Health infrastructure has been decentralized : কোভিড অতিমারীর সময়ে ত্রিপুরায় স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর বিকেন্দ্রীকরণ করা হয়েছে : মুখ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৮ অগাস্ট।।রাজ্যের পরিকাঠামোগত উন্নয়ন সহ সমস্ত অংশের নাগরিকদের সার্বিক কল্যাণে কাজ করছে ত্রিপুরা সরকার। কোভিড অতিমারীর সময়ে ত্রিপুরায়  স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর বিকেন্দ্রীকরণ করা হয়েছে। আজ পুরাতন আগরতলা ব্লকের নবনির্মিত ব্লক কার্যালয় ভবনের উদ্বোধন করে একথা বলেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব৷ তাঁর কথায়, ত্রিপুরায় সুচিন্তিত ব্যবস্থাপনা ও পরিকল্পনার মাধ্যমে গুণগত দিক বজায় রেখে সময়ের কাজ সময়ে সম্পন্ন করার উপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। সবার স্বাস্থ্য সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে পরিকাঠামো উন্নয়ন, অক্সিজেন প্ল্যান্ট, ভেন্টিলেটর, আইসিইউ সহ রাজ্যে স্বাস্থ্য পরিষেবার বিকেন্দ্রীকরণ করা হয়েছে। এর পাশাপাশি রাজ্যের উৎপাদিত কাঁঠাল ও আনারস অর্থনৈতিক স্বাবলম্বনের পথকে সুগম করছে।


এদিন তিনি বলেন, গুণগত শিক্ষার সম্প্রসারণে রাজ্যের ১০০টি সরকারি বিদ্যালয়কে সিবিএসই-র আওতায় আনার উদ্যোগ, ১৮টি একলব্য বিদ্যালয় স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ত্রিপুরা সরকার নাগরিকদের অভাব অভিযোগগুলিকে স্বচ্ছ ও দক্ষ প্রশাসনিক নীতির মাধ্যমে নিষ্পত্তির উদ্যোগ নিয়েছে। এই লক্ষ্যে ধলাই জেলায় পাইলট বেসিসে ১৯০৫ নম্বরটিকে মুখ্যমন্ত্রীর হেল্পলাইন নম্বর হিসেবে চালু করা হয়েছে। এই হেল্পলাইন নম্বরের মাধ্যমে নাগরিকগণ সরকারের বিভিন্ন কাজকর্ম সম্পর্কে পরামর্শ বা প্রতিক্রিয়া জানাতে পারবেন।
তাঁর দাবি, উন্নয়নের নিরিখে বিভিন্ন ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সাফল্যের জন্য ত্রিপুরা সমগ্র দেশে পরিচিতি পেয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন পরিকল্পনার ফলে রাজ্যের উন্নয়নের গতি ত্বরান্বিত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর হীরা মডেলের সঠিক বাস্তবায়নের মাধ্যমে হাইওয়ে, এক্সপ্রেস ট্রেন, দিল্লির সাথে সরাসরি বিমান পরিষেবার মাধ্যমে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা রাজ্যের উন্নয়নের গতিকে আরও বেগবান করছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সরকারের বিভিন্ন জনকল্যাণমুখী পরিকল্পনার সুযোগ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে ব্লকগুলির। বিগত দিনে সঠিক পরিকল্পনার অভাবে বিভিন্ন কাজ সম্পন্ন করতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছিলো।


তিনি বলেন, পুরাতন আগরতলা ব্লক কার্যালয় নির্মাণে আট বছর সময় লেগেছে। কিন্তু বর্তমানে মাত্র এক বছরের মধ্যেই লাইট হাউস প্রকল্পে রাজ্যে এক হাজার ফ্ল্যাট মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে। এখানেই কর্মপদ্ধতি ও দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্য। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে গুণগত দিক বজায় রেখে সময়ের কাজ সময়ে শেষ করার উপরে সরকার গুরুত্ব আরোপ করছে। কোনও ধরনের রাজনৈতিক রঙ বিচারের উর্ধ্বে উঠে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সহায়তা প্রকৃত সুবিধাভোগী পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। সবকা সাথ সবকা বিকাশের ভাবনায় উন্নয়নের নিরিখে বিভিন্ন সাফল্যের জন্য ত্রিপুরা আজ গোটা দেশে পরিচিত লাভ করেছে।


মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সর্বাঙ্গীন উন্নয়নের ভাবনায় গৃহীত বিভিন্ন পরিকল্পনার সুযোগ পাচ্ছেন রাজ্যের নাগরিকরা। উদ্ভাবনী ভাবনায়, বিকল্প কর্ম সংস্থানের মাধ্যমে রোজগারের নতুন দিগন্ত খুলে যাচ্ছে। বিভিন্ন অজুহাতে রাজ্য থেকে চাঁদা সংগ্রহ নয় বরং দিল্লি থেকে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে বরাদ্দ এনে রাজ্যের সর্বাঙ্গীন বিকাশই সরকারের লক্ষ্য। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ইতিমধ্যেই বেড়েছে কৃষকদের আয়। গ্রামে গ্রামে সি এস সি সেন্টার চালুর ফলে একদিকে যেমন যারা এখন কাজ করছে তাদের রোজগার তৈরি হয়েছে অন্যদিকে বিভিন্নভাবে নাগরিকগণও সহায়তা পাচ্ছেন। কর্মচারীদের পদোন্নতির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

তাঁর দাবি, স্পেশাল ইকোনমিক জোন, ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্ট রাজ্যের শিল্প সম্ভাবনাকে জাগিয়ে তুলছে। কোভিড পরিস্থিতিতেও সঠিক ব্যবস্থাপনার ফলে একজন ব্যক্তিকেও অনাহারে থাকতে হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন এই নবনির্মিত ব্লক কার্যালয় অন্তিম ব্যক্তি পর্যন্ত বিভিন্ন সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে বিশেষ ভূমিকা নেবে। মুখ্যমন্ত্রী এদিনের অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সুবিধাভোগীদের হাতে সেলাই মেশিন, স্বসহায়ক দলের প্রতিনিধিদের হাতে ঋণ মঞ্জুরের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েত ভিলেজ কমিটির জন্য ডাস্টবিন, কৃষকদের মধ্যে কৃষি কাজের সহায়ক সামগ্রী ও সোমা বর্মণের (দাস) হাতে অর্নামেন্টাল মৎস্য পালনের পরিকাঠামো তৈরির ওয়ার্ক অর্ডার তুলে দেন। পুরাতন আগরতলা ব্লক এলাকার অন্তর্গত একটি ফুট ব্রিজ নির্মাণ ও প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিষেবা এবং মানোন্নয়নের বিষয়টি সদর্থক দৃষ্টিভঙ্গিতে সরকার বিবেচনা করছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *