হাফলং (অসম), ১০ জুন (হি.স.) : শিলচর-সৌরাষ্ট্র ইস্ট-ওয়েস্ট করিডোরের মাইবাং ও জাটিঙ্গার মধ্যবর্তী এন লেইকুলের কাছে ধসের দরুন ৫৪ নম্বর জাতীয় সড়কে চারটি অ্যাম্বুলেন্স রোগী নিয়ে দেড় ঘণ্টার বেশি সময় আবদ্ধ হয়ে পড়েছিল। এই চারটি অ্যাম্বুলেন্সে ছিলেন আশঙ্কাজনক চার রোগী। একটি অ্যাম্বুলেন্সে ছিলেন এক অন্তঃসত্ত্বা মহিলা। বাকি তিনটিতে ছিলেন অক্সিজেন সংযুক্ত তিন করোনায় আক্রান্ত রোগী।
মাইবাং ও লাংটিং থেকে অক্সিজেন সংযুক্ত তিন করোনা রোগী ও এক অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকে নিয়ে চারটি অ্যাম্বুলেন্স হাফলং সরকারি হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছিল বুধবার বিকেলেষ কিন্তু এন লেইকুলের কাছে আসতেই ঘটে এই বিপত্তি। কারণ এন লেইকুলের পাশে ৫৪ নম্বর জাতীয় সড়কে ধস বিধ্বস্ত এলাকায় একটি লরি ফেঁসে যাওয়ার দরুন এই চারটি অ্যাম্বুলেন্সকে প্রায় দেড় ঘণ্টার বেশ সময় আবদ্ধ হয়ে থাকতে হয়েছে। প্রায় দেড় ঘণ্টা পর ফেঁসে যাওয়া লরিটিকে টেনে তোলার পর কোনও রকম চারটি অ্যাম্বুলেন্সকে ধস বিধ্বস্ত এলাকা দিয়ে পার করিয়ে দেওয়া হয়।
এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে অনেকে বলছেন, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার যতই নিজেদের উন্নয়নের ফিরিস্তি তুলে ধরুক না-কেন, বুধবারের এই ঘটনা সরকারের উন্নয়নের ফাঁকা স্বরূপ জনসমক্ষে বেড়িয়ে এসেছে। সুদীর্ঘ ২০ বছরের বেশি সময় ধরে চলছে শিলচর-সৌরাষ্ট্র ইস্ট-ওয়েস্ট করিডোর (মহাসড়ক) নির্মাণের কাজ। অসমের অনান্য জায়গায় এই নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ হয়ে উঠলেও ডিমা হাসাও জেলার মধ্য দিয়ে ধাবিত এই ইস্ট-ওয়েস্ট করিডরের কাজ আজও সম্পূর্ণ হয়নি। অভিযোগ, একমাত্র কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের সদিচ্ছার অভাবে ডিমা হাসাও জেলার মধ্য চলমান শিলচর-সৌরাষ্ট্র ইস্ট-ওয়েস্ট করিডোরের কাজ সম্পূর্ণ হয়ে ওঠেনি। প্রতি বছরই বর্ষায় একই অবস্থা হয়ে উঠে এই ৫৪ নম্বর জাতীয় সড়কে।
জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ বর্ষার সময় যাতে নৃরিমবাংলো থেকে জাটিঙ্গা পর্যন্ত এই সড়কটি সচল রাখতে ২৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বরং বর্ষার শুরুতেই সড়কটি বেহাল হয়ে পড়ে। কিন্তু এর পরও জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের হেলদোল নেই। বর্তমানে সড়কটি ভয়ঙ্কর অবস্থায় রয়েছে। যদি এই বর্ষার মরশুমে সড়কটি সংস্কারে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ না করে তা-হলে ৫৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ওই অংশে পাহাড় ধসে রাস্তা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। বর্ষার শুরুতেই পাহাড় থেকে নেমে আসা জলের স্রোতে পাহাড় ধসে একটু একটু করে নেমে আসছে। যার দরুন জাতীয় সড়কের এন লেইকুলের এই অংশ এখন বিপজ্জনক অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে।