নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৯ জানুয়ারি৷৷ মনের ভাব প্রকাশের অন্যতম মাধ্যম হল মাতৃভাষা৷ ত্রিপুরার জনগণের মনের কথা জানতে হলে বাংলা ও ককবরক উভয় ভাষাকেই জানতে হবে৷ মুখ্যন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব আজ সকালে উমাকান্ত মিনি স্টেডিয়ামে ৪১তম ককবরক দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক সুবিশাল র্যালির সূচনা করে একথা বলেন৷ তিনি বনেল, রাজ্য সরকার ককবরক সহ অন্যানন্য বাষার উন্নয়নে কাজকরছে৷ ককবরক ভাষাকে কীভাবে আরও সমৃদ্ধ করা যায় সে লক্ষ্যে শিক্ষা দপ্তর ও উপজাতি কল্যাণ দপ্তর উদ্যোগ নিয়েছে৷ প্রদীপ জ্বেলে ও পতাকা নেড়ে এই র্যালির সচনা করে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব বলেন, ত্রিপুরার মোট জনসংখার ২৩ শতাংশ মানুষ ককবরক ভাষায় কথা বলেন৷ রাজ্য সরকার ককবরক ভাষাকে সংবিধানের অষ্টম তপশিলে অন্তর্ভূক্ত করার জন্য মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে৷ এ সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্য সরকার ককবরক সহ অন্যান্য সকল ভাষা ও জনগোষ্ঠীর মাতৃভাষার উন্নয়নে প্রয়াস নিয়েছে৷

অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথির ভাষণে শিক্ষামন্ত্রী রতন লাল নাথ বলেন, ১৯৭৯ সালের ১৯ জানয়ারি ককবরক ভাষা সরকারি স্বীকৃতি লাভ করে৷ ককবরক ভাষার উন্নয়নে রাজ্য সরকারের যেমন প্রয়াস রয়েছে তেমনি এ ভাষার সম্প্রসারণে ককবরক লেখক ও সাহিত্যিকদের অবদান কম নয়৷ এ বছর প্রবান্ধিক নরেশ চন্দ্র দেববর্মা পাচ্ছেন রাধামোহন ঠাকুর ও সাহিত্যিক নন্দন কুমার দেববর্মা পাচ্ছেন অলিন্দ্রলাল ত্রিপুরা স্মৃতি পুরস্কার৷
ত্রিপুরায় দেববর্মা, ত্রিপুরী, রিয়াং, জমাতিয়া, নোয়াতিয়া, কলই, মুড়াসিং, উঁচই ও রূপিনী এই ৯টি সম্প্রদায়ের মানুষ মূলত ককবরক ভাষায় কথা বলেন৷ ককবরক ভাষার উন্নয়নে লেম্বুছড়ার ২৫ কানি জমির উপর একটি ট্রাইবেল রিসার্চ ইনস্টিটিউট গড়ে তোলা হবে৷ মন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র চন্দ্র দেববর্মা তার ভাষণে বলেন, ককবরক ভাষার সাথে সাথে অন্যান্য ভাষার সাহিত্য – সংসৃকতিও অনুবাদন করা দরকার৷ এ কাজটি সকলের সহযোগিতা নিয়ে করতে হবে৷ ৪১ বছর ধরে আমরা এ দিবস পালন করলেও আশানুরূপভাবে ককবরক ভাষার উন্নয়ন হয়নি৷ ভাষার ও কৃষ্টির উন্নয়নে আর্য গুরুত্বারোপ করার প্রতি রাজস্বমন্ত্রী অভিমত ব্যক্ত করেন৷
অনুষ্টানে বিষিষ্টজনদের মধ্যে বিধায়ক রামপদ জমাতিয়া, বিধায়ক অতুল দেববর্মা, প্রমেয়াদ রিয়াং, উচ্চ শিক্ষা অধিকর্তা অমিত শুক্ল, সি কে জমাতিয়া, তথ্য ও সংসৃকতি দপ্তরের অধিকর্তা আশুদেব প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন৷ উদ্বোধনী অনষ্ঠানের পর হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রী ও জনজাতি সমাজের বিভিন্ন স্তরের জনগণকে নিয়ে ট্যাবলু ও ব্যান্ড সহযোগে শুরু হয় এক বর্ণাঢ্য র্যালি৷ র্যালির পুরোভাগে মুখ্যমন্ত্রী সহ অন্যান্য মন্ত্রীগণ ও আধিকারিকগণ অংশখ নেন৷ এই র্যালি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক পরিক্রমা শেষে পুনরায় উমাকান্ত মাঠে এসে সমাপ্ত হয়৷