মুম্বাই, ২২ ডিসেম্বর (হি.স.) : মহারাষ্ট্রের আদর্শ হাউজিং দুর্নীতি মামলায় প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অশোক চৌহ্বানের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করার যে অনুমতি রাজ্যপাল দিয়েছিলেন তা খারিজ করে দিল বম্বে হাইকোর্ট।
শুক্রবার বম্বে হাইকোর্ট জানিয়েছে, আপাতত এই মামলায় আইনি পন্থায় অশোক চৌহানকে অভিযুক্ত করে প্রসিকিউশন করা যাবে না। এর আগে, মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল সিএইচ বিদ্যাসাগর রাও এই মামলায় অশোক চৌহানকে অভিযুক্তের তালিকায় রাক্ষার পক্ষে শিলোমোহর দেন। রাজ্যাপালের সেই অবস্থানকে আপাতত এই আদর্শ দুর্নীতি মামলায় এক পাশে সরিয়ে রাখল আদালত। মুম্বইয়ের অভিজাত কোলাবা এলাকায় যুদ্ধে মৃত সৈনিকদের স্ত্রীদের থাকার জন্য ৩১ তলার আদর্শ হাউসিং সোসাইটি তৈরি করে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক।
অভিযোগ ওঠে, আবাসনে ঘর পাওয়ার জন্য বারবার নিয়ম বদল করা হয়। আর এভাবেই বাজার দরের থেকে কম দামে ফ্ল্যাট পেয়ে যান রাজনীতিবিদ, আমলা এবং সেনাবাহিনীর পদস্থ কর্তারা। ২০১০ সালের নভেম্বরে দুর্নীতি সামনে আসার পরে মুখ্যমন্ত্রিত্ব খোয়ান অশোক চৌহান। ২০১১ সালে মহারাষ্ট্র সরকার দুর্নীতির তদন্তে হাইকোর্টের প্রাক্তন দুই বিচারপতিকে নিয়ে বিচারবিভাগীয় কমিশন গঠন করে। যার নেতৃত্বে ছিলেন প্রাক্তন বিচারপতি জেএ পাটিল। দু’বছর ধরে ১৮২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণে পরে মহারাষ্ট্র সরকারকে ২০১৩ সালে রিপোর্ট জমা দেয়। রিপোর্টে বলা হয় অন্তত ২৫টি ফ্ল্যাটের বেআইনিভাবে হস্তান্তর হয়েছে। ২২টি ক্ষেত্রে ক্রেতার সন্ধান মেলেনি। মহারাষ্ট্রের বেশ কয়েকজন মন্ত্রীর নাম জড়িয়ে পড়ে। ছিল অশোক চৌহ্বানের নাম।
অশোক চৌহ্বানের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া শুরুর আবেদন নিয়ে মহারাষ্ট্রের রাজ্যপালের কাছে আবেদন করেছিল সিবিআই। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার সুবাদে এই ছাড়পত্র বাধ্যতামূলক। ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে তৎকালীন রাজ্যপাল কে শঙ্করনারায়নণ সেই আর্জি খারিজ করে দেন। ইতিমধ্যে সরকার বদল হয়। ২০১৪ সালের অক্টোবরে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসে মহারাষ্ট্রে। গত বছ ফেব্রুয়ারিতে চৌহ্বানের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া শুরুর আবেদন করে আবার রাজ্যপালের দ্বারস্ত হয় সিবিআই। রাজ্যপাল সি বিদ্যাসাগর রাও সেই আবেদন মঞ্জুর করেন। সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে যান চৌহ্বান। শুক্রবার বিচারপতি রঞ্জিত মোরে এবং বিচারপতি সাধনা যাদবের বেঞ্চ বলছে, বর্তমান রাজ্যপাল আগের রাজ্যপালের কাজের পুনর্মূল্যায়ণ করতে পারেন না। একই নথির ভিত্তিতে আগের সিদ্ধান্ত বদলাতে পারেন না রাজ্যপাল। নতুন তথ্য জমা দিতে হত। এক্ষেত্রে সিবিআই নতুন করে আবেদন করলেও আলাদা নথি জমা দেয়নি। কংগ্রেস অবশ্য আগেই অভিযোগ করেছে, সরকার পরিবর্তন হওয়ার পরেই অশোককে ফাঁসানোর জন্য এই আবেদন করা হয়েছে। যা দ্রুত ছাড়পত্র দিয়েছেন রাজ্যপাল।