নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৩০ ডিসেম্বর৷৷ বেকার বঞ্চনার প্রতিবাদে শনিবার উত্তাল হয়ে উঠেছিল রাজ্য৷ বেকরারা বঞ্চনার প্রতিবাদ হিসেবে তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট পুড়িয়েছেন৷ এদিকে, চাকুরীচ্যুত শিক্ষকরা চাকুরী বাতিল ও এডহক ভিত্তিতে নিয়োগের সরকারী বিজ্ঞপ্তি পুড়িয়ে রাজ্যে সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন৷ পাশাপাশি তাঁরা বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের দ্বারস্থ হবেন জীবন জীবিকার নিশ্চয়তার দাবীতে৷
রাজ্যের সাড়ে সাত লাখ বেকারের কমর্সংস্থানের নিশ্চয়তা দিতে ব্যর্থতার তীর শাসক দলের দিকে ছুড়ে দিয়েছে যুবমোর্চা৷ শনিবার রাজধানীতে এক অভিনব আন্দোলন সংগর্ঠিত করেছে মোর্চার কার্যকর্তারা৷ রাজ্যব্যাপী যুবারা শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেটের জেরক্স কপি পুড়িয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে৷ সদর যুবমোর্চার সমস্ত মন্ডলগুলির একযোগে বিক্ষিপ্ত জায়গায় সরকার বিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ঝাঁচ বাড়িয়েছে৷ শহরতলির আগরতলার বিদ্যাসাগর সেতুর উপর সড়ক অবরোধ করেছে যুবকর্মীরা৷ তাঁদের অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার রাজ্যের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে চূড়মাড় করে দিয়েছেন৷
মশাড়ি আন্দোলনের পর দা, কুদাল, টুকড়ি নিয়ে রাজপথে বিক্ষোভ যুবমোর্চার৷ প্রদেশ যুব মোর্চার সভাপতি টিংকু রায় অভিযোগ করেছেন, গত ২৪ বছরে বেকারদের সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পেয়েছে৷ শিক্ষিত বেকারদের শ্রমিক বানিয়ে পার্টির মিটিং মিছিলে হাটিয়ে সর্বশান্ত করা হয়েছে বলেও কটাক্ষ করেছেন শ্রী রায়৷ তাঁর দাবী ১৮’র ভোটে বেকার সমাজ বামফ্রন্ট সরকারের শোষণের মোক্ষম জবাব দিতেশিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট পুড়িয়ে সরকারকে হুশিয়ারী দিয়েছে৷ সরকার পরিবর্তনের মূল নির্ণায়ক শক্তি বিজেপি’র যুবা কর্মীরা, দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন টিংকু রায়৷ প্রসঙ্গত, রাজ্যে বেকার যুবক যুবতীদের নিয়ে রাজ্য বামফ্রন্ট সরকার দিনের পর দিন বঞ্চনা করে চলেছে৷ নিয়োগ নীতির বাইরে গিয়ে চাকুরী প্রদান করা৷ স্বজন পোষণ সহ নগ্ণ দলবাজী করে চলেছে বামফ্রন্ট সরকার৷ চাকুরীর জন্য দিনের পর দিন দপ্তরে দপ্তরে ইন্টারভিও দিলেও ভাগ্যবান নির্ধারিত হয় সিপিএম পার্টি অফিসে৷
এদিকে, সুষ্ঠভাবে বাঁচার তাগিদে চাকুরীচ্যুত শিক্ষকরা কেন্দ্রীয় সরকারের দ্বারস্ত হবেন৷ শিক্ষকতার চাকুরী বহাল রাখার জন্য আইন সংশোধনের আর্জি জানাবেন চাকুরীচ্যুতরা৷ এক্ষেত্রে যাদের যোগ্যতা রয়েছে তাঁদের জন্য ৫ বছর ছাড় দেওয়ার ক্ষেত্রে আইন সংশোধনের সুযোগ রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখে উদ্যোগ নেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকরের কাছে অনুরোধ জানাবেন চাকুরীচ্যুত শিক্ষকরা৷ আগামী ২ জানুয়ারি চাকুরীচ্যুত শিক্ষকদের চার প্রতিনিধি দিল্লিতে কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রীর সাথে দেখা করবেন৷ তাঁদের সাথে থাকবেন বিজেপি সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক রাম মাধব, বিজেপির রাজ্য সভাপতি বিপ্লব দেব, নেডার কনভেনার তথা বিজেপির নির্বাচনী প্রভারী ড হিমন্ত বিশ্ব শর্মা এবং বিধায়ক সুদীপ রায়বর্মণ৷ শনিবার চাকুরীচ্যুত শিক্ষকরা চাকুরী বাতিল এবং এডহক ভিত্তিতে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তিটি আগুনে পুড়িয়েছেন৷
এদিন আগরতলায় হিন্দি সুকল মাঠে চাকুরীচ্যুত শিক্ষকরা প্রতিবাদ স্বরূপ বিজ্ঞপ্তিটি পুড়িয়েছেন৷ এদিনই তাঁরা এক বৈঠকে মিলিত হন৷ চাকুরীচ্যুত শিক্ষক প্রদীপ বনিক জানিয়েছেন, রাজ্য সরকারের গাফিলতির কারণেই তাঁদের চাকুরী বাতিল হয়েছে৷ রাজ্য সরকার বহু প্রতিশ্রুতি দিলেও ১০৩২৩ জন শিক্ষকের চাকুরী বাঁচাতে পারেনি৷ তাই এখন জীবন জীবীকার নিশ্চিয়তার প্রশ্ণে কেন্দ্রীয় সরকারের দ্বারস্ত হচ্ছি আমরা৷ শ্রী বনিক জানান, চাকুরীচ্যুত শিক্ষকদের মধ্যে যাদের যোগ্যতা রয়েছে তাদের পাঁচ বছরের জন্য ছাড়দিতে আইনের সংশোধনী আনার আবেদন কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রীর কাছে জানানো হবে৷ আগামী ২ জানুয়ারী চাকুরীচ্যুত শিক্ষকদের চার প্রতিনিধি দিল্লিতে কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রীর সাথে দেখা করবেন৷ এরপর এবিষয়ে রাষ্ট্রপতির সাথেও দেখা করার চেষ্টা করবেন তাঁরা৷
জানা গেছে, চাকুরীচ্যুত শিক্ষকদের প্রতিনিধিদের সাথে বিজেপি সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক রাম মাধব, বিজেপির রাজ্য সভাপতি বিপ্লব দেব, নেডার কনভেনার তথা বিজেপির নির্বাচনী প্রভারী ড হিমন্ত বিশ্ব শর্মা এবং বিধায়ক সুদীপ রায়বর্মণ যাবেন৷ তাঁরাও চাকুরীচ্যুত শিক্ষকদের আবেদন সহানুভূতির সাথে দেখার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আর্জি জানাবেন৷
শ্রী বনিক জানান, এদিন বৈঠকে চাকুরীচ্যুত শিক্ষকদের মধ্যে যোগ্যতা সম্পন্নদের তালিকা তৈরি করার বিষয়টি স্থির হয়েছে৷