আগরতলা বিমানবন্দর সম্পূর্ণ নিরাপদ, সমস্ত নিয়ম পালন হচ্ছে : এএআই অধিকর্তা

আগরতলা, ২১ জুন : আহমেদাবাদে বিমান দুর্ঘটনায় রাতের ঘুম উড়ে গেছে অনেকেরই। কারণ, বিমানবন্দরে বিমান উঠা-নামা থেকে শুরু করে বিমানের সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার অত্যাধিক গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। সেক্ষেত্রে ছোট্ট পার্বতী রাজ্য ত্রিপুরায় আগরতলাস্থিত একমাত্র বিমান বন্দরটির সুরক্ষা ব্যবস্থা কোন ঘাটতি নেই বলে দাবি করেছেন এয়ারপোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার(এএআই) অধিকর্তা কে. সি. মীনা। পাখির কারণে বিমান চলাচলে বিঘ্ন না ঘটে, সে-জন্য বিমান বন্দরের আশেপাশে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং উঁচু বহুতল নির্মাণের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সুরক্ষা পদ্ধতি সম্পূর্ণরূপে সন্তোষজনক বলে দাবি করেছেন তিনি।

সম্প্রতি আহমেদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান দুর্ঘটনার ফলে যাত্রী ও বিমান কর্মী সহ বহু সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। বিমানবন্দরের পাশেই ঘন বসতি হওয়ার কারণে হতাহতের সংখ্যা অনেকটাই বেড়েছে। স্বাভাবিকভাবেই ওই দুর্ঘটনার পর কেন্দ্রীয় সরকার নড়েচড়ে বসেছে এবং সমস্ত বিমান সংস্থার পাশাপাশি বিমান বন্দর কর্তৃপক্ষকেও সুরক্ষা ব্যবস্থাপনা সঠিকভাবে পালনের নির্দেশ দিয়েছে। বিমান উঠা-নামায় ব্যাঘাত না ঘটে এবং সুরক্ষা ব্যবস্থার অধীনে বেশ নিয়ম রয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই সারা দেশের সমস্ত বিমান বন্দরের জন্য ওই নিয়ম বলবৎ আছে।

সম্প্রতি আগরতলায় মহারাজা বীর বিক্রম বিমান বন্দরে ধারাবাহিক প্রক্রিয়ায় সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এয়ারফিল্ড এনভিরনমেন্ট ম্যানেজমেন্ট কমিটির ওই বৈঠক পশ্চিম ত্রিপুরা জেলা শাসকের পৌরহিত্যে অনুষ্ঠিত হয়েছে। তিনি ওই কমিটির প্রধান। ওই বৈঠকে এএআই অধিকর্তা সহ অন্যান্য আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা সকলেই বিমানবন্দরের সুরক্ষা ব্যবস্থা বিভিন্ন খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে সবিস্তারে আলোচনা করেছেন।

শ্রী মীনা আজ টেলিফোনে জানিয়েছেন, প্রতি দুই মাস অন্তর ওই কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তাতে, সমস্ত রকম সুরক্ষা ব্যবস্থা ও অন্যান্য আনুষাঙ্গিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। তাঁর কথায়, এদিনের বৈঠকেও ওই সমস্ত বিষয়েই চর্চা হয়েছে। তাতে, আগরতলায় মহারাজা বীর বিক্রম বিমান বন্দর সুরক্ষা ব্যবস্থা খুবই নিরাপদে রয়েছে বলে ওই বৈঠকে উপস্থিত সকলেই আশ্বস্ত হয়েছেন।

তিনি বলেন, বিমান উঠা-নামার ক্ষেত্রে কোন ব্যাঘাত না ঘটুক, সে-দিকে সর্বদা বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে পাখির জন্য সমস্যা না হয়, তা সুনিশ্চিত করতে বিমানবন্দরের ১০ কিলোমিটারের ব্যাসার্ধের ভেতরে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সঠিক রয়েছে। তবে, বিমানবন্দরের লাগোয়া স্থানে বাজার রয়েছে ঠিকই। কিন্তু, বাজার কমিটি উন্মুক্ত স্থানে বর্জ্য না জমে সে-দিকে বিশেষ নজর দিচ্ছে। সাথে তিনি যোগ করেন, উঁচু বহুতল নির্মাণের ক্ষেত্রেও এএআই-র অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক, আগরতলায় তা সকলেই মেনে চলছেন।

তাঁর কথায়, উঁচু বহুতল নির্মাণে অনুমতির জন্য অনলাইনে আবেদন জানাতে হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষায় সমস্ত কিছু ঠিকঠাক মিললে তবেই অনুমতি দেওয়া হয়। তাঁর দাবি, আগরতলায় ওই নিয়ম পালন করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে কোথাও সমস্যা হলে বিষয়গুলি প্রশাসনের গোচরে নেওয়া হয়। ত্রিপুরা প্রশাসনও খুবই দ্রুততার সাথে সেই সমস্যা সমাধানের করে ফেলে। তিনি অভয় দিয়ে বলেন, আগরতলায় বিমানবন্দর নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সম্পূর্ণভাবে নিরাপদ।