Abhishek’s eyes lit up and he threatened : থানায় ঢুকে অভিষেকের চোখ রাঙানি, দেখে নেয়ার হুমকি

নিজস্ব প্রতিনিধি, খোয়াই/আগরতলা, ৮ আগস্ট৷৷ তৃণমল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে দলের অন্যান্য নেতা ও কর্মীরা রীতিমতো খোয়াই থানা এলাকাকে উত্তপ্ত করে তুলেছে রবিবার৷ রাজ্যে অবস্থানরত দলের কয়েকজন নেতা নেত্রীকে কোভিড বিধি লঙ্ঘন করার অভিযোগে খোয়াই থানার পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল৷ তারই প্রতিবাদ জানাতে থানায় গিয়ে পুলিশকে রীতিমতো চোখ রাঙানি অভিষেকের৷ উচ্চ বাচ্যের পাশাপাশি দেড় বছর পর দেখে নেয়ার হুমকিও দিলেন পুলিশ আধিকারিকদের৷ যদিও পরে পুলিশ গ্রেপ্তারকৃত চৌদ্দ জনকে আদালতে সোপর্দ করে এবং পরে আদালত পঞ্চাশ হাজার টাকার বন্ডে জরিমানা মঞ্জুর করেছে৷


ত্রিপুরায় এসেই সোজা খোয়াই চলে গেলেন তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়৷ সেখানে তাঁর রুদ্ররূপ দেখলেন থানায় বসা পুলিশ কর্তারা৷ খোয়াই থানায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, দোলা সেন, ব্রাত্য বসু, কুণাল ঘোষ এবং জয়া দত্তরা টেবিল চাপড়ে পুলিশকে শাসিয়েছেন৷ তাঁদের সাফ কথা, মামলা প্রত্যাহার করে থানা থেকেই তৃণমূলের কর্মীদের ছেড়ে দিতে হবে৷


কোভিড বিধি লঙ্ঘনের দায়ে আজ পুলিশ দেবাংশু-জয়া সহ ১৪ জন তৃণমূল কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ৷ আজ কলকাতা থেকে ছুটে এসেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব৷ আগরতলায় এসেই অভিষেকের নেতৃত্বে তৃণমূলের নেতারা খোয়াই ছুটে যান৷ খোয়াই থানায় গিয়ে তাঁরা পুলিশের কাছে মামলা প্রত্যাহার এবং তৃণমূল কর্মীদের ছেড়ে দেওয়ার দাবি জানান তাঁরা৷
এদিন অভিষেক থেকে শুরু করে দোলা সেন, কুণাল ঘোষ, জয়া দত্ত প্রত্যেকেই টেবিল চাপড়ে পুলিশকে হুমকি দিয়েছেন৷ শুধু তাই নয়, তাঁরা পুলিশকে শাসিয়েছেন৷ থানায় উপস্থিত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাজীব সেনগুপ্ত তাঁদের বোঝানোর চেষ্টা করেছেন৷ কিন্ত, তাঁরা কিছুতেই শান্ত হতে রাজি নন৷ বরং, তাঁদের হুশিয়ারীতে থানা চত্বর আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠে৷ থানায় ঢুকে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের আচরণ ত্রিপুরার সংসৃকতির সাথে মিলছে না বলে দাবি বিজেপির৷


ত্রিপুরা কারোর পৈত্রিক সম্পত্তি নয়৷ খোয়াই থানা থেকে বেরিয়ে সুর এভাবেই চড়ালেন তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়৷ আজ তিনি কলকাতা ফিরে গেছেন৷ ত্রিপুরায় দলীয় কর্মীদের আক্রান্তের ঘটনায় সকালেই আগরতলায় এসেছিলেন৷ ১৪ জন তৃণমূল কর্মী গ্রেফতার হওয়ায় তিনি সদলবলে খোয়াই থানায় যান৷ খোয়াই থানায় সমস্ত রকমের চাপ তৈরী করেও কর্মীদের ব্যর্থ হন তিনি৷ অবশেষে আদালত থেকে জামিনে তাদের ছাড়া হয়েছে৷ এদিন তিনি দেবাংশু ভট্টাচার্য, জয়া দত্ত এবং সুদীপ রাহাকে সঙ্গে নিয়ে কলকাতায় ফিরে গেছেন৷ তৃণমূলের দাবি, তাঁরা গুরুতর আহত৷ উন্নত চিকিতার জন্য তাঁদের কলকাতা নিয়ে যাওয়া হচ্ছে৷ কিন্ত প্রশ্ণ উঠেছে, আজ খোয়াই থানায় জয়া দত্ত-রা যেভাবে পুলিশ আধিকারিকদের শাসিয়েছেন, তাতে তাঁদের গুরুতর অসুস্থ হওয়ার বিষয়টি কিছুটা সন্দেহ তৈরী করেছে৷


আজ সন্ধ্যায় থানা থেকে বেরিয়ে অভিষেক দাবি করেন, ত্রিপুরায় গণতন্ত্র ভূন্ট্রিত৷ বিরোধীদের উপর আইন প্রাযুজ্য হচ্ছে, অথচ বিজেপি কর্মী সমর্থকরা সমস্ত আইন লঙ্ঘন করে অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছেন৷ তিনি বলেন, কোভিড বিধি লঙ্ঘনের দায়ে আজ ভোরে ১৪ জন তৃণমূল কর্মীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে৷ অথচ, থানার বাইরে কয়েকশ বিজেপি জড়ো হয়েছেন, তাতে কোভিড বিধি লঙ্ঘন হচ্ছে না৷ তিনি ত্রিপুরা পুলিশের বিরুদ্ধে দ্বিচারিতার অভিযোগ এনে বলেন, ত্রিপুরায় গণতন্ত্র ফেরাতে তৃণমূল সর্ব শক্তি দিয়ে লড়বে৷ তিনি সুর চড়িয়ে বলেন, ত্রিপুরা ভারতবর্ষ থেকে আলাদা নয়৷ তাই, আইন সবার জন্য প্রযুজ্য৷ তাঁর হুশিয়ারী, ত্রিপুরা বিজেপির পৈত্রিক সম্পত্তি নয়৷ তাই, দ্বিচারিতা মেনে নেবে না তৃণমূল৷


তাঁর দাবি, বিপ্লব দেবের শেষের শুরু হয়ে গেছে৷ কারণ, বিজেপিকে কিভাবে হারাতে হয় তৃণমূল তা ভালই জানে৷ তিনি বলেন, আক্রান্তদের পুলিশ গ্রেফতার করছে এবং আক্রমণকারীরা অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে৷ তিনি জানান, পরিস্থিতি কোন পর্যায়ে গিয়ে ঠেকেছে, আইনজীবীদের গাড়ি ভাংচুর হচ্ছে৷ তৃণমূল নেতা সুবল ভৌমিকের গাড়ি ভাংচুর করা হয়েছে৷ তিনি বলেন, পুলিশকে দায়ী করে লাভ নেই, কারণ তাঁরা সরকারের নির্দেশে কাজ করছে৷ তবে, তৃণমূলকে যত আক্রমণ করা হবে, লড়াই ততই তেজি হবে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *