নয়াদিল্লি, ১১ ডিসেম্বর (হি.স.) : পাক কূটনীতিকদের সঙ্গে কংগ্রেস নেতাদের বৈঠককে ‘রাজনৈতিক হঠকারিতা’ বলে আখ্যা দিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি । প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের কোন পরিস্থিতিতে আলোচনা হয়েছে তা নাকচ করে জেটলি বলেন, কী আলোচনা হয়েছিল, মনমোহন ও কংগ্রেস নেতৃত্বের কাছে তা জানানোর দাবি তোলেন।
রবিবার গুজরাটের পালানপুরের এক জনসভায় নরেন্দ্র মোদী অভিযোগ করেছিলেন গুজরাটের ভোট জিতেল পাকিস্তানের প্রাক্তন সেনা প্রধান আরসাদ রাফিকের সমর্থন পেয়েছে কংগ্রেস৷ মণিশংকর আইয়ারের বাড়িতে ৬ ডিসেম্বর এক অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের হাইকমিশনার, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং উপস্থিত ছিলেন। দাবি করেন, ওই বৈঠকে আহমেদ প্যাটেলকে মুখ্যমন্ত্রী করা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। যা নিয়ে সোমবার সরব হলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। রবিবার বিজেপিকে গুজরাটে হারাতে তিনি পাকিস্তানের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করছেন, নরেন্দ্র মোদীর এহেন অভিযোগেরই তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীর কাছে এজন্য ক্ষমা চাইতে বলেন মনমোহন সিং।
সেইসঙ্গে মনমোহন জানিয়েছেন, ‘মোদী যেমনটি বলছেন, মণিশংকরের বাড়িতে নৈশ্যভোজে গুজরাট নির্বাচন নিয়ে কিন্তু কিছু আলোচনা করিনি। সেখানে কেউই বিষয়টি তোলেনি। কেবল ভারত–পাকিস্তানের সম্পর্কের উন্নতি কিভাবে করা যায় তা নিয়েই আলোচনা হয়েছে। খ্যাতনামা সাংবাদিক, আমলারা উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের কারও বিরুদ্ধে দেশবিরোধী অভিযোগ তোলার কোনও জায়গা নেই।’ শুধু তাঁর কাছেই নয়, প্রধানমন্ত্রীর পদকে কলঙ্কিত করার জন্য দেশের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত মোদীর, মন্তব্য মনমোহনের।
তবে তা নাকচ করে দিয়ে পাক কূটনীতিকদের সঙ্গে কংগ্রেস নেতাদের বৈঠককে অরুণ জেটলি ‘রাজনৈতিক হঠকারিতা’ বলে আখ্যা দিলেন। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী সেই বৈঠকে কী আলোচনা হয়েছিল, মনমোহন ও কংগ্রেস নেতৃত্বের কাছে তা জানানোর দাবি তোলেন। তিনি বলেন, বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারের সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় যে ট্র্যাক রেকর্ড আছে, তা অতীতের কোনও সরকারের নেই। জেটলি বলেন, সন্ত্রাস আর আলোচনা একসঙ্গে চলতে পারে না, এই জাতীয় নীতি যারা লঙ্ঘন করেছে, ক্ষমা তাদের চাওয়া উচিত।
পাক কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক করে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জাতীয় লাইন ভেঙেছেন বলে অভিযোগ করে জেটলি দাবি করেন, কোন প্রেক্ষাপটে, কী প্রয়োজনে ওই বৈঠক হয়েছিল, সেই ব্যাখ্যা দিতে হবে মনমোহনকে। বলেন, আলোচনা আর সন্ত্রাস একসঙ্গে চলতে পারে না, বিরোধী দলও এই জাতীয় নীতি মেনে চলবে, এটাই প্রত্যাশিত। তাঁর প্রশ্ন, প্রধান বিরোধী দল কি রাষ্ট্রের অংশ নয়। কেউ জাতীয় লাইন অগ্রাহ্য করলে তাঁকে প্রশ্নের জবাব দেওয়ার জন্য তৈরি থাকতে হবে। এটা রাজনৈতিক হঠকারিতা, এর রাজনৈতিক মূল্য দিতে হবে।
2017-12-11