Irregularities will not be tolerated : অনিয়ম বরদাস্ত করা হবে না, সমস্ত প্রধান উপ-প্রধানদের কড়া বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৩ অক্টোবর৷৷ যেখানেই অনিয়ম ও গাফিলতি মিলবে, সেখানে কঠিন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে৷ সমস্ত প্রধান ও উপ প্রধানদের কড়া বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব৷ আজ ঊনকোটি জেলার ফটিকরায় এ ভারতীয় জনতা পার্টির উন্নয়ন যাত্রা সমাবেশে যোগ দেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব৷
তিনি বলেন,সমস্ত প্রকল্পের সুবিধা অন্তিম ব্যক্তি পর্যন্ত পৌঁছে দিতে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ৷ বর্তমান সরকার দায়িত্বভার গ্রহণ করার পর, প্রধান এবং উপপ্রধানদের জন্য পাঁচ হাজার পর্যন্ত সান্মানিক প্রদানের ব্যবস্থা করেছে৷ যে দায়িত্ব তাদের উপরে ন্যস্ত আছে, জনগণের স্বার্থে কতটা বাস্তবায়িত হয়েছে, তা তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে এক এক করে কাজের হিসাব নেওয়া হবে৷ যে কোনো দলের সমর্থকই হোক না কেন৷ প্রয়োজনে সেই ব্যক্তিকে বৈধ ভাবে অপসারিত করা হবে৷ তবুও, মানুষের কাছে সুযোগ পৌঁছে দিতে কোনো ধরণের অনিয়ম বরদাস্ত কড়া হবে না৷


তিনি বলেন, সমাজের অন্তিম ব্যক্তি পর্যন্ত সমস্ত সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার জন্য পঞ্চায়েত প্রধান ও উপ প্রধানদের এই দায়িত্ব ভার প্রদান করা হয়েছে, তাদের গাফিলতির কারণে যদি কোন ব্যক্তি বঞ্চিত হন, সেক্ষেত্রে কড়া ব্যবস্থা নেয়া হবে৷ সবাইকে ন্যায় প্রদান করাই হল অন্যতম মন্ত্র৷ তার পাশাপাশি, জল জীবন মিশনের মাধ্যমে প্রতিটি বাড়িতে ২০২২ এর ডিসেম্বরের মধ্যে পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে সরকার৷ দ্রুততার সঙ্গে এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে রিগ মেশিন ব্যবহার করে সর্বত্র কাজ চলছে৷ বিভিন্ন জায়গায় এই কাজে ও ইঞ্জিনিয়ারদের সামনে বাঁধা সৃষ্টি করা হচ্ছে৷


এদিন তাদেরকে সতর্ক করে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মানুষের কাছে জল পৌঁছে দেওয়ার কাজে যারাই বাঁধা দেওয়া চেষ্টা করবে, তাদেরকে ছাড়া হবে না৷ কড়া ব্যবস্থা গ্রহণ কড়া হবে৷ সে ক্ষেত্রে কোনো দল বিচার করা হবে না৷ প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে৷ নিজ নিজ এলাকায় এই প্রকল্প সঠিক বাস্তবায়নের বিধায়ক ও জনপ্রতিনিধিদের দায়িত্ব নিতে আহ্বান জানান তিনি৷ এদিনের দলীয় কর্মসূচিতে উপস্থিতি জনগণের চোখেমুখে ছিল মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি বিশ্বাস ও ভরসার ছাপ৷


মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে রাজ্যে অন্তিম ব্যক্তির সরকার প্রতিষ্ঠিত রয়েছে৷ কর্যকর্তারাই সংগঠনের মূল শক্তি৷ শক্তিশালী বুথ মানেই শক্তিশালী বিজেপি৷ বিনয়ের সাথে নিবিড় জনসংযোগ ও সদ ব্যবহারের দ্বারা জন আস্থা অর্জনের মাধ্যমে প্রতিটি বুথ জয় করার লক্ষ্য নিজেদের নিয়োজিত করতে হবে৷ বীর হওয়া ভালো, তবে বিনয়ী মানসিকতা থাকতে হবে৷ একটা সময়ে মানুষকে অবহেলা করেছে বামেরা৷ তার ফল ২০১৮ নির্বাচনে রাজ্যের মানুষ তাদেরকে দিয়েছে ৷ তিনি বলেন, রাজ্যের একজন মানুষ এমন থাকবেন না, যার বাড়িতে পাকা ঘর নেই৷ ঘর নেওয়ার লোক থাকবে না৷


সেই লক্ষ্যেই কাজ করছে সরকার৷ বর্তমান সরকারের সময়ে পিএম আবাস যোজনায় ১ লক্ষ ৮৬ হাজার ঘর মিলেছে৷ আরও দুই ধাপে ৭০ হাজার ও ৪০ হাজার ঘর মিলবে৷ পানীয় জল, সুশিক্ষা, সুস্বাস্থ্য ও নাগরিক পরিষেবা প্রদানে দলীয় সংকীর্ণতার উর্ধে উঠে জনগণের আস্থা অর্জনের দ্বারা ভারতীয় জনতা পার্টির সমস্ত আসনে জয় নিশ্চিত করাই লক্ষ্য৷ নাম না করে তৃণমূল প্রসঙ্গে বলেন, যারা উন্নয়নের স্বপ্ণ দেখিয়ে রাজ্যের মানুষকে বিব্রত করার চেষ্টা করছেন, সে প্রদেশের তুলনায় কোভিড ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়নের প্রশ্ণে ত্রিপুরা অনেকাংশেই এগিয়ে৷ টিকা নিতে মারপিট পর্যন্ত হয়৷


তারাই ত্রিপুরার মানুষদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন৷ বর্তমান সরকার স্বচ্ছতার সাথে অন্তিম ব্যক্তি পর্যন্ত সমস্ত সুযোগ পৌঁছে দিতে অঙ্গীকারবদ্ধ৷ মৃত্যুর পরেও কর্যকর্তাদের পাশে থাকে ভারতীয় জনতা পার্টি৷ রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে ভারতীয় জনতা পার্টির যেসব কর্যকর্তাদের প্রাণ উৎসর্গীত হয়েছে, তাদের পরিবারে ন্যায় পথে সরকারি কাজের ব্যবস্থা করা হয়েছে৷ বিগত সরকারের আন্তরিকতার ঘাটতির ফলে, বিভিন্ন সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন রাজ্যের মানুষ৷ জনগণের স্বার্থে উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড বাস্তবায়নের পথে কোনো ধরণের প্রতিবন্ধকতা প্রশ্রয় দেওয়া হবে না৷


দলীয় কর্মসূচিতে উপস্থিত বড় মাত্রায় জনগণ মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ণের জবাবে হাত তুলে জানায়, সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সুফল তারা পাচ্ছেন৷ এর জন্য কোনো ধরণের কমিশন বা চাঁদা দিতে হচ্ছে না৷ এদিনের উন্নয়ন যাত্রা সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন, মন্ত্রী রাম প্রসাদ পাল, মন্ত্রী ভগবান দাস, ফটিকরায় মণ্ডল সভাপতি নীলকান্ত সিনহা, বিধায়ক সুধাংশু দাস, জিলা পরিষদের সভাধিপতি অমলেন্দু দাশ প্রমুখ৷
এই দলীয় কর্মসূচিতে ৫৫৪ পরিবারের ১৭৩৩ জনকে দলীয় পতাকা হাতে, ভারতীয় জনতা পার্টিতে স্বাগত জানান তিনি৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *