গুয়াহাটি, ১৭ ডিসেম্বর, (হি.স.) : ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন গুয়াহাটি ও সংলগ্ন অঞ্চলে গত দুদিনে ব্যাপক বেড়েছে সড়ক দুর্ঘটনা। অভিশপ্ত শনিবার রাতে প্রায় চার ঘণ্টার ব্যবধানে রাজ্যের ভিন্ন প্রান্তে পৃথক পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ১২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। সব থেকে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে গুয়াহাটির অদূরে নলবাড়ি জেলার বালিকুচি এলাকায়। এ ঘটনায় একই পরিবারের ছয়জনের করুণ মৃত্যুর খবরে গোটা রাজ্য প্রায় শোকগ্রস্ত। কান্নায় ভেঙে পড়েছে নিহতদের গৃহ এলাকা।ঘটনার বিবরণ প্রকাশ, শনিবার রাত প্রায় আটটা। ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন এলাকা। সে সময় বিয়ে বাড়ি থেকে পত্নী, এক বিবাহিতা এবং দুই অবিবাহিতা কন্যা ও এক নাতনিকে নিয়ে নিজের এএস এমবি ৮৮৬৩ নম্বরের অ্যাল্টো কারে স্বগৃহে ফিরছিলেন প্রায় ৬৮ বছরের সমোরাম তালুকদার। গন্তব্যস্থল বাড়ি থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার আগে। বালিকুচি চকে একটি কংক্রিট সেতুতে থেকে গাড়িটি গিয়ে পড়ে গভীর খাদে। বেশ কিছুক্ষণ খাদে পড়েছিলেন তাঁরা। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা সঙ্গে-সঙ্গে খবর দেন পুলিশে। ইত্যবসরে দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়ির ভিতর থেকে আরোহীদের উদ্ধারে হাত লাগিয়ে দেন স্থানীয়রা। ছুটে পুলিশও। তাঁরাও সংজ্ঞাহীন যাত্রীদের উদ্ধারে স্থানীয়দের সহায়তায় নেমে পড়েন। শনাক্ত করতে সময় লাগেনি। পরিচয় মিলেছে প্রাক্তন সরকারি অফিসার বর্তমানের সামাজিক কর্মী সমোরামবাবু ও তাঁর পরিবারবর্গের।
নিহতদের মধ্যে রয়েছেন অসম প্রকাশ পরিষদের সচিব প্রমোদ কলিতার ৩৮ বছরের স্ত্রী রুমি তালুকদার, ৮ বছরের কন্যা হংসিতা কলিতা, দুই শ্যালিকা পম্পি (৩২) ও প্রগতি তালুকদার (২২), শ্বশুর সমোরাম তালুকদার (৬৮) এবং শাশুড়ি বরোদা তালুকদার (৫৫)। সঙ্গে-সঙ্গে তাঁদের পাঠানো হয় নলবাড়ির শহিদ মুকুন্দ কাকতি অসামরিক হাসপাতালে। সেখানে ডাক্তাররা তাঁদের সকলকে মৃত বলে ঘোষণা করেছেন।ঘটনার খবর পেয়ে গুয়াহাটি থেকে তড়িঘড়ি ছুটে যান শোকগ্রস্ত অসম প্রকাশন পরিষদের সচিব প্রমোদ কলিতা।এদিকে, শোকাবহ দুর্ঘটনার খবরে গভীর শোক ব্যক্ত করেছেন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল, তাঁর মিডিয়া উপদেষ্টা হৃষিকেশ গোস্বামী, মন্ত্রী চন্দ্রমোহন পাটোয়ারি প্রমুখ।