ইমফল, ২৬ জানুয়ারি (হি.স.) : ‘আমরা গণতন্ত্রের পবিত্রতা রক্ষা করব, জাতির অখণ্ডতা ও ঐক্য বজায় রাখব এবং এই মূল্যবোধগুলিকে নিশ্চিত করতে নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব।’ ৭৬-তম প্রজাতন্ত্র দিবসে গৌরবময় এই শপথ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস)-এর সরকার্যবাহ (সাধারণ সম্পাদক) দত্তাত্রেয় হোসবলে। আজ রবিবার ইমফল পশ্চিম জেলার অন্তর্গত ভাস্কর প্রভায় দেশের ৭৬-তম প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত সমাবেশে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে ভারতের ঐক্য, সংস্কৃতি এবং নাগরিকদের কর্তব্য সংক্রান্ত নানা বিষয়ের ওপর চিত্তাকর্ষক বক্তৃতা পেশ করতে গিয়ে এই আহ্বান জানিয়েছেন সংঘের সরকার্যবাহ।
প্রদত্ত ভাষণে সংঘের সরকার্যবাহ হোসবলে হিমালয় থেকে বিশাল ভারত মহাসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত এই পবিত্র ভূমির পরিচয় স্মরণ করিয়ে একে এক বিশাল ভারত হিসেবে সংজ্ঞায়িত করেন। বলেন, ‘এই ভূমিতে বসবাসকারী প্রত্যেক ব্যক্তিই একজন ভারতীয়। এর ফলে জাতীয় ঐক্যের অনুভূতি আরও মজবুত হয়।’
তিনি ভারতের সংবিধানের অন্তর্নিহিত গভীর সাংস্কৃতিক আত্মা সম্পৰ্কে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন, এর চিত্র এবং পাঠ্য আমাদের দেশের সমৃদ্ধ ঐতিহ্যকে প্রতিফলিত করে। নাগরিকদের মৌলিক কর্তব্যের গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে তিনি ভারতীয় ইতিহাসের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বদের জীবন থেকে অনুপ্রেরণা নেওয়ার আহ্বান জানান।
ভগবান শ্রীরামের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, শ্রীরামচন্দ্র তাঁর মৌলিক অধিকার বিসর্জন দিয়ে ১৪ বছরের নির্বাসন গ্রহণ করে মৌলিক দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তিনি বলেন, এই ঘটনাটি কর্তব্যকে অধিকারের ঊর্ধ্বে রাখার একটি চমৎকার উদাহরণ। তিনি রাজা হরিশচন্দ্রের প্রসঙ্গও বক্তব্যে তুলে ধরেছেন। বলেন, সত্যের প্রতি অটল ভক্তি ছিল রাজা হরিশচন্দ্রের। যার দরুন বহু কষ্টের মুখোমুখি হয়েও তিনি দেশের ‘সত্যমেব জয়তে’-র আদর্শের প্রতীক হয়ে উঠেছেন।
সংঘের সরকার্যবাহ হোসবলে বলেন, ‘ভারত বিশ্বের কল্যাণে ‘বসুধৈব কুটুম্বকম’ (গোটা বিশ্ব এক পরিবার) নীতিতে অনুপ্রাণিত।’ তিনি দেশকে শক্তিশালী এবং উন্নত করতে নাগরিকদের নিবেদিতপ্রাণ হওয়ার আহ্বান জানান। একে প্রত্যেক ভারতীয়ের কর্তব্য ও দায়িত্ব বলে অভিহিত করেছেন তিনি।
ভাস্কর প্রভায় আয়োজিত ৭৬-তম প্ৰজাতন্ত্ৰ দিবসের অনুষ্ঠানটি ছিল দেশাত্মবোধে ভরপুর। উড্ডীয়মান জাতীয় পতাকার নীচে মুহুর্মুহু ধ্বনিত হচ্ছিল বন্দেমাতরম।