নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১২ অগাস্ট।। আগরতলা ইন্টিগ্রেটেড চেক পোস্টকে ঘিরে ত্রিপুরায় বাণিজ্যের অপার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশ ভারত থেকে পণ্য আমদানীর জন্য ত্রিপুরাকে মাধ্যম হিসেবে প্রাধান্য দিচ্ছে। তাতে, ত্রিপুরা থেকে রপ্তানি বাড়বে। সাথে বহুমুখী আয়ের পথও খুলে যাবে। স্বাভাবিকভাবেই অর্থনৈতিক দিক দিয়ে উপকৃত হবে ত্রিপুরা। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ডাকে ভারত থেকে ৪০০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানির মাধ্যমে আয়ে ত্রিপুরাও বিরাট অংশিদারিত্ব নেবে বলেই মনে করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে আগরতলা আইসিপির গুরুত্ব বাড়ল, তা অস্বীকার করার কোন সুযোগ নেই। কারণ, ইতিমধ্যে আরো রপ্তানিকারক যোগাযোগ শুরু করেছেন।
আগরতলা ল্যান্ড পোর্ট-র ম্যানেজার দেবাশীষ নন্দী বলেন, ত্রিপুরা থেকে বাংলাদেশে রপ্তানি বৃদ্ধির সাথে এ-রাজ্যের শ্রমিক, ট্রাক চালক সহ এজেন্সিগুলির আয় বৃদ্ধি হবে। শুধু তাই নয়, রপ্তানি বাণিজ্যের যুক্ত সমান্তরাল অর্থনীতির শ্রীবৃদ্ধি ঘটবে। তাঁর কথায়, ১৭ নভেম্বর ২০১৩ সালে আগরতলা ইন্টিগ্রেটেড চেক পোস্ট যাত্রা শুরু করেছিল। এরপর থেকে বাংলাদেশে প্রচুর পণ্য ত্রিপুরা থেকে রপ্তানি হয়েছে। কিন্ত, গত ৮ আগস্ট সবচেয়ে বড় চালান ত্রিপুরা থেকে বাংলাদেশে গেছে। তিনি বলেন, ওইদিন ৬৮টি ট্রাকে ১৩২০ মেট্রিক টন গম আগরতলা আইসিপি দিয়ে বাংলাদেশে রপ্তানি হয়েছে। এ সপ্তাহে দুইটি ট্রেনে আরও গম আসছে। সমস্ত গম বাংলাদেশে রপ্তানির জন্যই ত্রিপুরায় আনা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ত্রিপুরার রুট ব্যবহার করার জন্য বহুবার বাংলাদেশকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তারা বিভিন্ন সময়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছে। তাতে দেখা গেছে, ত্রিপুরার দিয়ে পণ্য পরিবহণে সময় কম লাগছে, সাথে খরচও কম হচ্ছে। তাঁর বক্তব্য, ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ট্রেনে ত্রিপুরায় পণ্য আসছে খুব সহজে। ত্রিপুরায় জিরানিয়া রেল স্টেশন থেকে ওই পণ্য ট্রাকে লোড করে বাংলাদেশ রপ্তানি করা হচ্ছে। তাঁর দাবি, আগরতলা আইসিপি থেকে ২০০ কিমি দুরত্বে বাংলাদেশের সমস্ত বড় শহর রয়েছে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা এবং সিলেট অঞ্চল মাত্র ২০০ কিমি পথ পাড়ি দিলেও পণ্য পৌছে যাচ্ছে। তাই, বাংলাদেশ ত্রিপুরা দিয়ে পণ্য পরিবহণে উত্সাহ দেখিয়েছে।
তাঁর কথায়, ইতিপূর্বে বেনাপোল-পেট্রাপোল আইসিপি দিয়ে বাংলাদেশ ভারত থেকে পণ্য আমদানি করেছে। কিন্ত, তাতে খরচও বেশি এবং সময় বেশি ব্যয় হচ্ছে। তাই, অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর আগরতলা আইসিপি দিয়ে পণ্য পরিবহণে সায় দিয়েছে বাংলাদেশ। তাতে উপকৃত হবে ত্রিপুরা। তাঁর দাবি, জিরানিয়া থেকে পণ্য রপ্তানির জন্য ত্রিপুরার ট্রাক চালকরা রোজগার পাবেন। তাছাড়া, পণ্য উঠা-নামার জন্য এরাজ্যের শ্রমিকরা কাজ পাবেন। পাশাপাশি, ওই পরিবহণ বাণিজ্যের সাথে যুক্ত অন্যান্য-রাও রোজগারের সুযোগ পাবেন।
তিনি বলেন, আপাতত আগরতলা আইসিপি দিয়ে বাংলাদেশে ৪০ ধরণের পণ্য রপ্তানির অনুমতি রয়েছে। কিন্ত, বাংলাদেশ সরকারের কাছে সমস্ত ধরনের পণ্য রপ্তানির অনুমতি দেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছে। তাঁর দাবি, খুব শীঘ্রই ভারত থেকে ত্রিপুরা দিয়ে বাংলাদেশ চাল এবং ডাল আমদানি করবে। কারণ, ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজন রপ্তানিকারক আমাদের সাথে যোগাযোগ শুরু করেছে। তাতে স্পষ্ট, আগামীদিনে ত্রিপুরা থেকে রপ্তানি বাণিজ্য অনেক বৃদ্ধি পাবে।