চড়িলাম, ১১ জুন : বিশ্রামগঞ্জের বড়জলা এলাকায় আত্মহত্যা করেছে এক যুবক। আত্মঘাতী যুবকের নাম রতন দেবনাথ। স্ত্রীর মৃত্যু যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে শেষ পর্যন্ত সে নিজে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে বলে জানা গেছে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
ফাঁসিতে আত্মহত্যা করেছে এক যুবক। ঘটনা চড়িলাম আর ডি ব্লকের অন্তর্গত বিশ্রামগঞ্জ থানার অধীন বড়জলা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। যুবকের নাম কৃষ্ণ দেবনাথ । পিতার নাম রতন দেবনাথ। কৃষ্ণ পেশায় গাড়িচালক ছিল। এক বছর আগে মধুমেহ রোগে তার স্ত্রী আইজিএম হাসপাতালে মারা গিয়েছে। সন্তানাদি নেই কৃষ্ণের। নিজের জীবনসঙ্গিনীকে হারিয়ে আর বিয়ে করেনি। গতকাল সন্ধ্যা বেলায়ও বাড়ির সবার সঙ্গে হেসে খেলেছ সে। নিজের ভাতিজিকে সন্ধ্যার সময় পড়াশোনা দেখিয়ে এরপর বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। আর বাড়িতে ফেরেনি। বাড়ির অন্যান্যরা ভেবেছিল হয়তো কোনো বন্ধুর বাড়ি গিয়েছে, আবার আসবে। তাইতো এতোটা গুরুত্ব দেয়নি পরিবারের লোকেরা। সকালবেলা বাড়ির পার্শ্ববর্তী রাবার বাগানে ঝুলে থাকতে দেখা যায় কৃষ্ণ দেবনাথকে। প্রতিবেশী একজন রাবার বাগানের লেটেক্স সংগ্রহ করতে গিয়ে দেখে কৃষ্ণ ঝুলে রয়েছে রাবার গাছে। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় কৃষ্ণর পরিবারে। মুহূর্তের মধ্যে গোটা গ্রামের মানুষ একত্রিত হয়। বিশ্রামগঞ্জ থানাকে খবর দেওয়া হয়। খবর পেয়ে বিশ্রামগঞ্জ থানার পুলিশ এসে মৃতদেহ নামিয়ে বিশ্রামগঞ্জ প্রাথমিক হাসপাতালে নিয়ে যায়। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের পর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এই মর্মান্তিক ঘটনায় পরিবারটির উপর আকাশ ভেঙে পড়ার অবস্থা। কৃষ্ণর এক বন্ধু বলেছে, কৃষ্ণ তার স্ত্রী অর্থাৎ তার জীবনসঙ্গিনীকে অফুরন্ত ভালোবাসত। তার স্ত্রী মরে যাওয়ার পর থেকে কৃষ্ণ মনমরা হয়ে থাকত। সবসময় বন্ধুর কাছে তার সহধর্মিণীর কথা বলত। তোমার কাছে আমিও আসছি চলে। এই কথাটা সব সময় বন্ধুর কাছে নাকি বলত কৃষ্ণ। গোটা গ্রাম কাঁদছে কৃষ্ণর বন্ধুর মুখে কৃষ্ণর এই কথা শুনে। এমনই ভালোবাসা ছিল দুজনের মধ্যে। স্ত্রীর মৃত্যু মন থেকে মেনে নিতে পারেনি কৃষ্ণ।তাই হয়তো আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। এমনটাই জানিয়েছে বন্ধুবান্ধব পাড়া প্রতিবেশী আত্মীয় স্বজন।
কৃষ্ণর মৃত্যুর সংবাদে গোটা এলাকা শোকস্তব্ধ হয়ে পড়েছে। কৃষ্ণের বৃদ্ধ পিতা ও পরিবারের লোকজন তার এই অকাল মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না।