Trinamool’s goal is to destabilize the state : রাজ্যকে অশান্ত করাই তৃণমূলিদের লক্ষ্য, সব হামলাই সাজানো, দেবাংশুর কথাবার্তায় খুলেছে মুখোশ

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৮ আগস্ট৷৷ ত্রিপুরায় তৃণমূল কর্মীদের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা সাজানো ছিল, অন্তত দেবাংশু ভট্টাচার্যর কথায় তা-ই মনে হচ্ছে৷ আজ রবিবার কোভিড বিধি লঙ্ঘনের দায়ে পুলিশ দেবাংশু সহ ১৪ জন তৃণমূল কর্মীকে আটক করেছে৷ শুধু তা-ই নয়, গতকাল তৃণমূলের যুবনেত্রী জয়া দত্ত জনৈক বিজেপি কর্মীর বাইক লাঠি দিয়ে ভেঙে চুরমার করার ঘটনায় স্পষ্ট, ত্রিপুরায় অশান্তি সৃষ্টি করাই তাঁদের একমাত্র লক্ষ্য৷ কারণ আজ হাসপাতালে দেবাংশুর দাবি, গতকাল আক্রান্ত সুদীপ রাহা এখন পর্যন্ত চিকিৎসা পায়নি৷ অথচ, গতকাল ফেসবুক লাইভে সুদীপ সাফ জানিয়েছেন, ত্রিপুরায় সরকারি হাসপাতালে তিনি চিকিৎসা নেবেন না৷ তাছাড়া, মাথায় আঘাত লাগা সত্ত্বেও ক্যামেরার সামনে সুদীপবাবু যেভাবে সিআরপিএফ জওয়ান এবং পুলিশের দিকে তেড়ে গিয়েছেন, তাতে মনে হয়নি তিনি গুরুতর আহত৷ এ-বিষয়ে বিজেপি মুখপাত্র নবেন্দু ভট্টাচার্যর কটাক্ষ, হামলার রাজনীতিতে বিশ্বাসী সিপিএমের দোসর ত্রিপুরায় অশান্তির জন্য যাবতীয় ষড়যন্ত্র করছে তৃণমূল কংগ্রেস৷


গতকাল ধলাই জেলার আমবাসা বেতবাগান এলাকায় তৃণমূল কর্মীদের গাড়িতে হামলা হয়েছে বলে তাঁরা অভিযোগ করেছেন৷ গাড়ির কাচ ভেঙে ইটের টুকরোয় যুব তৃণমূল নেতা সুদীপ রাহার মাথা ফেটেছে বলে দেবাংশু ভট্টাচার্য অভিযোগ করেছিলেন৷ অথচ কাল তৃণমূল কর্মী সহ পুলিশ একাধিকবার সুদীপকে হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন৷ কিন্তু তিনি চিকিৎসা নেবেন না বলে সাফ জানান৷ দেবাংশুর ফেসবুক লাইভ চলাকালীন সুদীপ সাফ জানিয়েছেন, ত্রিপুরায় সরকারি হাসপাতালে তিনি চিকিৎসা নেবেন না৷ অথচ কেন চিকিৎসা নেবেন না তার কারণ ব্যাখ্যা করেননি তিনি৷ উল্টে তাঁকে একাধিকবার মারমুখী হতে দেখা গিয়েছে৷ তিনি ক্যামেরার সামনেই উত্তেজিত হয়ে সিআরপিএফ এবং পুলিশ কর্মীদের দিকে তেড়ে গিয়েছেন৷ শুধু তা-ই নয়, গালিগালাজও করেছেন৷ নিরাপত্তা রক্ষীরা সেখানে প্রচণ্ড ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছেন৷ কারণ, তিনি পুলিশ ও সিআরপিএফ জওয়ানদের নানাভাবে উস্কানি দিয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করতে চাইছিলেন, তাঁদের ফেসবুক লাইভের ভিডিও দেখে এমনটাই মনে হয়েছে৷


অভিযোগ উঠেছে, দুষৃকতকারীদের হামলায় যুব তৃণমূল নেত্রী জয়া দত্ত আহত হয়েছেন৷ অথচ, তাঁরা গতকাল এতটাই মারমুখী হয়ে উঠেছিলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ার গ্যাস ছুঁড়তে বাধ্য হয়েছে৷ গতকাল যুব তৃণমূল নেত্রী জয়া দত্তের হিংস্রতা প্রকাশ্যে ধরা পড়েছে৷ কারণ, তিনি জনৈক বিজেপি কর্মীর বাইক লাঠি দিয়ে ভেঙে চুরমার করে দিয়েছেন৷ তৃণমূল কর্মীদের রোষের মুখে পড়ে ওই বিজেপি কর্মী রাস্তায় বাইক ফেলে পালিয়ে প্রাণ বাঁচিয়েছিলেন৷ কিন্তু তার বাইক রক্ষা পায়নি৷ জয়া দত্তের বাইক ভাংচুরের ভিডিও ভাইরাল হতেই ত্রিপুরা জুড়ে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে৷


এদিকে, আজ সকালে খোয়াই জেলা হাসপাতালে দেবাংশু সহ ১৪ জন তৃণমূল কর্মীকে গ্রেফতারের পর শারীরিক পরীক্ষার জন্য নিয়ে গেছে পুলিশ৷ সেখানে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দেবাংশু বলেন, কোভিড বিধি লঙ্ঘনের দায়ে আমাদের গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে৷ সাথে তিনি যোগ করেন, আমাদের মধ্যে সুদীপ রাহা আক্রান্ত হয়েছেন৷ তাঁর মাথা ফেটে গিয়েছে৷ কিন্তু গতকাল দুপুর আড়াইটায় তাঁর মাথা ফাটলেও এখন পর্যন্ত তাকে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হয়নি৷ অথচ, সুদীপের শরীরে কোথাও মাথা ফাটার ফলে রক্তের ছাপ চোখে পড়েনি৷ এমন-কি গতকাল বার বারই দেখা গেছে সুদীপের মাথার উপরের অংশে কাপড় ভিজিয়ে লাগানো হচ্ছিল৷ কিন্তু আজ সকালে দেখা যাচ্ছে তাঁর মাথার অন্যদিকে ব্যান্ডেজ বাঁধা৷ তাতে স্বাভাবিকভাবেই সন্দেহ দেখা দিয়েছে, আদৌ তিনি মাথায় তেমন আঘাত পেয়েছেন, না সবই সাজানো৷

এ-বিষয়ে বিজেপি মুখপাত্র নবেন্দু ভট্টাচার্য বলেন, আমরা হামলার রাজনীতিতে বিশ্বাস রাখি না৷ সিপিএমের দোসর তৃণমূল কংগ্রেস হামলার রাজনীতিতে বিশ্বাস রাখে৷ তাঁরা সিপিএমের কাছ থেকে সেটা রপ্ত করেছে৷ পশ্চিমবঙ্গে দমন-পীড়নের সাহায্যে শাসন কায়েম রেখেছে তারা৷ তাঁর দাবি, ত্রিপুরায় অশান্তি সৃষ্টির উদ্দেশ্যে একাংশ পরিযায়ী নেতা-নেত্রী লাগাতার চেষ্টা চালিয়েছেন৷ তাঁরাই রাজ্যের শান্তির পরিবেশ অশান্ত করার ষড়যন্ত্র করছেন৷ তবে, তাঁদের সমস্ত চক্রান্ত শক্ত হাতে মোকাবিলা করবে বিজেপি৷ কারণ, ত্রিপুরার মানুষ বিজেপির পাশে রয়েছেন, দাবি করেন তিনি৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *