ত্রিপুরা বিধানসভায় ওস্তাদ জাকির হুসেন-কে স্মরণ

আগরতলা, ১৩ জানুয়ারি: ত্রিপুরা বিধানসভা শীতকালীন অধিবেশনে আজ ওস্তাদ জাকির হুসেনের স্মরণে স্মৃতিচারণ করা হয়েছে। এদিন অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ সহ ত্রিপুরার বিধানসভার সকল সদস্যরা তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ২ মিনিট দাঁড়িয়ে নিরবতা পালন করেছেন। 

প্রয়াত ওস্তাদ জাকির হুসেনের স্মৃতিচারণে অধ্যক্ষ বিশ্ববন্ধু সেন বলেন, প্রখ্যাত তবলা বাদক ওস্তাদ জাকির হুসেন গত ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোতে ৭৩ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ১৯৫১ সালের ৯ মার্চ মুম্বইয়ের মাহিমে জন্মগ্রহণ করেন জাকির হুসেন। তাঁর পিতা ছিলেন প্রখ্যাত তবলা বাদক ওস্তাদ আল্লা রাখা। শৈশব থেকেই তবলার প্রতি গভীর আগ্রহ ও প্রতিভা প্রদর্শন করেন তিনি। মাত্র তিন বছর বয়স থেকে তবলা শেখা শুরু করেন এবং সাত বছর বয়সে প্রথম একক মঞ্চে পরিবেশনা করেন।

তাঁর কর্মজীবন ছিল সঙ্গীত জগতের এক উজ্জ্বল অধ্যায়। হিন্দুস্তানি শাস্ত্রীয় সঙ্গীত, জ্যাজ এবং বিশ্ব সঙ্গীতের মেলবন্ধনে তবলা বাদক হিসাবে তিনি অসামন্য ভূমিকা পালন করেছেন। বিশ্বব্যাপী সঙ্গীতপ্রেমীদের কাছে তিনি ছিলেন তবলার সম্রাট। তবলায় তাঁর বিরল সুরের জাদু শ্রোতাদের মুগ্ধ করেছে এবং ভারতীয় সঙ্গীতকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছে।

বিশ্বশ্রেষ্ঠ তবলা বাদক হিসাবে তাঁর অসামান্য প্রতিভা ও সঙ্গীত জগতে অবদানের জন্য তিনি বহু রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। ভারত সরকার তাঁকে ১৯৮৮ সালে পদ্মশ্রী, ২০০২ সালে পদ্মভূষণ এবং ২০২৩ সালে পদ্মবিভূষণ সম্মানে সম্মানিত করে। এছাড়া, তিনি সাতটি গ্র্যামি পুরস্কারের মনোনয়ন থেকে চারটি পুরস্কার অর্জন করেন, যার মধ্যে ২০০৯ সালে “গ্লোবাল ড্রাম প্রজেক্ট” অ্যালবামের জন্য একটি এবং ২০২৪ সালে তিনটি গ্র্যামি পুরস্কার অন্তর্ভুক্ত।

তাঁর প্রয়াণে সঙ্গীত জগতে এক অপূরণীয় শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে। ত্রিপুরা বিধান সভা তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করছে এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছে। তাঁর সঙ্গীত ও উত্তরাধিকার আমাদের হৃদয়ে চিরকাল অমলিন থাকবে।এখন আমি প্রয়াত ওস্তাদ জাকির হুসেনের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে দুই মিনিট নীরবতা পালন করার জন্য সভায় উপস্থিত সকলের প্রতি অনুরোধ করছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *