সরকারি নির্দেশ উপেক্ষা করে ঋণের কিস্তি নিতে মরিয়া একাংশ মাইক্রো ফিনান্স সংস্থা

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৩ জুন৷৷ করোনা ভাইরাস সংক্রমণ জনিত পরিস্থিতিতে আগামী আগস্ট মাস পর্যন্ত ব্যাংক ও মাইক্রো ফাইন্যান্স কোম্পানি গুলিকে ঋণের কিস্তির টাকা আদায় না করতে সরকারিভাবে সার্কুলার জারি করা হলেও নানাভাবে গ্রাহকদের ওপর টাকা মিটিয়ে দেওয়ার জন্য কৌশলে চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে৷


বর্তমানে গোটা দেশের সাথে প্রান্তিক রাজ্য ত্রিপুরাতে চলছে করোনা পরিস্থিতি৷ তাই লাগু করা হয়েছে কারফিউ৷ নেই কাজকর্ম৷ এই অবস্থায় দিনমজুর খেটে খাওয়া মানুষের হাল বেহাল৷ করোণা মহামারীর মধ্যে প্রতি সপ্তাহে তাদের মাইক্রোফাইন্যান্সের কিস্তি গুলো দিতে হচ্ছে৷ রোজগার নেই৷কোথা থেকে দেবে কিস্তি?কিন্তু বর্তমানে যেভাবে সাপ্তাহিক কিস্তি তোলা হচ্ছে তা কার্যত গরিব মানুষকে মানসিক চাপে ফেলছে মাইক্রো ফাইন্যান্স কোম্পানি গুলি৷ মাইক্রোফাইন্যান্স এর কিস্তি পরিশোধ করতে না পেরে আত্মহত্যার ঘটনাও সংঘটিত হয়েছে৷


গরিব অংশের মানুষের কথা চিন্তা করে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে গতকাল রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী তথা অর্থমন্ত্রী জিষ্ণু দেববর্মা আলোচনা ক্রমে ব্যাংক ও মাইক্রোফাইন্যান্স গুলির ঋণ আদায় আগামী আগস্ট মাস পর্যন্ত স্থগিতের নির্দেশ দেন৷যদি কোন ব্যক্তি স্বেচ্ছায় উনার ঋণ পরিশোধ করতে চান তাহলে ব্যাংক ও মাইক্রোফাইন্যান্স গুলি নেবে বলেও জানান৷ কিন্তু জারি করা নোটিফিকেশনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে সত্ত মাইক্রো ক্যাপিটাল কোম্পানি এক অমানবিক কান্ড সংঘটিত করল কদমতলায়৷ জানা গেছে, উত্তর জেলার কদমতলা ব্লকের বাঘন গ্রাম পঞ্চায়েতের ৭ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা জয়ন্ত দাস দু মাস পূর্বে সত্ত মাইক্রো ক্যাপিটাল কোম্পানির ধর্মনগর শাখা থেকে ৩০ হাজার টাকা ঋণ নেন৷


ঋণের টাকার সাপ্তাহিক কিস্তি ১৭৭০ টাকা৷ সকাল থেকে সত্য মাইক্রো ক্যাপিটালের ফিল্ড এজেন্টরা বাগন গ্রামের জয়ন্ত দাসের বাড়িতে কিস্তি আদায়ের জন্য আসেন৷ ঋণ গ্রহীতা বর্তমান করোণা পরিস্থিতিতে রুজি-রোজগার বন্ধ হয়ে পড়াতে বর্তমানে কিস্তি দিতে অক্ষম বলে জানান৷কিন্তু এজেন্টরা নাছোড়বান্দা৷ তাদের কিস্তি লাগবেই বলে সকাল থেকে জয়ন্ত দাসের ঘরে বসে থাকে৷ কোন উপায় না পেয়ে জয়ন্ত তার শূকর বিক্রি করে লোন পরিশোধ করবে বলে জানান৷ এমনকি মাইক্রোফাইন্যান্সের এজেন্টরা শূকর বিক্রির জন্য ক্রেতাও বন্দোবস্ত করে নেন৷ অল্প মূল্যে শূকর বিক্রি করতে বাধ্য হন গৃহস্থ৷ মামাইক্রো ফাইন্যান্স কোম্পানি গুলির ভূমিকায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ঋণগ্রহীতারা৷ রাজ্য সরকারের তরফ থেকে সার্কুলার জারি করার পরও যদি এ ধরনের কার্যকলাপ বন্ধ না হয় তাহলে অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটে যাওয়ার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *