আগরতলা, ১০ জানুয়ারি : ত্রিপুরা বিধানসভায় শীতকালীন অধিবেশনের মেয়াদ বৃদ্ধির দাবিতে হৈচৈ করেছেন কংগ্রেস বিধায়ক গোপাল রায়। অধ্যক্ষের তাতে অসম্মতির কারণে তিনি এদিন ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। তবে, একা চিৎকার করে তিনি বিশেষ ছাপ ফেলতে পারেননি। ফলে, বিজনেস এডভাইজারি কমিটির(বিএসি) রিপোর্ট এদিন ধ্বনিভোটে গৃহীত হয়েছে।
শুক্রবার ত্রিপুরা বিধানসভায় বিরোধী দল সিপিএম এবং কংগ্রেস শীতকালীন অধিবেশনের মেয়াদ বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে। তাদের অভিযোগ, সময়ের অভাবে জনগণের স্বার্থে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো আলোচনার জন্য সময় পাওয়া যায়না। বিজনেস এডভাইজারি কমিটির রিপোর্ট বিধানসভায় পেশ হওয়ার সময় কংগ্রেসের বরিষ্ঠ বিধায়ক গোপাল চন্দ্র রায় অধ্যক্ষের কাছে অনুরোধ জানান, ১৩তম বিধানসভার ষষ্ঠ অধিবেশনে বেশি সময় আলোচনা করার জন্য বরাদ্দ করা হোক। তিনি বলেন, বর্তমান অধিবেশনে অন্তত দুটি অতিরিক্ত দিন যোগ করা হোক। তবে, তাঁর অনুরোধ গ্রহণ করা হয়নি।
এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বিদ্যুৎ মন্ত্রী রতন লাল নাথ বলেন, এই অধিবেশন সংক্ষিপ্ত রাখা হয়েছে কারণ বিএসি-র বৈঠকে সমস্ত দলের প্রতিনিধিরা একমত হয়েছিলেন, বাজেট অধিবেশন দীর্ঘ হবে। কারণ, মার্চে রাজ্যপালের ভাষণ এবং বাজেট একসাথে হলে আলোচনার জন্য বিশেষ সময় পাওয়া সম্ভব ছিল না। তাই, এখন এই অধিবেশন ডাকা হয়েছে। তিনি বিরোধী বিধায়কদের আশ্বস্ত করেন, বাজেট অধিবেশনে সমস্ত বিভাগের বিষয়ে আলোচনার জন্য যথেষ্ট সময় রাখা হবে।
এ বিষয়ে বিরোধী দলনেতা জিতেন্দ্র চৌধুরী বলেন, যদি সদস্যদের সমস্ত বিভাগের বিষয়ে আলোচনা করার সুযোগ না দেওয়া হয়, তাহলে সরকার নিজেই তার অর্জনগুলো তুলে ধরার সুযোগ হারাবে। তিনি আরও বলেন, “লোকসভা স্পিকার এবং রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বার্ষিক মিটিংয়ে ছোট রাজ্যগুলির জন্য বিধানসভা অধিবেশন দীর্ঘ হওয়া উচিত বলে সুপারিশ করেছেন। ত্রিপুরার মতো রাজ্যগুলিতে কমপক্ষে ৬০ দিনের অধিবেশন অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত।
এছাড়া, কংগ্রেস বিধায়ক গোপাল চন্দ্র রায় অভিযোগ করেন, ত্রিপুরার ইতিহাসে প্রথমবারের মতো গত বছর মাত্র তিন দিনের বাজেট অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ত্রিপুরা বিধানসভার ইতিহাসে এমন কোনো নজির ছিল না যেমনটা গত বাজেট অধিবেশনে ঘটেছিল। ত্রিপুরা বিধানসভায় কখনোই বাজেট অধিবেশন তিন দিনে শেষ হয়নি; এটি বন্ধ হওয়া উচিত এবং যথাযথ সময় বিধায়কদের জন্য বরাদ্দ করা উচিত,” রায় বলেন।
এদিন, তিনি অধ্যক্ষের কাছে বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনের মেয়াদ বাড়ানোর জন্য চাপ দিতে থাকেন। কিন্তু, অধ্যক্ষ তাঁর আবেদনে অসম্মতি জানিয়ে বিজনেস এডভাইজারি কমিটির রিপোর্ট পাশে উদ্যোগী হোন। তাতেই গোপাল বাবু ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। তাঁর বিক্ষোভের মাঝেই ধ্বনিভোটে ওই রিপোর্ট গৃহীত হয়েছে।