আস্থার স্থলগুলিকে আধুনিক পদ্ধতিতে বিকশিত করতে সরকার সংকল্পবদ্ধ : ধর্মেন্দ্র

গুয়াহাটি, ৯ ডিসেম্বর, (হি.স.) : আস্থার কেন্দ্রগুলিকে আধুনিক পদ্ধতিতে বিকশিত ও স্বচ্ছ করে তুলতে সংকল্পবদ্ধ কেন্দ্র ও রাজ্য। বলেছেন কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। স্বচ্ছ তীর্থস্থান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে শনিবার কামাখ্যা মন্দির প্রাঙ্গণ উন্নয়ন সংক্রান্ত ‘বিকাশ প্ৰকল্প’-এর শিলান্যাস অনুষ্ঠানে বক্তব্য পেশ করছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।
নীলাচল পাহাড়ে অবস্থিত বিখ্যাত শক্তিপীঠ মা কামাখ্যা ধাম শক্তিপীঠের অন্যতম। এই মন্দির চত্বরকে স্বচ্ছতার অন্যতম প্রতীকী স্থল হিসেবে বিকশিত করতে এক প্রকল্পের শিলান্যাস করা হয় শনিবার। কেন্দ্রীয় সরকার, রাজ্য সরকার এবং কামাখ্যা ধাম দলে কমিটির সহযোগিতায় এই প্রকল্পের কাজ করা হবে। এদিন সকালে আটটায় মা কামাখ্যার দর্শন করে এই প্রকল্পের শিলান্যাস করেছেন পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস দফতরের মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল, পর্যটনমন্ত্রী ড. হিমন্তবিশ্ব শর্মা, শিল্পোদ্যোগমন্ত্রী চন্দ্রমোহন পাটোয়ারি, পর্যটন উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান জয়ন্তমল্ল বরুয়া, গুয়াহাটির মেয়র মৃগেন শরণিয়া, মুখ্যসচিব বিকে পিপারসেনিয়া, বিজেপি-র প্রদেশ সভাপতি রঞ্জিতকুমার দাস প্রমুখ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গকে সঙ্গে নিয়ে।
ভারতীয় তেল নিগম এই প্রকল্প খাতে ২৫ কোটি টাকার অনুদান দিয়েছে। তা সম্পূর্ণ হতে সময় লাগবে দু থেকে পাঁচ বছর। এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান বলেন, ভারতের প্রধান প্রধান শক্তিপীঠের মধ্যে কামাখ্যা ধাম অন্যতম। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর স্বপ্ন, দেশের প্রমুখ আস্থার কেন্দ্রগুলোকে পর্যটকদের সুবিধার জন্য আধুনিকরণ করা। কারণ এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে অর্থনৈতিক সম্পর্কও। শক্তিপীঠ কামাখ্যা ধামে দেশ-বিদেশের হাজার হাজার মানুষ প্রতিবছর মায়ের দর্শন করতে আসেন। এই পরম্পরা বাজায় রেখে তার আধুনিকীকরণের প্রক্রিয়া শুরু করা হল বলে তাঁর স্বল্প ভাষণে বলেন ধর্মেন্দ্র প্রধান। জানান, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল, মন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা প্রমুখ অসমের জনসাধারণ পরম সৌভাগ্যশালী। তাঁরা মা কামাখ্যার আশ্রয়ে রয়েছেন বলে। গত অম্বুবাচি মেলার সময় তিনি মায়ের দর্শনে এসেছিলেন। তখনই তিনি এই মন্দিরে পর্যটকদের সুবিধার্থে এবং এর চত্বরকে আরও স্বচ্ছ করে তুলতে অর্থানুদানের কথা বলেছিলেন। আজ সে প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পেরে তিনি স্বস্তি পেয়েছেন বলে জানান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রধান।
রাজ্যের পর্যটকমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা জানিয়েছেন তাঁর পরিকল্পনার কথা। জানান, পেট্রোলিয়াম দফতরের অধীনস্থ ভারতীয় অয়েল ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষ ২৫ কোটি টাকা কামাখ্যা ধামের উন্নয়নে অনুদান দিয়েছেন। তাছাড়া পর্যটন মন্ত্রালয় ও ওএনজিসি ৩২ কোটি এবং ডোনার মন্ত্রালয় ১৮ কোটি টাকা কামাখ্যা ধামের উন্নয়নে অনুদান দিয়েছে। ১৮ কোটি টাকা দিয়ে পাণ্ডু থেকে একটা রাস্তা বানানো হবে। কামাখ্যা ধামের ঐতিহ্যের উপর বিশেষভাবে জোর দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
এ প্রসঙ্গে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল গান্ধীজিকে স্মরণ করে বলেন, স্বচ্ছ মনের অধিকারী হলে ঈশ্বর লাভ হয়। এই বাণী স্মরণ করে আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভারতবর্ষকে বিশ্বের দরবারে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য স্বচ্ছ ভারত অভিযান চালিয়েছেন। এর জন্য পুরো দেশে কোটি কোটি শৌচালয় তৈরি হয়েছে। পবিত্র কামাখ্যা ধামকে ভারতের মধ্যে এক আধ্যাত্মিক তীর্থস্থান হিসেবে পরিগণিত করার জন্য আপ্রাণ প্রচেষ্টা চালানো হবে। কারণ দেশ-বিদেশের হাজারো দার্শনার্থী এখানে শান্তির জন্য আসেন। প্রসঙ্গক্রমে তিনি বৃদ্ধবৃদ্ধাগণ ছাড়াও বিশেষ ভাবে সক্ষম লোকদের জন্য বিশেষ প্রকল্পের কথাও বলেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *