নয়াদিল্লি, ১৫ ডিসেম্বর (হি.স.): কংগ্রেসের আবেদন খারিজ করল সুপ্রিম কোর্ট। গুজরাট বিধানসভা ভোটের ভোটার-ভেরিফায়েবল পেপার অডিট ট্রেইল (ভিভিপ্যাট) কাগজের সঙ্গে অন্তত ২৫ শতাংশ ইভিএমের রেকর্ড মিলিয়ে দেখার নির্দেশিকা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল কংগ্রেস। শুক্রবার সেই দাবি খারিজ করে দিল সুপ্রিমকোর্ট।
গুজরাটে মোট যত ভোট পড়েছে, তার ২৫ শতাংশ ভোটার-ভেরিফায়েবল পেপার অডিট ট্রেইল (ভিভিপ্যাট) মেশিন থেকে ছেপে বেরনো ভোটার স্লিপের সঙ্গে মিলিয়ে দেখার জন্য নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দিতে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছিল কংগ্রেস । সোমবার গুজরাটে ভোটগণনা। তার দুদিন বাকি থাকতেই গুজরাটের ভোটে হস্তক্ষেপ করতে তারা নারাজ বলে জানাল এদিন জানিয়ে দিল শীর্ষ আদালত। প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র, বিচারপতি এএম খানউইলকর এবং বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়কে নিয়ে গঠিত বেঞ্চ জানিয়েছে, ‘যতক্ষণ না এটা প্রমাণিত হয় যে আইন মেনে ভোট গ্রহণ করা হয়নি বা ভোট অবাধ হয়নি ততক্ষণ আমরা নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের বিকল্প সিদ্ধান্ত নিতে পারি না।’
৯ এবং ১৪ ডিসেম্বর দুই দফায় গুজরাট বিধানসভার ভোট গ্রহণ করা হয়। গণনা ১৮ ডিসেম্বর। বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে ভোট পরবর্তী জনমত সমীক্ষা জানায় এবারও গুজরাটে সরকার গড়বে বিজেপি। হিমাচলপ্রদেশও কংগ্রেসের হাতছাড়া হবে। এরপরেই সুপ্রিম কোর্টে যায় কংগ্রেস। এদিন কংগ্রেসের হয়ে সেখানে সওয়াল করেন আইনজীবী তথা দলের নেতা অভিষেক মনু সিংভি ও কপিল সিবাল।
কংগ্রেসের এদিনের আবেদনে সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, আবেদনকারী কমিশনের পদক্ষেপ একপেশে প্রমাণ করতে না পারলে এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করে সেই পদক্ষেপ খারিজ করতে পারে না আদালত। তারা ভোট প্রক্রিয়ায় নাক গলাতে পারে না বলে জানিয়ে শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, আবেদনকারী চাইলে নির্বাচনী সংস্কার নিয়ে পৃথক পিটিশন দিতে পারেন।
গতকালই গুজরাটে দ্বিতীয় দফার ভোটে আমদাবাদের এক বুথে ভোট দেওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে রোড শো করে মডেল আচরণবিধি ভাঙার অভিযোগ জানালেও নির্বাচন কমিশন এ ব্যাপারে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে দাবি কংগ্রেসের। সোজাসুজি কমিশনকে এজন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্য্যালয়ের ‘পুতুল’ বলে কটাক্ষ করেছে তারা। কংগ্রেসের ক্ষোভের কারণ আরও এজন্য যে তার আগের দিনই গুজরাতি চ্যানেলে ইন্টারভিউ সম্প্রচারিত হওয়ায় মডেল আচরণবিধি ভাঙার অভিযোগে রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গুজরাটের মুখ্য নির্বাচনী অফিসারকে নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন।
প্রসঙ্গত, ভিভিপ্যাট মেশিন থেকে একটি কাগজের স্লিপ ছেপে বেরয় যাতে ভোটার দেখতে পান, তিনি কাকে ভোট দিয়েছেন। তবে স্লিপটি দেখতে পারলেও তা বুথের বাইরে নিয়ে যেতে পারেন না। সেই স্লিপ আলাদা একটি বিভাগে গচ্ছিত রাখা হয়। কমিশন চাইলে কোনও নির্দিষ্ট একটি ইভিএমের ভিভিপ্যাট মেশিনের স্লিপ সেই মেশিনে পড়া ভোটের সঙ্গে মিলিয়ে দেখতে পারে।
ভারতে প্রথম ভিভিপ্যাট চালু হয় মহারাষ্ট্রের পুরভোটে। এবার গুজরাট, হিমাচল প্রদেশের সব বুথে ভিভিপ্যাটের বন্দোবস্ত করে কমিশন। সেপ্টেম্বরেই কমিশন জানায়, এবার থেকে দেশের সব নির্বাচনেই ইভিএমের সঙ্গে ভিভিপ্যাট থাকবে। উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা ভোটে বিরোধীদের ইভিএমে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ তোলার জেরেই কমিশনের এই সিদ্ধান্ত।
2017-12-15