বিজেপির সংসদীয় কমিটির বৈঠকে ত্রিপুরার আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে উদ্বেগ প্রধানমন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি, ২০ ডিসেম্বর৷৷ ত্রিপুরার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷ বিজেপির সংসদীয় কমিটির বৈঠকে তিনি তাঁর উদ্বেগের কথা জানান৷ পাশাপাশি গুজরাট এবং হিমাচল প্রদেশ নির্বাচন জয়ে আত্মতুষ্টির কোন অবকাশ নেই বলে প্রধানমন্ত্রী অভিমত ব্যক্ত করেছেন৷

দিল্লিতে বিজেপির সংসদীয় কমিটির বৈঠক শুরু হয়েছে৷ বৈঠকে তিনি ত্রিপুরার বিষয় গুরুত্ব সহকারে উল্লেখ করেন৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে উদ্ধৃত করে টেলিফোনে রাজ্য বিজেপি সভাপতি বিপ্লকুমার দেব বলেন, প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে ত্রিপুরার প্রসঙ্গ তুলেছেন৷ ভাষণে স্পষ্টভাবে তিনি বলেছেন, ত্রিপুরার আইন-শৃঙ্খলার পরিস্থিতি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার যথেষ্ট উদ্বিগ্ণ৷ তিনি নিজেও ত্রিপুরার আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে যথেষ্ট চিন্তিত৷
বিপ্লবকুমার দেব বলেন, বিজেপির সংসদীয় কমিটির বৈঠকের শুরুতেই তিনি তাঁর ভাষণে ত্রিপুরার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন৷ ত্রিপুরায় ক্রমাগত বিজেপি কর্মীদের হত্যা, সর্বোপরি সাংবাদিকদের হত্যার ঘটনায় তিনি বিস্ময় প্রকাশ করেন৷

বিপ্লবকুমার দেব আরও বলেন, সংসদীয় কমিটির বৈঠকে সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ প্রথম একটি রিপোর্ট নিয়ে তাঁর উদ্বেগ এবং কেন্দ্রীয় সরকারের দুশ্চিন্তার কথা ব্যক্ত করেন৷

প্রদেশ সভাপতি দেব জানিয়েছেন, ত্রিপুরা সফর শেষে বিজেপি সংসদীয় প্রতিনিধি দল যে রিপোর্ট সর্বভারতীয় সভাপতির কাছে পেশ করেছিল তা অমিত শাহ বুধবার দিল্লিতে সংসদীয় প্রতিনিধি দলের বৈঠকে পেশ করেছেন৷ প্রধানমন্ত্রী সরাসরি ত্রিপুরা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করায় বিভিন্ন মহলে তীব্র চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে৷

এদিকে, গুজরাট এবং হিমাচল প্রদেশের ফলাফল ঘোষণার পরে এই প্রথম দলের সাংসদের মুখোমুখি হলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷ বুধবার বৈঠকের শুরুতে আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷ সাংসদদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, এটা বড় জয়৷ আমরা এখন ১৯ টি রাজ্যে ক্ষমতায় রয়েছি৷ এমনকি ইন্দিরা গান্ধী যখন ক্ষমতায় ছিল তখন ১৮ টি রাজ্যে তাদের সরকার ছিল৷ পাশাপাশি আটের দশকে দুইটি লোকসভা আসন থেকে আজ বিজেপি’র এই তুঙ্গশ্পর্শী বৃদ্ধির স্মৃতিচারণ করেন প্রধানমন্ত্রী৷ একই সঙ্গে দলের সাংসদের সতর্ক করে দিয়ে বলেন একাধিক রাজ্যসহ ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচন রয়েছে তাই আত্মতুষ্টির কোন জায়গা নেই৷ গুজরাট নির্বাচনে কংগ্রেসের নৈতিক জয়ের দাবিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে এদিন প্রধানমন্ত্রী বলেন, পরাজয়ের মদ্যে জয় খোঁজার হাস্যকর প্রচেষ্টায় রত কংগ্রেস৷ এই বিষয়ে সাংসদের বৈঠকে উপস্থিত থাকা কেন্দ্রীয়মন্ত্রী অনন্ত কুমার জানিয়েছেন, বিরোধীরা অপ্রয়োজনীয় এবং তুচ্ছ মন্তব্য করছে৷ এমনকি প্রধানমন্ত্রীর বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েও তারা প্রশ্ণ তুলছে৷ যা একেবারেই অযৌক্তি ও অপ্রাসঙ্গিক৷ তিনি জানান ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের জন্য এখন থেকে বুথস্তরের সংগঠনকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি বিরোধীদের সব ধরণের নেতিবাচক সমালোচনাকে গুরুত্ব না দিয়ে আগামী নির্বাচনে জয়লাভের জন্য মনোনিবেশ করতে হবে৷ যুবকদের বিজেপির প্রতি আরও বেশি আকৃষ্ট করার প্রসঙ্গে অনন্তু কুমার জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন দেশ, সমাজ, উন্নয়নের জন্য যুবশক্তিকে আরও বেশি নিয়োজিত করতে হবে৷ এর জন্য আগামী বছর যাদের ১৮ বছর বয়স হবে তাদের সঙ্গেও সংযোগ বাড়ানোর উপর জোর দেন তিনি৷ বৈঠকে হিমাচলপ্রদেশ এবং গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রীকে হবেন তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে৷ এবিষয়ে বিজেপির পক্ষ থেকে কিছু জানানো হয়নি৷ এদিন বৈঠকের শুরুতে প্রধানমন্ত্রীকে অভিবাদন জানান দলের সাংসদরা৷ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিজেপির সভাপতি অমিত শাহ৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *