বিজেপি, আইপিএফটি ও তিপরা মথা প্রত্যেকে রাজ্যবাসীর অপরাধী, মুক্তি পেতে লড়াই ছাড়া কোনো বিকল্প নেই : মানিক সরকার

আগরতলা, ১১ জানুয়ারি: বিজেপি, আইপিএফটি ও তিপরা মথা প্রত্যেকে রাজ্যবাসীর অপরাধী। তাঁদের স্বৈরাচারী শাসন থেকে মুক্তি পেতে লড়াই ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। আজ ৬ দফা দাবিতে গনমুক্তি পরিষদের রাজভবন অভিযানে এমনটাই দাবি করলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা পলিটব্যুরোর সদস্য মানিক সরকার।

এদিন শ্রীসরকার বলেন, ২০১৮ সালে সিপিএমকে হটানোর জন্য বিজেপি পরিবর্তনের ডাক দিয়েছিল। নির্বাচনী ইস্তেহারে রাজ্যের বেকার সমস্যা সমাধানেরও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু সাত বছর হতে চলছে এখনো পর্যন্ত কোনো প্রতিশ্রুতি পালন করে নি বিজেপি সরকার। বেকাররা চাকুরীর সন্ধানে দিশেহারা হয়ে ঘুরছেন। কিন্তু, তৎকালীন সময়ে বামফ্রন্ট সরকার অর্থদপ্তরের সহযোগিতায় বছরের দুবার অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সরকারি চাকুরী প্রদান করত।

তাঁর কথায়, কেন্দ্র বিজেপি সরকার ক্ষমতায় থাকলেও ত্রিপুরার বেকার সমস্যা সমাধান করতে পারছে না। কিন্তু ২০১৮ সালের ত্রিপুরায় নির্বাচনী জনসমাবেশে এসে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্টমন্ত্রী এবং অসমের মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যবাসীকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ক্ষমতায় আসলে সরকারি চাকুরী প্রদান করা হবে। তাদের সরকারের আমলে বেকার সমস্যা থাকবে না। কিন্তু ত্রিপুরায় এখন সম্পূর্ণ উল্টো চিত্র দেখা যাচ্ছে। বিজেপি সরকার বেকার যুবক যুবতীদের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে।

তাছাড়া, ২০১৮ সালে বিজেপি সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ৩০০ টাকা রেগার মজুরি প্রদান করবে। এখনো পর্যন্ত তাও পূরণ করে নি। এখন ত্রিপুরায় রেগার মজুরি ২৪০ টাকা হয়েছে। তাও বছরে গড়ে ৩২ দিন কাজ হয়। তাই তিনি জনগণকে সহজে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য আবেদন করেন।

তাঁর কটাক্ষ, রাজ্যবাসীর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে তিপরা মথা। কারণ, তিপরা মথার নেতৃত্বরা জানতেন অউপজাতি অংশের মানুষ কংগ্রেস ও বিজেপি থেকে প্রতারিত হয়ে বামফ্রন্টকে ভোট দেবেন। তাই ২০২৩ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ৪২টি আসনে প্রার্থী দিয়েছেন তাঁরা। তাঁরা অসংরক্ষিত আসনে প্রার্থী দিয়ে বিজেপিকে সুরক্ষা প্রদান করেছেন। যার ফলে, ত্রিপুরার বামফ্রন্ট সরকার ক্ষমতায় আসতে পারে নি। তিপরা মথাকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য ত্রিপুরার ৪২ লক্ষ মানুষ ঘরে ঘরে প্রস্তুত হচ্ছে। ত্রিপুরাবাসীকে বিজেপি, তিপরা মথা ও আইপিএফটি থেকে রেহাই দিতে লড়াই ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।

এদিন তিনি জোর গলায় বলেন, ২০২৩ সালে বিধানসভা নির্বাচনে বামফ্রন্ট সরকারকে আটকানোর জন্য তিপরা মথা বিজেপিকে রাস্তা করে দিয়েছিল। বিজেপিকে রক্ষা করার জন্য আবারও ১৫ লক্ষ জনজাতিদের একত্রে আসার স্লোগান দিচ্ছে। কিন্তু নির্বাচনে জয়ী হয়ে এডিসিকে লুটের রাজত্বে পরিণত করেছে। সরকারি কর্মচারীরা মাসের শেষে বেতন পাচ্ছে না। এডিসি এলাকায় স্কুল, কলেজে শিক্ষক স্বল্পতায় ভুগছে। এডিসি এলাকায় জনগণ বিভিন্ন সমস্যায় সম্মুখীন হয়েছেন। কিন্তু জনগনের প্রশ্নের উত্তর দিতে পারছেন না তিপরা মথার প্রাক্তন সুপ্রিমো প্রদ্যোত কিশোর দের্ববমণ। রাজবাড়ি দেখিয়ে জনগনকে ভুলানো আর সম্ভব নয়, বলে কটাক্ষ করেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, বিজেপি, আইপিএফটি ও তিপরা মথা প্রত্যেকে রাজ্যবাসীর অপরাধী। জাতি জনজাতিদের মধ্যে বিবাদ তৈরী করার ষড়যন্ত্র চলছে। এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে লড়াই ছাড়া কোনো গতি নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *