বাঁশ বৃক্ষের বদলে তৃণের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত, সংশোধনী প্রস্তাব পাশ সংসদে

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২০ ডিসেম্বর৷৷ বাঁশ চাষে উৎসাহ প্রদানে এবং দেশের অর্থনৈতিক বিকাশে বাঁশ ভিত্তিক শিল্প গড়ে তোলার লক্ষ্যে একটি সুনির্দিষ্ট নীতি প্রনয়ন করতে হবে৷ আজ লোকসভাতে আইনের পরিভাষায় বাঁশকে বৃক্ষের তালিকা থেকে বাদ দিয়ে তৃণের তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করে একটি সংশোধনী প্রস্তাব পাশ হয়৷ ১৯২৭ সালে ব্রিটিশ আমলে ভারতীয় বন আইন প্রনয়ন হওয়া থেকে বাঁশ বৃক্ষের তালিকায় ছিল তাই বাঁশচাষী এবং যৌথ বনায়ন সমিতির সদস্যরা খুব কম খরচে বাঁশ উৎপাদন করলেও বন আইনের জটিল প্যাঁচে তার মূল্য পাওয়া যায় না৷ উল্টো বনদপ্তরে কর্মচারীদের দ্বারা নানাধরণের হয়রানির শিকার হতে হয়৷

এই আলোচনায় অংশ নিয়ে রাজ্যের সাংসদ জীতেন্দ্র চৌধুরী বলেন, শুধুমাত্র বৃক্ষের তালিকা থেকে বাদ দিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার বাঁশ নিয়ে তার দায়িত্ব শেষ করলে চলবেনা৷ তিনি বলেন, ভারত বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ বাঁশ উৎপাদন করা দেশ৷ চীনের পরেই তার স্থান৷ কিন্তু চীন সেখানে বাঁশকে ভিত্তি করে বছরে ১,০০০ বিলিন ডলার এর বেশী ব্যবসা করে এবং লক্ষ লক্ষ কর্মসংস্থান করছে সেখানে ভারতের অংশ তার ৫ শতাংশের কম৷ ভারতে এক লক্ষ চল্লিশ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকাতে প্রাকৃতিক ভাবে বাঁস জন্মায়৷ যার ৫৫ ভাগই পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিতে৷ ভারতে ১২৫ প্রজাতির, যার ১১টি অত্যন্ত উচ্চ মানের এবং ২৩টি প্রকৃতি গোষ্ঠীর অন্তর্ভূক্ত৷ উৎপাদন মূল্য অত্যন্ত কম এবং লাভজনক৷ কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় ভারত সরকারের এই অতি মূল্যবান প্রাকৃতিক সম্পদের সদ্ব্যবহারে কোন সুনির্দিষ্ট নীতি নেই৷ বাঁশ ভিত্তিকগ শিল্প বেড়ে উঠলে শুধুমাত্র পূর্বোত্তরে ত্রিশ লক্ষাধিক পরিবারের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হতে পারে৷ যা পূর্বোত্তরের বেকার সমস্যা থেকে উগ্রপন্থি সমস্যা পর্যন্ত সবকিছুর অত্যন্ত উপযোগী এবং দীর্ঘমেয়াদি সমাধান হতে পারে৷ ত্রিপুরাতে রাবার অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং সন্ত্রাসবাদী সমস্যা সমাধানে ে ভূমিকা নিয়েছে বাঁশ তার থেকে আরো বগুগুন বেশী সদর্থক ভূমিকা নিতে পারে৷ তিনি বলেন ভারত সরকারের দৃষ্টিভঙ্গী এখন অত্যন্ত অস্পষ্ট৷ বনদপ্তর পরিবেশ রক্ষার অঙ্গ হিসেবে বাঁশকে দেখছে৷ ন্যাশনাল ব্যাম্বু মিশনের নামে বিজ্ঞান প্রযুক্তি দপ্তর বাঁশের উপর আমলাদের সারাবছর দেশে বিদেশে ভ্রমনের ব্যবস্থা করে দিয়েছে৷ আর কৃষিমন্ত্রক এক্সটেনশানের নামে বিক্ষিপ্তভাবে কোটি কোটি টাকা অপচয় করছে৷ শ্রী চৌধুরী দাবী জানান, বাঁশকে বিক্রি করে দেশের অর্থনাতিকে সমৃদ্ধ করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের সুনির্দিষ্ট নীতি চাই৷ নিজস্ব জমিতে যারা বাঁশ উৎপাদন করেন এবং যৌথ বনায়ন সমিতির উপর কোন ধরনের কর চাপানো যাবেনা৷ বঁাঁশ চাষে সরকার অনুদান এবং ব্যাঙ্ক থেকেও সহজ শর্তে ঋণ পাবার ব্যবস্থা করতে হবে৷ উত্তর পূর্বাঞ্চলের প্রতিটির রাজ্যে বাঁশভিত্তিক শিল্প গড়ে তুলতে হবে৷ বাঁশকে কেন্দ্র করে আরো বেশী গবেষণা এবং বৈজ্ঞানিক প্রয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *