চলতি অর্থবছরে কৃষকদের থেকে সহায়ক মূল্যে ২০ হাজার এমটি ধান ক্রয় করার সিদ্ধান্ত মন্ত্রিসভার

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৫ জানুয়ারি৷৷ মন্ত্রিসভার বৈঠকে আজ চলতি অর্থবছরে কৃষকদের থেকে সহায়কমূল্যে ২০ হাজার মেট্রিক টন ধান ক্রয় করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ আজ সন্ধ্যায় সচিবালয়ের প্রেস কনফারেন্স হলে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে মন্ত্রিসভার এই সিদ্ধান্তের কথা জানান শিক্ষামন্ত্রী রতনলাল নাথ৷ তিনি আরও জানান, বর্তমান রাজ্য সরকার রাজ্যের উন্নয়নে যেসকল ক্ষেত্রকে অগ্রাধিকার দিয়েছে এরমধ্যে ক’ষি একটি অন্যতম ক্ষেত্র৷ বর্তমান রাজ্য সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার লক্ষ্যে ২০১৮-১৯ অর্থবছর থেকে ক’ষকদের কাছ থেকে সহায়কমূল্যে ধান ক্রয় করা শুরু করেছে৷


তিনি তথ্য দিয়ে জানান, রাজ্য সরকার ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে কৃষকদের কাছ থেকে সহায়কমূল্যে ২৭ হাজার ২৭২ মেট্রিক টন ধান ক্রয় করেছিল৷ তাতে ১৪,১২৯ জন কৃষকের অ্যাকাউন্টে ৪৭ কোটি ৭৩ লক্ষ টাকা প্রদান করা হয়েছে৷ ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে কৃষকদের কাছ থেকে ধান ক্রয় করা হয়েছিল ২১ হাজার ৪৪৪ মেট্রিক টন৷ এরফলে ১৩ হাজার ৬০৬ জন কৃষকের অ্যাকাউন্টে ৩৮ কোটি ৯২ লক্ষ টাকা প্রদান করা হয়েছে৷ শিক্ষামন্ত্রী আরও জানান, আগামী ১২ জানুয়ারি থেকে রাজ্যের ৩২টি কেন্দ্রে চলতি অর্থবছরে ধান ক্রয় করার প্রক্রিয়া শুরু হবে৷ তিনি জানান, চলতি অর্থবছরে ২০ হাজার মেট্রিকটন ধান ক্রয় করার যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তার জন্য মিলিং চার্জের ভর্তকী বাবদ রাজ্য সরকারের কোষাগার থেকে ৫ কোটি ২৮ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ব্যয় হবে৷ রাজ্যের কৃষকদের আয় বৃদ্ধির জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের পাশাপাশি রাজ্য সরকারও বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজ করছে৷ শিক্ষামন্ত্রী আরও জানান, প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মাননিধি প্রকল্পে রাজ্যের ২ লক্ষ ৩০ হাজার কৃষকের অ্যাকাউন্টে এখন পর্যন্ত ২৭১ কোটি ৩৩ লক্ষ টাকা প্রদান করা হয়েছে৷


তাছাড়াও আজ মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘দি ত্রিপুরা ইণ্ডাস্ট্রিয়াল ইনভেস্টমেন্ট প্রমোশন ইনসেনটিভ স্কীম, ২০১৭’ অধীনে যে সব শিল্পদ্যোগীরা ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সাবসিডির জন্য আবেদন করেছেন তা বিবেচনা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ এই প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী জানান, শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তর থেকে শিল্পদ্যোগীদের ’দি ত্রিপুরা ইণ্ডাস্ট্রিয়াল ইনভেস্টমেন্ট প্রমোশন ইনসেনটিভ স্কীম-এ সাবসিডি দাবির প্রস্তাব ২৫ মার্চ, ২০২০ থেকে ৩০ জন, ২০২০-র মধ্যে জমা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছিল৷ কিন্তু কোভিড-১৯ অতিমারির কারণে শিল্পদ্যোগীরা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সাবসিডি দাবির প্রস্তাব জমা না দিতে পারায় তা একবারের জন্য ছাড় দিয়ে ২০২০ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত করা হয়েছিল৷ আজ মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যেসকল শিল্পদ্যোগীরা ৩১ ডিসেম্বর, ২০২০-এর মধ্যে সাবসিডির জন্য আবেদন করেছেন তা রাজ্য সরকার বিবেচনা করবে৷


শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বর্তমান রাজ্য সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর রাজ্যে ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারী শিল্প স্থাপনে গুরুত্ব দিয়েছে৷ তিনি তথ্য দিয়ে জানান, ২০১৮ সালের মার্চের আগে রাজ্যে ক্ষুদ্র শিল্প প্রতিষ্ঠান ছিল ৪ হাজার ৯৫১টি৷ ২০১৮ সালের মার্চের পর থেকে এখন পর্যন্ত ক্ষুদ্র শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপন করা হয়েছে ৪ হাজার ৩২৮টি৷ আগে রাজ্যে ছোট শিল্প প্রতিষ্ঠান ছিল ৫১৫টি৷ বর্তমান রাজ্য সরকারের আড়াই বছরে ছোট শিল্প স্থাপন হয়েছে ৬৯০টি৷ মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠান আগে ছিল ২৭টি৷ বর্তমান সরকারের আড়াই বছর সময়কালে মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপন হয়েছে ২১টি৷ তিনি আরও জানান, বর্তমান রাজ্য সরকারের আড়াই বছর সময়কালে রাজ্যে ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পক্ষেত্রে বিনিয়োগ হয়েছে ৬৪৩ কোটি টাকা এবং কর্মসংস্থানের সুুযোগ সৃষ্টি হয়েছে ৩০ হাজার ১৬৬ জনের৷ শিক্ষামন্ত্রী আরও জানান, রাজ্যে শিল্পক্ষেত্রকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে বিভিন্ন শিল্প ইউনিটগুলিকে ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে ৪ কোটি ৬৭ লক্ষ ৮১ হাজার টাকা এবং ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে ১২ কোটি ৯৫ লক্ষ টাকা সাবসিডি প্রদান করা হয়েছে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *