কলকাতা, ৮ ডিসেম্বর (হি. স.): রাজস্থানে বাঙালি খুনে উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজস্থানের ডিজির সঙ্গে কথা বলতে নির্দেশ দিলেন রাজ্য পুলিশের ডিজি সুরজিৎ করপুরকায়স্থকে। তাঁর বক্তব্য, “বাংলার অনেক শ্রমিক রাজস্থানে কাজ করেন। অনেকে রাজস্থানে রয়েছেন। তাঁদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে। এদিকে, মুখ্যমন্ত্রী এবং বামেদের ভূমিকা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক।
বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে প্রতিবাদের ঝড়ও উঠেছে। অনেকের মন্তব্য, বিষয়টার গভীরে না গিয়ে রাজনীতি শুরু হয়েছে। সমীর ঘোষ লিখেছেন, “এত ভালো বাংলা ছেড়ে কেন বাইরে যাচ্ছে, সেটা তো ভাবার ব্যাপার। কেন যায় কাজে? লজ্জা আমাদের যে শ্রমিকের কাজ খুঁজতে কেরালা, গুজরাট, রাজস্থান যেতে হচ্ছে।ইঞ্জিনিয়ার তো বাদ দিন।সব ফেরত নিয়ে এসে কাজ দিলেই তো লাটা চুকে যায়!”
সাংবাদিক রন্তিদেব সেনগুপ্ত লিখেছেন, “যে কোনো হত্যাই নিন্দার। তবে আটের দশকে কলকাতায় আনন্দমার্গীদের পুড়িয়ে মারা থেকে নেতাই, কেশপুর হয়ে কেরলে সংঘকর্মীদের নৃশংস হত্যাকাণ্ড যেন নিন্দা থেকে বাদ না পড়ে যায় কমরেড।“ পোস্ট করার পর প্রথম ৪০ মিনিটে ৬৬টি লাইক, ৬ টি শেয়ার| এঁদের অন্যতম কলকাতার ননী ভূষণ বিশ্বাস লিখেছেন, “আননদমাগী’দের খুন তো পশ্চিবঙ্গের ইতিহাসে সবচেযে বর কলঙ্ক। ওদের মুখে এ সব কথা মানায না।“
একটি উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষক অনিরুদ্ধ দে সরকার লিখেছেন, “মালদার বাসিন্দা পঞ্চাশ বছর বয়স্ক তিন কন্যা সন্তানের পিতা মহ: আফরোজ ভিন্ন ধর্মের তরুণীর সঙ্গে প্রেম ঘটিত সম্পর্কের কারনে গতকাল রাজস্থানে নির্মম ভাবে খুন হয়ে যান। কি বলছেন প্রতিবাদ করা দরকার ?? কিন্তু কেন করবো !! আগেও তো এমন ঘটনা ঘটেছে,তখন তো প্রতিবাদ করি নি। তো এখন করবো কেন ?? নাকি আগের ঘটনা গুলোতে প্রতিবাদ করতে নেই??”
উদাহরন হিসাবে তিনি বিশদ তালিকা দাখিল করেছেন – (১) অক্টোবর ২০০৯। জম্মুর হিন্দু ব্যবসায়ীকে খুন করা হয়। অপরাধ- আমিনা নামে এক মুসলিম মহিলাকে বিবাহ। খুনী- আমিনার পুলিশ বাবা!
(২) নভেম্বর ২০১৪। হাপুর’এর তপশিলী যুবক সোনুকে প্রকাশ্য দিবালোকে খুন করা হয়। অপরাধ- দানিস্তা বেগম নামে এক মুসলিম মহিলাকে বিবাহ। খুনি – দানিস্তার ভাই
(৩) মার্চ ২০১৫। বিহার,হাজিপুরের যুবক সঞ্জীবকে অপহরণ করে হত্যা করা হয়। সঞ্জীবের অপরাধ- মুসলিম মহিলাকে বিবাহ। খুনি – মুসলিম মহিলার শ্বশুরবাড়ির লোক।
(৪)সেপ্টেম্বর 2017। তিরুপতির যুবক উপেন্দ্রর বাড়িতে চড়াও হয়ে কোপানো হয়। কারন- মুসলিম মহিলার সাথে প্রেম। খুনী- আহমত’উল্লাহ, হামানুল্লাহ, রহমতউল্লাহ
(৫) ২০০৮.. মুর্শিদাবাদ। লক্ষ্মণপুর। বিহারী হিন্দু মজদুর শৈলেন্দ্রপ্রসাদকে সালিশি সভায় বিচার করে মাথা কেটে হত্যা করা হয়। কারন- মুনিরা বিবি নামক এক মুসলিম নারীকে বিবাহ। খুনি- মুনিরা বিবির বাবা ও পাড়া প্রতিবেশী
(৬) জুন ২০১৭। গর্ভবতী মুসলিম মহিলাকে তার পরিবার জ্যান্ত পুড়িয়ে মারে। কারন- দলিত যুবকের সাথে বিবাহ।
(৭) মে, ২০১৫। উত্তরপ্রদেশ বাঘপত। দুই মুসলিম মহিলা জাহিদা ও হুশনাকে তাদের পরিবার গলায় দড়ি দিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে। কারন- হিন্দু ছেলেকে বিবাহ।
(৮)নভেম্বর ২৫, ২০১০। রেহানা পারভীনকে তার পিতা হত্যা করে। কারন- হিন্দু যুবকের সাথে প্রেম!
(৯)সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৬। মুম্বাইয়ে বিজয় যাদব, সুফিয়া আনসারি নামের দম্পতিকে হত্যা করা হয়। খুনি – সফিক মনসুরি। কারন- ইন্টার রিলিজিয়াস ম্যারেজ
(১০)নভেম্বর ২০, ২০০৯, বাঙ্গালোর, তিলকনগর। তামিলনাড়ুর যুবক মাদিয়ানকে হত্যা করা হয়। কারন- হাজেরা নামে এক মুসলিম তরুণীর সাথে প্রেম। খুনি-মোহাম্মদ আকবর, কাজা মইনুদ্দিন, জাহির খান, সায়েদ নিয়ামত সহ আরো কয়েকজন
(১১) ডিসেম্বর ১! ২০১৭। বিহারে মুকেশ কুমার ও নুরজাহান খাতুন নামের কিশোর কিশোরিকে হত্যা করা হয়। কারন- অন্য ধর্মে প্রেম। খুনি- নুরজাহান খাতুনের পরিবার।
(১২)জানুয়ারি ১৭,২০১৭ কেরালা। জাসমি ইসমাইল নামে এক মুসলিম তরুণী ফেসবুক পোস্ট দিয়ে জানায়, তার জীবন বিপন্ন, তাকে হত্যার থ্রেট দেওয়া হচ্ছে। সে হিন্দু যুবকের সাথে প্রেম করে এইজন্য ।
(১৩) অক্টোবর, ২০১২। মুসলিম মেয়ের সাথে প্রেমের অপরাধে কেরলের প্রতিভাবান হিন্দু ফুটবলার জিঠু মোহনকে গায়ে পেট্রোল ঢেলে জ্বালিয়ে খুন।
(১৪) সেপ্টেম্বর, ২০১২। মিঠুন মন্ডল তার স্ত্রী তারানাকে নিয়ে মানবাধিকার দপ্তর যায়। মেয়ের পরিবার ওদের ক্রমাগত খুন করার হুমকী দেওয়ার কথা জানায়।
2017-12-08