্ত রয়েছে সেখানে এই কাজ দ্রুত শেষ করতে এবং সড়ক সংস্কার সহ একাধিক বিষয় নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী এদিন জেলাশাসক ও সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছেন৷
স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন তথা ওসিরা বিশেষভাবে দায়বদ্ধ থাকবেন বলে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পর মঙ্গলবার থেকে সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলিতে এর বিস্তর প্রভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে৷ জেলাগুলোর প্রায় প্রতিটি থানায় তৎপরতা এখন তুঙ্গে৷ ওয়ারেন্টপ্রাপ্ত পলাতক আসামিদের ধরতে জোর তৎপরতা শুরু হয়েছে৷ পথেঘাটেও পুলিশি তৎপরতা এখন লক্ষ্য করার মতো৷