রেকর্ড টিকাকরণ রাজ্যে, একদিনে করোনার টিকা পেলেন ১৪০৮৪৫ জন

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২১ জুন৷৷ একদিনে রেকর্ড সংখ্যক টিকাকরণ হয়েছে ত্রিপুরায়৷ সারা ত্রিপুরায় আজ ১ লক্ষ ৪০ হাজার ৮৪৫ জনকে করোনার টিকা দেওয়া হয়েছে৷ তাঁদের মধ্যে ১৮ থেকে ৪৪ বছর বয়সী রয়েছেন ১ লক্ষ ৩৪ হাজার ৪৫১ জন৷ এদিকে, উত্তর ত্রিপুরা জেলার যুবরাজনগর ব্লকের অন্তর্গত মঙ্গলখালি গ্রাম পঞ্চায়েত এবং সিপাহীজলা জেলার মোহনভোগ ব্লকের পূর্ণ চণ্ডীগড় গ্রাম পঞ্চায়েতে পুরোপুরি টিকাকরণ সম্পন্ন হয়েছে৷ অন্যদিকে, জরুরি ভিত্তিতে কলকাতা থেকে আজ ২ লক্ষ করোনার টিকা এসেছে ত্রিপুরায়৷


করোনার টিকাকরণে ২১ ও ২২ জুন বিশেষ অভিযান চালিয়েছে ত্রিপুরা সরকার৷ তারই অঙ্গ হিসেবে আজ যুদ্ধকালীন ততরতায় করোনার টিকা দেওয়া হয়েছে৷ তাতে, আজ রেকর্ড সংখ্যক টিকাকরণ সম্ভব হয়েছে৷ জেলাভিত্তিক টিকাকরণে আজ পশ্চিম ত্রিপুরা জেলায় সবচেয়ে বেশি টিকাকরণ হয়েছে৷ জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের রিপোর্ট অনুযায়ী, পশ্চিম ত্রিপুরা জেলায় ৩০৩৫৩ জন, উত্তর ত্রিপুরা জেলায় ২৩১৩৩ জন, সিপাহীজলা জেলায় ২২১০৯ জন, দক্ষিন ত্রিপুরা জেলায় ২১৬৬০ জন, ধলাই জেলায় ১২৬৮৭ জন, ঊনকোটি জেলায় ১১৫৮৩ জন, গোমতি জেলায় ৯৯১৫ জন এবং খোয়াই জেলায় ৯৪০৫ জনকে টিকা দেওয়া সম্ভব হয়েছে৷
আজকের ওই রেকর্ড সংখ্যক টিকাকরণে ত্রিপুরায় সর্বমোট ২০ লক্ষ ৮৬ হাজার ৩২৮ জনের টিকাকরণ হয়েছে৷ তাতে স্বাস্থ্য কর্মী ৯২৫০৪ জন, সামনের সারির কর্মী ১৪৯৯১৯ জন, ১৮ থেকে ৪৪ বছর বয়সী ৪৪৩৪৬৭ জন, ৪৫ থেকে ৫৯ বছর বয়সী ৮৭৫৬১৭ জন এবং ৬০ ঊর্দ ৫২৪৮২১ জন এখন পর্যন্ত করোনার টিকা পেয়েছেন৷ তাঁদের মধ্যে টিকার প্রথম ডোজ পেয়েছেন ১৫৪১৪২১ জন এবং দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন ৫৪৪৪০৭ জন৷


এদিকে আজ জরুরি ভিত্তিতে কলকাতা থেকে ২ লক্ষ কোভিশিল্ডের টিকা আগরতলায় এসে পৌচেছে৷ ফলে এখন ত্রিপুরায় টিকা মজুত রয়েছে ৩ লক্ষ ৯৩ হাজার ডোজ৷ আগামীকালও টিকাকরণে বিশেষ অভিযান চলবে৷ মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব জানিয়েছেন, উত্তর ত্রিপুরা জেলার যুবরাজনগর ব্লকের অন্তর্গত মঙ্গলখালি গ্রাম পঞ্চায়েত এবং সিপাহীজলা জেলার মোহনভোগ ব্লকের পূর্ণ চণ্ডীগড় গ্রাম পঞ্চায়েতে পুরোপুরি টিকাকরণ সম্পন্ন হয়েছে৷ আগামী দিনগুলিতে আমরা সমগ্র ত্রিপুরায় দ্রুততার সহিত টিকা দেওয়ার লক্ষ্যে পথ চলছি৷ ৪৫ ঊর্ধদের মতো সার্বিক টিকাকরণেও দেশের শীর্ষে যাবে ত্রিপুরা৷ এই লক্ষ্যেই কাজ করছে সরকার, দৃঢ়তার সাথে বলেন তিনি৷
এদিকে, অনেকটাই কমেছে করোনায় দৈনিক সংক্রমণ৷ নমুনা পরীক্ষা কম হয়েছে ঠিকই৷ কিন্তু অনেকদিন বাদে দৈনিক সংক্রমণ দুশোর গণ্ডি পার করতে পারেনি৷ থেমে গিয়েছে ১৭৫-এ৷ তেমনি সুস্থ হয়েছেন ৪৪৯ জন৷ তবে, মৃত্যু মিছিল আরও দীর্ঘায়িত করে ২৪ ঘণ্টায় চারজন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন৷
স্বাস্থ্য দফতরের মিডিয়া বুলেটিন অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় আরটি-পিসিআরে ৯১১ এবং রেপিড অ্যান্টিজেনের মাধ্যমে ৪২৮৮ জন মোট ৫১৯৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে৷ তাতে, আরটি-পিসিআর ২০ জন এবং রেপিড অ্যান্টিজেনে ১৫৫ জনের দেহে করোনার সংক্রমণ মিলেছে৷ সব মিলিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় মোট ১৭৫ জন নতুন করোনা সংক্রামিতের খোঁজ পাওয়া গেছে৷ সংক্রমণের হার ৩.৩৭ শতাংশ৷
তবে, স্বস্তির খবরও রয়েছে৷ গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৪৯ জন করোনা সংক্রমণ থেকে মুক্তি পেয়েছেন৷ তাতে, বর্তমানে করোনা আক্রান্ত সক্রিয় রোগী রয়েছেন ৩৪৮৯ জন৷ প্রসঙ্গত, ত্রিপুরায় এখন পর্যন্ত ৬২৩২৪ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন৷ তাদের মধ্যে ৫৮১২০ জন করোনা সংক্রমণ থেকে মুক্তি পেয়ে সুস্থ হয়েছেন৷ বর্তমানে ত্রিপুরায় করোনা আক্রান্তের হার হয়েছে ৫.১৪ শতাংশ৷ তেমনি, সুস্থতার হার বেড়ে হয়েছে ৯৩.৩৫ শতাংশ৷ এদিকে মৃতের হার হয়েছে ১.০৫ শতাংশ৷ নতুন করে ৪ জনের মৃত্যুর ফলে এখন পর্যন্ত ত্রিপুরায় ৬৫১ জন করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন৷
স্বাস্থ্য দফতরের মিডিয়া বুলেটিনে আরও জানা গিয়েছে, ক্রমাগত পশ্চিম জেলা সংক্রমণে শীর্ষে থাকছে৷ গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে পশ্চিম জেলায় ৫৩ জন, দক্ষিণ জেলায় ২০ জন, গোমতি জেলায় ২১ জন, ধলাই জেলায় ২৯ জন, সিপাহিজলা জেলায় ১৪ জন, উত্তর ত্রিপুরা জেলায় ১৩ জন, উনকোটি জেলায় ১২ জন এবং খোয়াই জেলায় ১৩ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *