নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১১ আগস্ট।। স্বচ্ছ ত্রিপুরা গড়ার লক্ষ্যে স্বচ্ছ ভারত মিশন-গ্রামীণ প্রকল্প এক উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিচ্ছে। এই প্রকল্পে কঠিন ও তরল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং পূণঃব্যবহারের মাধ্যমে গ্রামীণ এলাকায় স্বচ্ছতার পাশাপাশি রোজগারের সুযোগও সৃষ্টি হবে। ত্রিপুরার গ্রামীণ এলাকায় ওডিএফ প্লাস গড়ার লক্ষ্যে আজ সচিবালয়ের ভিডিও কনফারেন্স হলে এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে স্বচ্ছ ভারত মিশন-গ্রামীণ প্রকল্পের দ্বিতীয় ফেজের উদ্বোধন করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। তাছাড়াও মুখ্যমন্ত্রী এদিন এই প্রকল্পে কঠিন ও তরল বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় যন্ত্রপাতি বিতরণের ও রাজ্যে ১,১৭৬টি ডাস্টবিন বসানোর কর্মসূচিরও সূচনা করেন।
তিনি বলেন, সারা ত্রিপুরায় স্বচ্ছ ভারত মিশন-গ্রামীণ প্রকল্পের দ্বিতীয় ফেজের প্রথম ধাপে রাজ্যের ৩৫০টি গ্রামের ৬০ হাজার পরিবারকে ডাস্টবিন প্রদানের জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে। একই সঙ্গে জনবহুল স্থানে ৬ হাজার ডাস্টবিন, ৭ হাজার ব্যক্তিকে কম্পোষ্ট কিট এবং ৭০০টি ট্রাইসাইকেল, ব্যাটারী চালিত যান প্রভৃতি দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, ২০১৪ সালে কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নেতৃত্বাধীন সরকার গঠিত হওয়ার পর দেশে যে সমস্ত প্রকল্প রূপায়িত হয়েছে তার মধ্যে স্বচ্ছ ভারত মিশন ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছে। তাঁর দাবি, কেন্দ্রীয় সরকারের জল জীবন মিশন এবং স্বচ্ছ ভারত মিশন একে অপরের পরিপূরক। দুটি প্রকল্পের সমন্বয়ের মাধ্যমে এই উদ্যোগ সার্বিকভাবে বাস্তবায়িত হবে। তিনি বলেন, কোন প্রকল্প মিশন মুডে রূপায়ণের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা স্থির করে সময়ের আগে কাজ সম্পন্ন করতে পারলেই মিশন কথাটির প্রকৃত প্রতিফলন ঘটে।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী জনসাধারণকে এই প্রকল্পে উৎসাহিত করতে একটি স্লোগান তৈরি করার উপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা রক্ষার্থে গ্রামীণ এলকায় প্রদানকৃত ডাস্টবিনগুলি নিয়মিত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা সহ সঠিক জায়গায় বর্জ্য ফেলার বিষয়ে সবাইকে সচেতন করার উপরও মুখ্যমন্ত্রী গুরুত্ব আরোপ করেন। গ্রাম পঞ্চায়েত বা ভিলেজ কমিটির দ্বারা গঠিত ভিলেজ সেনিটেশন কমিটিকে দায়িত্ব দেওয়ার কথাও তিনি উল্লেখ করেন। প্রয়োজনে এই কাজে লোক নিযুক্তির মাধ্যমে গ্রামীণ এলাকায় মানুষের রোজগারের সুযোগের সৃষ্টি করা যাবে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন। সাথে তিনি যোগ করেন, ত্রিপুরা সরকার বায়োগ্যাস প্রকল্পের সুফল প্রদানে বদ্ধপরিকর। এই প্রসঙ্গে তিনি ত্রিপুরা সরকার কর্তৃক রূপায়িত সেক্স সর্টেড সিমেনের মাধ্যমে স্ত্রী গাভীর সংখ্যা বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করেন। মুখ্যমন্ত্রী প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের সাথে সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে ভবিষ্যতে রাজ্যে বায়োগ্যাস প্রকল্পের সঠিক বাস্তবায়নের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
অনুষ্ঠানে উপমুখ্যমন্ত্রী জিষ্ণু দেববর্মা বলেন, স্বচ্ছ ভারত মিশন-গ্রামীণ প্রকল্পে দ্বিতীয় ফেজে গ্রামীণ এলাকায় বসবাসরত নাগরিকদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য ধারাবাহিক জনসচেতনতামূলক কর্মসূচি গ্রহণ করা প্রয়োজন। একটি আকর্ষনীয় ডিজাইন তৈরি করে এই প্রকল্পকে প্রচারের আলোয় নিয়ে যেতে হবে। কারণ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা ও রাখার অভ্যাস শুরু হয় সচেতনতার মাধ্যমে। এদিন উপমুখ্যমন্ত্রী বর্জ্য পৃথকীকরনের উপরও গুরুত্ব আরোপ করেছেন। তিনি বলেন, এই প্রকল্পে একটি গ্রামের পরিচ্ছন্নতা অন্য একটি গ্রামকে অনুপ্রানিত করতে পারে।
এদিকে পূর্ত দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে বলেন, স্বচ্ছ ভারত মিশন-গ্রামীণ প্রকল্পে দ্বিতীয় ফেজে কঠিন এবং তরল বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এ বছর রাজ্যের ৩৫০টি গ্রামে এই প্রকল্প রূপায়ণের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে।