নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৪ জুন৷৷ মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব আজ সচিবালয়ে মোহনভোগ ব্লকের বিভিন্ন স্বসহায়ক দলের তৈরি বেল ও আনারসের জ্যাম এবং সরবতের বাজারজাতকরণের সূচনা করলেন৷ মুখ্যমন্ত্রীর হাতে স্বসহায়ক দলগুলির উৎপাদিত পণ্যগুলি তুলে দেন প্রস্তুতকারক স্বসহায়ক দলের সদস্যরা৷ সঠিক গুণমান বজায় রেখে দীর্ঘসময় ব্যবহারযোগ্য স্বাস্থ্যকর পদ্ধতিতে এই পণ্যগুলি প্রস্তুত করার পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী৷
রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সহায়তায় মোহনভোগ ব্লকের স্বসহায়ক দলগুলি রোজগারের দিশা খঁজে পেয়েছেন৷ প্রধানমন্ত্রী ক্ষুদ্র খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ উদ্যোগ (পি এম এফ এম ই) প্রকল্পে এই স্বসহায়ক দলের সদস্যরা সম্পর্ণ অর্গাণিক পদ্ধতিতে আনারস ও বেল থেকে জ্যাম এবং সরবত তৈরি করছেন৷ উল্লেখ্য, রাজ্যে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত ক’ষি ও উদ্যানজাত ফসল ও ফলকে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে স্বসহায়ক দলের মহিলাদের আত্মনির্ভর করে তুলতে সরকার থেকে উৎসাহিত করা হচ্ছে৷ এতে কৃষকরা যেমন সঠিক মূল্য পাবেন তেমনি গ্রামীণ অর্থনীতিকেও চাঙ্গা করবে৷ত্রিপুরা লাইভলিহুড মিশনের মাধ্যমে উদ্যান পালন ও ভূমি সংরক্ষণ দপ্তরের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে আধুনিক ও স্বাস্থ্যকর উপায়ে বেল থেকে এই পণ্যগুলি তৈরি করছেন রীতা দাস সরকার ও রত্নারানী দাস এবং স্থানীয় ক্যুইন আনারস থেকে সম্পর্ণ ঘরোয়া উপায়ে জ্যাম এবং সরবত তৈরি করছেন মোহনভোগ ব্লকের পূর্ণিমা নন্দী ও কল্পনা নন্দী৷ এই পণ্যগুলি উৎপাদনে কোন ধরণের কৃত্রিম রং বা ফ্ল্যাভার মেশানো হয়নি৷
স্থানীয়ভাবে সংগ্রহ করা বেল এবং আনারস থেকেই এইগুলি উৎপাদন করা হচ্ছে৷ বাড়িতে বসেই ঘরোয়া উপায়ে উৎপাদিত এই পণ্যগুলি থেকে প্রতি বোতলে লাভ হবে প্রায় ২২ টাকা৷ প্রধানমন্ত্রী ক্ষুদ্র খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ উদ্যোগ প্রকল্পের সহায়তায় ব্যক্তি প্রতি ৪০ হাজার টাকা ঋণ মঞ্জুরের পাশাপাশি সিপাহীজলা জেলা প্রশাসন থেকে স্বসহায়ক দলগুলিকে প্রয়োজনীয় লাইসেন্স প্রদানে সহায়তা করা হয়েছে৷
মুখ্যমন্ত্রীর হাতে এদিন সূর্যডিম আম তুলে দেন মোহনভোগ ব্লকের স্বউদ্যোগী সিদ্দিক মিঞা৷ এই ধরণের আমের চাহিদা যেমন প্রচুর তেমনি দামও বেশি৷ আর্থিকভাবেও লাভজনক৷ তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে জানান, প্রাথমিকভাবে নিজের উদ্যোগে শুরু করলেও উদ্যান পালন ও ভূমি সংরক্ষণ দপ্তরের সহায়তায় আগামী বছর থেকে বাণিজ্যিকভাবে সূর্যডিম আম উৎপাদন শুরুর উদ্যোগ নেবেন৷ মোহনভোগ ব্লকেরই বাবুলাল নন্দী, খাদি ও গ্রামোদ্যোগ পর্ষদ এবং গ্রামীণ ব্যাঙ্কের সহায়তায় বাণিজ্যিক মৌমাছি পালন করে এখন একজন সফল উদ্যোগী৷ প্রায় ১,২০০ টাকা কেজি দরে মধু বিক্রি করে তিনি এখন স্বাবলম্বী৷ মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবের হাতে আজ তিনি মধু তুলে দেন৷ তিনি সরকারের সহায়তায় আগামীদিনে আরও বড় পরিসরে বাণিজ্যিকভাবে মৌমাছি পালনের পরিকল্পনার কথাও মুখ্যমন্ত্রীকে জানান৷ আত্মনির্ভর ত্রিপুরা গড়ার লক্ষ্যে দিশা দেখাচ্ছে মোহনভোগ ব্লকের অন্তর্গত এই স্বসহায়ক দলের উদ্যোক্তারা৷