কলকাতা, ১ ফেব্রুয়ারি (হি.স.): অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণের বিভিন্ন ঘোষণা ‘ধ্বংসাত্মক’, ‘জনবিরোধী ষড়যন্ত্র’ বলে সমালোচনা করলেন রাজ্যের অর্থ উপদেষ্টা তথা প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র।
বুধবার বাজেট পেশের পর তথ্য-পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি দেখানোর চেষ্টা করেন, সামাজিক প্রকল্প, খাদ্যে ভর্তুকি কমানো কতটা জনস্বার্থ বিরোধী। প্রশ্ন তোলেন, দেশে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণের দিশা কোথায় বাজেটে? বিমায় বিদেশি বিনিয়োগের ১০০ শতাংশ সুযোগ মিললেও কেন আমজনতার জন্য স্বাস্থ্যবিমায় জিএসটি কমানো হল না?
কেন্দ্রীয় বাজেটে ‘গভীর ষড়যন্ত্র’ রয়েছে বলে তোপ দেগেছে তৃণমূল। এমনই বলেছেন রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অর্থ বিষয়ক প্রধান উপদেষ্টা অমিত মিত্র। কেন ষড়যন্ত্র, সেই ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘বিমা ক্ষেত্রে ১০০ শতাংশ প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু ১৮ শতাংশ জিএসটি নেওয়া বন্ধ হচ্ছে না। এই দু’টি বিষয় কি সম্পর্কযুক্ত নয়? এর ফলে কি আন্তর্জাতিক লবি লাভবান হবে না? তাদের সুবিধা করে দিতেই কি এই পদক্ষেপ?’’
উল্লেখ্য, স্বাস্থ্য-সহ সমস্ত বিমায় জিএসটি প্রত্যাহারের প্রথম দাবি তুলেছিলেন কেন্দ্রেরই মন্ত্রী নিতিন গডকড়ি। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীকে গত বছর চিঠি লিখে তিনি দাবি করেছিলেন, যে নাগরিক তাঁর স্বাস্থ্যের জন্য বিমা করেন, তাতে জিএসটি নেওয়া চাপ বৃদ্ধি করা ছাড়া কিছুই নয়। একই দাবিতে নির্মলাকে দু’টি চিঠি লিখেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতাও। সেই জিএসটি-র হার শূন্য করা তো দূরে থাক ১ বা ২ শতাংশও কমানো হয়নি। পাশাপাশিই, বিমা ক্ষেত্র ১০০ শতাংশ প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হল। যাকে বৃহত্তর ষড়যন্ত্র হিসাবেই দেখছে তৃণমূল। অমিতবাবুর কথায়, ‘‘এই বাজেট বিপর্যয়ের বাজেট। মানুষের জীবনযন্ত্রণা আরও বাড়বে।’’
কেন্দ্রীয় বাজেটে আয়কর ছাড়ের উর্ধ্বসীমা বৃদ্ধি করে সাত লক্ষ টাকা থেকে ১২ লক্ষ টাকা করা হয়েছে। যাকে মধ্যবিত্তের জন্য ‘যুগান্তকারী’ সিদ্ধান্ত বলে অভিহিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু তৃণমূল পাল্টা প্রশ্ন তুলেছে, ১৪০ কোটির ভারতে কত লোক মাসে এক লক্ষ টাকা রোজগার করেন?
উৎপাদন ক্ষেত্র থেকে সামাজিক সুরক্ষার প্রসঙ্গ তুলে অমিতবাবু বলেন, মানুষের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা বিষয়গুলিকেই গুরুত্ব দেওয়া হয়নি বাজেটে। সামাজিক সুরক্ষা খাতে ৫ শতাংশ বরাদ্দ ছাঁটা হয়েছে। খাদ্য সরবরাহের ক্ষেত্রেও ভর্তুকি ১ শতাংশ কমিয়েছে কেন্দ্র। তৃণমূলের দাবি, এগুলি থেকেই স্পষ্ট কেন্দ্রীয় সরকারের অভিমুখ কী, কাদের তারা খুশি করতে চেয়েছে।