কলকাতা, ১৪ ডিসেম্বর (হি. স.): মাদককাণ্ডে যে পাঁচটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের নাম উঠে এসেছে, তাদের অধ্যক্ষদের ডেকে পাঠাল নারকোটিকস কন্ট্রোল ব্যুরো (এনসিবি)।খবর সংশ্লিষ্ট কলেজগুলিকে সতর্ক করার পাশাপাশি সেখানে নিষিদ্ধ মাদকের রমরমা আটকানোই কেন্দ্রীয় এই তদন্তকারী সংস্থার উদ্দেশ্য। কলেজের কারা কারা এই নেশায় আসক্ত, তার তথ্যও তুলে ধরা হবে কলেজ কর্তৃপক্ষের সামনে। যাতে তার ভিত্তিতে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলি ব্যবস্থা নিতে পারে এবং আসক্ত ছাত্রদের অন্ধকার জগৎ থেকে ফিরিয়ে আনা যায়।
ইতিমধ্যেই তদন্তকারী আধিকারিকরা পাঁচটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের নাম জেনেছেন। সেখানকার কোন কোন ছাত্র নিষিদ্ধ মাদক ব্যবসায় নেমেছেন তাদের নামও জেনেছেন তাঁরা। কেন্দ্রীয় এই তদন্তকারী সংস্থার কর্তারা চাইছেন, কলেজগুলিকে গোটা বিষয়টি জানিয়ে দিতে। এখনই ব্যবস্থা না নিলে আগামীদিনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিতে মাদকের কারবার ও তার ব্যবহার মাত্রাতিরিক্ত ভাবে বেড়ে যাবে বলেই এনসিবির আশঙ্কা। যেভাবে কলেজ ছাত্ররা নেটওয়ার্ক খুলে ব্যবসা চালাচ্ছে, তাতে অন্যান্য কলেজের ছাত্ররাও এই ব্যবসায় জড়িয়ে পড়তে পারেন। যার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে বলে খবর। এই ব্যবসায় টানতে ছাত্রদের মোটা টাকার লোভ দেখানো হচ্ছে। তা আটকাতেই এনসিবি কর্তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, গোটা বিষয়টি কলেজ কর্তৃপক্ষের সামনে তুলে ধরতে।
কতটা মারাত্মক জায়গায় রয়েছে সংশ্লিষ্ট কলেজগুলি, তা তথ্য ও পরিসংখ্যান দিয়ে তুলে ধরা হবে কলেজ কর্তৃপক্ষের সামনে। তাঁরা চাইছেন, ছাত্রদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিক কলেজ কর্তৃপক্ষই। যে পাঁচটি কলেজের নাম উঠে এসেছে, তাদের অধ্যক্ষদের কাছে চিঠি চলে গিয়েছে বলে এনসিবি সূত্রে খবর। কলকাতার বিভিন্ন বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্রদের একাংশ কীভাবে মাদক ব্যবসায় নেমে পড়েছেন তার তথ্য এনসিবি কর্তাদের হাতে এসেছে। ব্যবসার সঙ্গে পড়ুয়াদের একাংশ রীতিমতো এই নেশায় আসক্ত। কেন্দ্রীয় এই তদন্তকারী সংস্থার কর্তারা চাইছেন, কলেজে কলেজে এই নিয়ে সচেতনামূলক প্রচারের উপর জোর দিতে। এই কারবার চালাতে গিয়ে ধরা পড়লে তার শাস্তি কী, হতে পারে, সেই বিষয়টি তুলে ধরতে চাইছেন আধিকারিকরা। যাতে পড়ুয়ারা পেডলার হিসেবে কাজ করার আগে অন্তত কয়েকবার ভাবেন। পাশাপাশি এনসিবি চাইছে, পড়ুয়াদের সঠিক পথে ফিরিয়ে আনতে বিভিন্ন কলেজ মাদক বিরোধী একটি কমিটি তৈরি করুক। যাতে গোড়াতেই এই ব্যবসা ও তার সেবন আটকে দেওয়া যায়।
এদিকে ধৃত নিলয় ঘোষ ও জেরমি ওয়াটসনকে বুধবার বিধাননগর আদালতে তোলা হয়। আদালত তাদের পুলিসি হেপাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে।
ধৃত নিলয় ঘোষকে জেরা করে অফিসাররা জানতে পারছেন, কলকাতার আরও বেশকিছু নামী কলেজকে তারা টার্গেট করেছিল। সেগুলির নাম হাতে এসেছে তাঁদের। এজন্য সে এই সমস্ত কলেজে যাতায়াতও বাড়িয়েছিল। কয়েকজন ছাত্র পেডলার হিসেবে কাজ করার জন্য রাজিও হয়েছিলেন বলে জানা যাচ্ছে। নিলয়ের ব্যবসার জাল অনেক দূর পর্যন্ত ছড়িয়ে ছিল তা তদন্তে উঠে আসতে শুরু করেছে। এরাজ্য ছাড়াও ভিনরাজ্যের বেশকিছু বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে তার যাতায়াত ছিল। সেখানে সে মাদক পৌঁছে দিতে বলে খবর। এগুলির বিষয়েও খোঁজখবর শুরু হয়েছে।
2017-12-14