নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা/তেলিয়ামুড়া, ৬ ডিসেম্বর৷৷ অভাবের তাড়নায় সন্তান বিক্রির ঘটনার সত্যতা নিয়ে বিভিন্ন মহলে জোর আলোচনা চলছে৷ একটি মহল থেকে দাবি করা হচ্ছে অভাবের তাড়নায় নয়, সন্তানকে পালিতা মায়ের হাতে তুলে দিয়েছিলেন মা৷ রীতি অনুযায়ী দুইশ টাকার লেনদেন করতে হয়৷ আর সেটাই হয়েছিল কর্ণ দেববর্মার পরিবারে আট বছর আগে৷ ঐ সময়ের বিষয়টিকে এখন প্রকাশ্যে এনে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার একটি চক্রান্ত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে৷
এদিকে অন্য একটি সূত্র অনুসারে জানা গিয়েছে, গর্ভজাত আট মাসের সন্তানকে ২০০ টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে দেওয়া হয় অভাবের সংসার পরিচালনার জন্যে৷ তার পরেও বর্তমান বামফ্রন্ট সরকারের আমলে মিলেছে এপিএল কার্ড৷ ঘটনাটি তেলিয়ামুড়া মহকুমা মুঙ্গিয়াকামী ব্লকের অধীন দক্ষিণ মহারানী এডিসি ভিলেজের শরৎ চন্দ্র পাড়া এলাকায়৷ নুন আনতে যেখানে পান্থা ফুরায় সেখানে জনজাতি মানুষেরা স্বাধীনতার সত্তর বছর পরেও রাজ্যের বুকে বসবাস করেও নিজের আট মাসের শিশুকে কোন এক অচেনা মহিলার কাছে মাত্র ২০০ টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে দিয়েছেন ৮ বছর আগে৷ কেনই বা বিক্রি করতে হয়েছে আট মাসের সন্তানকে৷ তার প্রশ্ণে উত্তর জানতে শাসক দলের নেতারা কর্ণ দেববর্মার পরিবারের খোঁজখবর না নিতে গেলেও, বিজেপি খোয়াই জেলা সহ সভাপতি বিকাশ দেববর্মা, জনজাতিদের সুরক্ষার জন্যে ছুটে গেলেন শরৎ চন্দ্র পাড়াতে৷ তিনি শরৎ চন্দ্র পাড়ার জনজাতি কর্ণ দেববর্মা ও তার স্ত্রী পুষ্প রানী দেববর্মার সাথে কথা বলেন৷ কর্ণ দেববর্মা জানান তিনি বর্তমানে ৭০ বছরে পা দিয়েছেন৷ পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৭ জন৷ আট বছর পূর্বে আট মাসের কন্যা সন্তান মনিমালা দেববর্মাকে অভাবের তাড়নার বিক্রি করে দিয়েছেন৷ সেই সময় থেকে আজও কর্ণ দেববর্মা বনের লাকড়ী বিক্রি করে সংসারের যাবতীয় ভরণ পোষণ জোগিয়ে যাচ্ছেন৷
নিজের সন্তান বিক্রি করার ঘটনা রাজ্যের বুকে বিরল নয়৷ বর্তমানেও তার পরিবারের হাল বদলায়নি৷ সমস্যা যে তিমিরে ছিলো সেই তিমিরেই রয়ে গেছে৷ কর্ণ দেববর্মা পরিবারটির অন্নপূর্ণা রেশন কার্ডের দাবীদার থাকলেও মিলেছে শুধু এপিএল কার্ড৷ এটাই করিৎকর্মা বামফ্রন্ট সরকারের নমুনা৷
এদিকে চার বছর পূর্বে সংসারের ভরণ পোষণ জোগাতে ৮ মাসের কন্যা সন্তান বিক্রির ঘটনায় খবর পেয়ে দক্ষিণ মহারাণীপুর এডিসি ভিলেজের শরৎ চন্দ্র পাড়াতে ছুটে যান বিজেপি খোয়াই জেলার সহ সম্পাদক বিকাশ দেববর্মা৷ বিকাশ দেববর্মা উদ্বেগের সঙ্গে বলেন, বর্তমান বামফ্রন্ট সরকারের শাসন ব্যবস্থার উপর আস্থা নেই জনজাতিদের৷ জনজাতি মানুষেরা বেঁচে থাকার জন্য সন্তানকে বিক্রি করতে হচ্ছে৷ সেইটা কোন যুগে বসবাস করছে জনজাতি অংশের মানুষেরা৷ এখন দেখার বিষয় কবে নাগাদ জনজাতি অংশের মানুষকে আর্থ সামাজিক মান উন্নয়ন করা হয়৷ নাকি স্বর্ণযুগে বারবার জনজাতি অংশের মানুষেরা সরকারী ভাবে বঞ্চনার শিকার হবে৷
2017-12-07