সমাজে এখন অসুস্থ পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা হচ্ছে ঃ মুখ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৩০ ডিসেম্বর৷৷ আমাদের সমাজে এখন অসুস্থ পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা হচ্ছে৷ ধর্ম-বর্ণ-পোশাকের কথা বলে মানুষকে ভাগ করার চেষ্টা হচ্ছে৷ এই বিষয়গুলি যাতে বাচ্চাদের স্পর্শ করতে না পারে সে বিষয়ে তাদের মা – বাবাদের নজর দিতে হবে৷ আজ বিকালে মেলার মাঠের এগিয়ে চল সংঘে আয়োজিত দশ দিন ব্যাপী ৩০ তম শিশু মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার এ কথা বলেন৷ তিনি বলেন, আজকের শিশু দেশের ভাবী নাগরিক৷ তাকে ছোটবেলা থেকে বড় করে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে মায়ের ভূমিকা সবচেয়ে বড়৷ এই শিক্ষা দেবার জন্য মাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আঙ্গিনায় যাবার প্রয়োজন পড়েন৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, শিশুদের শেখাতে হবে সে যেন সত্য কথা বলে, বড়দের শ্রদ্ধা করে৷ একই সাথে তার সমবয়সীদের সাথে জাত-ধর্ম-বর্ণের উধের্ব ওঠে সে যেন বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে তোলে৷ তিনি বলেন, এই শিক্ষা শিশুকে ছোটবেলায় দেয়া গেলে সে বড় হয়ে মানুষের মত মানুষ হবে৷ শুধু নম্বরের পেছনে না ছোটার জন্য পরামর্শ দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই সময় শিশুকে পাখীর মত স্বাধীন ভাবনা নিয়ে চলার সুযোগ দিতে হবে৷ বড় হবার মানসিকতা তাকে তার ভাবনার মধ্যে ঢুকিয়ে দিতে হবে৷ তিনি বলেন, শিশু উৎসব শুধু শিশুদের উৎসব নয়৷ মা, বাব, দাদু-দিদিমা অর্থাৎ পরিবারের সবার সম্মিলিত উৎসব৷ এই উৎসবকে ভিত্তি করে গোটা পরিবার এর সঙ্গে যুক্ত হয়৷ ফলে একটা বিরাট মেল বন্ধন তৈরী হয়৷ শিশুর কাছে এই ধরণের অনুষ্ঠানে অংশ নেয়াটাই মূল বলে মুখ্যমন্ত্রী মনে করেন৷ তিনি বলেন, এতে অংশ নেবার মধ্য দিয়ে শিশু নিজেকে গুটিয়ে রাখার প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসবে এবং নিজের বিশ্বাস বাড়বে৷ তাই তার কাছে প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়াটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় বিষয়৷
অনুষ্ঠানে এ ছাড়া বক্তব্য রাখেন রাজ্যের বিশিষ্ট ক্রীড়াবিদ নিষ্ঠা চক্রবর্তী, রাষ্ট্রপতি পুরস্কার প্রাপ্ত বিশিষ্ট শিক্ষক পরেশ চক্রবর্তী, এগিয়ে চল সংঘের সাধারণ সম্পাদক সুমন্ত গুপ্ত, এ বছরের শিশু মেলা কমিটির আহ্বায়ক বিষ্ণু চক্রবর্তী প্রমুখ৷ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এগিয়ে চল সংঘের সভাপতি চঞ্চল নন্দী৷ অনুষ্ঠানে ক্লাবের পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে দশ হাজার টাকা দান করা হয়৷ অনুষ্ঠান শুরুর আগে শিশুদের নিয়ে একটি বর্ণাঢ্য র্যালী শহরের বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে৷ এই বর্ণাঢ্য র্যালীতে শিশুরা নানা সাজে সমাজকে সচেতন করার চেষ্টা করেছে৷ প্রতি বছর এই ক্লাবের উদ্যোগে শিশুমেলার আয়োজন করা হয়৷ রাজ্যের অন্যান্য স্থানেও এই মরশুমে শিশুমেলার আয়োজন করা হয়৷ এই ধরনের উদ্যোগকে অভিবাবকরা স্বাগত জানিয়েছেন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *