নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৩ অগাস্ট।। অলিক কল্পনা। তৃণমূলের ত্রিপুরায় ক্ষমতা দখলের দাবিকে এভাবেই বিদ্রুপ করলেন বিজেপি বিধায়ক রতন চক্রবর্তী। তাঁর কথায়, ত্রিপুরায় তিন বছরের উন্নয়ন তৃণমূলের চোখে ঠেকছে না। কারণ, তাঁরা এখন ত্রিপুরায় সরকার গঠনে নীতি আদর্শ বিসর্জন দিয়ে বামেদের সাথেও ঘর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
গতকাল তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ত্রিপুরা সফরে এসে বিজেপি জোট সরকারকে গালমন্দ করে গেছেন। তারই জবাব আজ দিয়েছে বিজেপি। আজ সাংবাদিক সম্মেলনে বিধায়ক রতন চক্রবর্তী দাবি করেন, ত্রিপুরায় গত তিন বছরে ধারণাতীত উন্নয়ন হয়েছে। বামেদের ফেলে যাওয়া ঋণ পরিশোধ শুধু নয়, তাঁদের পাপের বোঝাও বইতে হচ্ছে আমাদের।
তাঁর কথায়, বামেদের ভুলে আদালতের রায়ে ১০৩২৩ জন শিক্ষকের চাকুরী বাতিল হয়েছে। অথচ, তার দায়ভার বিজেপি জোট সরকারকে বহন করতে হচ্ছে। আশ্চর্য্যের বিষয় হল, অভিষেকবাবু না জেনে ওই চাকুরী বাতিলের দায় আমাদের ঘাড়ে চাপিয়েছেন। তিনি বলেন, বামেদের পাপের বোঝা বইতে গিয়ে বিজেপি জোট সরকার ওই চাকুরিচ্যুত শিক্ষকদের জন্য চাকুরীর ব্যবস্থা করেছে। যাঁরা চাকুরীর পরীক্ষায় টিকবেন না, তাঁদের জন্যও বিকল্প ব্যবস্থা করবে ত্রিপুরা সরকার।
এদিন তিনি জোর গলায় বলেন, ত্রিপুরায় ক্ষমতার পরিবর্তনের সবচেয়ে বড় সাফল্য হল তিন বছরে একটি রাজনৈতিক খুন হয়নি। অথচ পশ্চিমবঙ্গে যে তৃণমূল বদলা নয় বদলের শ্লোগান দিয়েছিল আজ তাঁদের রাজত্বে হাজার মানুষ খুন হচ্ছেন। লক্ষাধিক মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। তাঁরা ত্রিপুরায় গণতন্ত্র নিয়ে সওয়াল করছেন, কটাক্ষ করেন তিনি।
রতন বাবুর দাবি, ত্রিপুরার কাঠাল, আনারস আজ বিদেশে পাড়ি দিয়েছে। আগর গাছ ত্রিপুরার বিকল্প অর্থনীতি হচ্ছে। অথচ, তৃণমূলের এসব চোখে ঠেকছে না। কারণ, সিপিএমের সাথে গলা মেলাতে চাইছে। তাঁর মতে, ঢাল তলোয়ারহীন সংগঠন নিয়ে বিজেপির সাথে লড়াইয়ের জন্য সিপিএম কিংবা কংগ্রেসের সমর্থন ছাড়া টিকে থাকা সম্বব হবে না। তবে, বামেদের এবং কংগ্রেসের সমর্থন নিয়েই ত্রিপুরায় সরকার গঠন অলিক কল্পনা ছাড়া আর কিছুই নয়, বিদ্রুপ করে বলেন তিনি।
তাঁর দাবি, তৃণমূলের নেতৃত্ব মুর্খের স্বর্গে বাস করছেন। কারণ, ত্রিপুরায় বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ময়দানে নামা রাজনৈতিক মূর্খামি ছাড়া কিছুই নয়। তাঁর কটাক্ষ, স্বপ্ন দেখতে আমরা বাধা দিতে চাই না। তাই, তৃণমূলের সকলকে স্বাগত জানাচ্ছি। ত্রিপুরায় আসুন এবং অতিথি দেব ভব: নমুনা দেখে যান। তবে, উন্নয়নের ধারা আটকানোর চেষ্টা করবেন না, হুশিয়ারী দিয়ে বলেন তিনি।