কলকাতা, ২ ডিসেম্বর (হি.স.): দিন যত যাচ্ছে শিশুদের যৌনহেনস্থা বা ধর্ষণের খবর তত বেশি করে সামনে আসছে। আর সমীক্ষা বলছে শিশুদের যৌন লাঞ্ছনা বা ধর্ষণের মত ঘটনার অধিকাংশ ক্ষেত্রেই জড়িত থাকে পরিচিত মুখ। রানিকুঠির ঘটনাই একমাত্র ঘটনা নয়। এই ধরনের ঘটনা রোজ ঘটছে। আমাদের চারপাশেই ঘটছে। আমাদের চারপাশেই থাকে এই ধরনের বিকৃত কামনার মানুষ। তবে মুখ ঢাকা। সাধারণভাবে চেনা সম্ভব নয়। শুধু যৌন লাঞ্ছনা বা ধর্ষণ নয়, ৯৪.৮ % অপরাধের পিছনেই থাকে পরিচিত চেহারা। পাড়া-প্রতিবেশী (৩৫.৮%), বাড়ির লোক ও আত্মীয়-স্বজন (১০%), শিক্ষক, কর্মদাতা (শিশু শ্রমিকের ক্ষেত্রে) এদের মধ্যে যে কেউই থাকতে পারে। গায়ে হাত দেওয়ার মতো শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটে রাস্তাঘাটে অপরিচিত লোকজনের মাধ্যমে। কিন্তু যৌন লাঞ্ছনা বা ধর্ষণের মতো ঘটনার জন্য দরকার নিরিবিলি। নিরিবিলি জায়গার সুযোগ পরিচিত লোকজনই পেতে পারে। এছাড়াও আরেকটি বিষয় লক্ষ্যণীয়। দিন যত যাচ্ছে শিশুদের যৌনহেনস্থা বা ধর্ষণের খবর তত বেশি করে সামনে আসছে। রিপোর্ট দায়ের হচ্ছে। আগে এত অভিযোগ সামনে আসত না। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৪ সালে শিশু ধর্ষণের ৮,৯০৪টি অভিযোগ দায়ের হয়। ২০১৫ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১৪,৯১৩। দেড়গুণেরও বেশি। ২০১৬ সালে শিশু ধর্ষণের মোট অভিযোগ দায়ের হয়েছে ১৮,৮৬২টি। বৃদ্ধির হার ক্রমবর্ধমান। তার মানে, দিন দিন বাড়ছে এধরনের অরাজকতা। কখনও আদরের ছলে, কখনও লজেন্স দেওয়ার লোভে চলছে এ ধরনের বিকৃতমনস্ক কাজ। শিশুশ্রমিকদেরও বিভিন্ন লোভ দেখিয়ে ধর্ষণ, হেনস্থা করা হচ্ছে। অভিযোগ বেশি দায়ের হওয়ার অন্য একটি কারণও থাকতে পারে। নির্যাতিতরা সাহস করে এগিয়ে এসে অভিযুক্তের মুখোশ খুলে দেওয়ার চেষ্টা করছে। পুলিশ প্রশাসনও কার্যকরী ভূমিকা নিচ্ছে। বহু জায়গায় মহিলা থানা তৈরি হয়েছে। নির্যাতিত শিশুরা অভিযোগ জানাতেও সাহস পাচ্ছে। অগ্রণী ভূমিকা নিচ্ছে সংবাদমাধ্যমও।–
2017-12-02