নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৫ সেপ্ঢেম্বর৷৷ সত্যিই সেলুকাস৷ বিচিত্র এই দেশ৷ রাজ্যের কোথাও দাবদাহে হাসফাঁস অবস্থা, আবার কোথাও প্রবল বর্ষণে বানভাসী অবস্থা৷ ঊনকোটি জেলার দেও নদী ও মনু নদীতে জলস্ফীতি দেখা দিয়েছে৷ কৈলাসহর পুর পরিষদ এলাকার বেশ কিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে৷ পুর এলাকার কিনাইরচর এলাকার প্রায় সব বাড়িঘরই জলবন্দি৷ এলাকার সিংহভাগ মানুষই দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী৷ বাড়িঘরে জল ঢুকে যাওয়ায় তারা স্থানীয় আশ্রম সুকলে আশ্রয় নিয়েছেন৷ প্রশাসনের তরফে তাদের জন্য ত্রাণের ব্যবস্থা করা হয়েছে৷ জলপ্লাবন ও জলস্রোতে বেশ কয়েকটি বাড়িঘরের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে৷ প্রশাসনের পরামর্শেই ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের লোকজনরা আশ্রম সুকলে আশ্রয় নিয়েছেন৷ কৈলাসহরের মহকুমা শাসক ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন৷ এসডিএম জানান, প্রবলবর্ষণে এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে৷ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে প্রয়োজনীয় ত্রাণ ও সাহায্যের উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন৷ মোট ৪০টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানান এসডিএম৷ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে প্রয়োজনীয় আর্থিক সাহায্য প্রদান করা হবে বলেও আশ্বস্ত করেছেন এসডিএম৷
বন্যার ফলে ফসলেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে৷ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের কাজ শুরু হয়েছে৷
গত দুই তিন দিনের বৃষ্টিতে ঊনকোটি জেলার দেত্ত নদী এবং মনু নদীতে জল অনেক বেড়েছে৷ কৈলাসহর মহকুমার কৈলাসহর পুর পরিষদ এলাকার কিনাইরচড় এলাকার প্রায় সব বাড়ীতেই জল উঠেছে৷ মহকুমা শাসক (এস ডি এম) সুব্রত চৌধুরী এলাকা পরিদর্শন করেন এবং এলাকাবাসীর খোঁজ খবরত নেন৷ পরিদর্শনস্থলে সংবাদ প্রতিনিধিদের বলেন, এই বন্যায় এই এলাকাতে প্রচুর ক্ষতি হয়েছে এবং চল্লিশ পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে৷ আশ্রম সুকলে থাকার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে৷ তাছাড়া এই চল্লিশ পরিবারকে সরকারী যেসব সুযোগ সুবিধা রয়েছে সবটাই দেওয়া হবে৷
এদিকে, নদী ভাঙ্গনের ফলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হল কমলপুর মহকুমা নগর পঞ্চায়েত এলাকা সহ পাশ্ববর্তী মেথির মিয়া গ্রামে৷ মঙ্গলবার রাত এবং বধুবার সকালে টানা বর্ষনের ফলে ধলাইনদীর জল বিপদ সীমার উপরে বইছে৷ তার উপর মহকুমা ধলাইনদী তীরের বিভিন্ন স্থানে নদীর ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে৷ কমলপুর নগর পঞ্চায়েত এলাকার ১০নং ওয়ার্ডের কালিমন্দির এলাকায় ব্যাপক ভাবে নদীর ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে৷ বুধবার সকালে নদী ভাঙ্গনের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয় শিবু দাস, কালু দাস, প্রবেশ ধর, কৃষ্ণ দত্ত, সুবীর দেবের৷ শিবু দাসের রান্নাঘর, লেট্রিন, ব্যাথরুম, গোয়াল ঘর ধলাইনদীর গর্ভে চলে যায়৷ কালু দাসের উঠান সহ অনেক জমি নদী ভেঙ্গে নিয়ে যায়৷ ধলাইনদীর পূর্ব পারে মেথিরমিয়া গ্রামের অনেক সবজিখেত ধলাইনদীর গ্রামের কবলে পরে৷ কমলপুর নগর পঞ্চায়েতের চেয়্যারম্যান সুব্রত ভট্টাচার্য্য, ভাইসচেয়্যারম্যান ঘনা দাস, ডিসি, এম ভবেশ ভদ্র ঘটনাস্থলে যান এবং ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে আশ্বাস্থ করেন৷ এদিকে এলাকাবাসীর অভিযোগ বন্যা নিয়ন্ত্রণ দপ্তরকে বারবার জানানো সত্ত্বেও সঠিক সময়ে সঠিক ভূমিকা না নেওয়ায় তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷
আজ সকাল নয়টায় অমরপুর উদয়পুর সড়ক মাঝ পথে ওয়ারেং বাড়িস্থিত রাস্তার উপরে বিরাট আকারের একটি গাছ ভেঙ্গে পড়ে রাস্তার উপরের এতে রাস্তার দুপাশে আটকিয়ে পড়ে যাত্রী সহ দূপাল্লার গাড়িগুলি৷ খবরটা সঙ্গে সঙ্গে মহকুমা প্রশাসবের গোচরে দেওয়া হয়৷ তা সত্বেও প্রশাসনের বাবুরা ঘটনাস্থলে পৌঁছতে প্রায় ঘন্টাখানেকের মতো সময় লেগে যায়৷ জীবনের ঝুকি নিয়ে কয়েকজন যুবক মিলে রাস্তার দুধারের বাইকগুলিকে পারাপার করে৷ কিছুক্ষন পরে দেখাগেল ঘটনাস্থলে বনদপ্তরের কর্মীরা মিলে রাস্তার সারাইয়ের কাজে হাত বাড়ায় অনেকক্ষন যাবৎ চেষ্টার ফলে ব্যর্থ হয় মহকুমার বনকর্মীরা৷ অবশেষে পূর্ত দপ্তরের হস্তক্ষেপে ড্রজার গাড়ী দিয়ে রাস্তার কাজ সম্পূর্ণ করে৷ এইদিকে আটকিয়ে থাকা যাত্রীদের মধ্যে একটি গুঞ্জন সৃষ্টি করে৷ রাস্তা প্রশস্ত করার জন্য রাস্তার দুদিকে যেভাবে মাটি কাটা হয়েছে তা একেবারেই অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে তাই এই খেসারত দিলে হলো আটকিয়ে থাকা সরকারী কর্মচারী থেকে দূপাল্লার যাত্রীরা৷