নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৬ ডিসেম্বর৷৷ ১০,৩২৩ জন কর্মচ্যুত শিক্ষকদের দুইভাগে ভাগ করে ঘোলা জলে মাছ ধরার রাজনীতির স্বীকার আন্দোলনকারীরা৷ এই জল্পনা জিইয়ে রেখেই, সরকার বিদ্রোহী অল ত্রিপুরা ১০,৩২৩ টিচার্স এসোসিয়েশন সড়ক ও রেলপথ অবরোধের হুশিয়ারী দিতেই মাঠে নামলো হগব সংগঠন৷ চাকরীচ্যুতির পরই একাধিকভাগে বিভক্ত হয়ে পড়া সংগঠনের ছাপ পরিলক্ষিত হচ্ছে নতুন আন্দোলন ঘোষণা হগব মার্কা চাকরীচ্যুত সংগঠনের৷ মেলারমাঠের সুরে নৈতিকতার পাঠ শুনিয়ে ক্ষুব্ধ কর্মচ্যুত শিক্ষকদের ৪৮ ঘন্টা সময়সীমার সড়ক ও রেল অবরোধ প্রত্যাহারের ডাক দিয়েছেন শিক্ষকনেতা জাকির হুসেন৷ ৭ই ডিসেম্বর মহাকরণ অভিযান করে সরকারকে গণতান্ত্রিকভাবে চাপ সৃষ্টি করার জন্য সবাইকে একমঞ্চে বসার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি৷ শিক্ষকদের মতো দায়িত্ববান পেশার সঙ্গে থেকে এই ধরনের আন্দোলন কখনো কাম্য নয়৷ মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের পাশে আছি, ভেসে যেতে দেবনা আশ্বাসে অগাধ আস্থার কথা তোলে ধরেছেন হগবমার্কা কর্মচ্যুত শিক্ষকরা৷ ৩১ শে ডিসেম্বর যত ঘনিয়ে আসছে পাকাপাকি কর্মহীন হয়ে পড়ার দিনক্ষন ঘনিয়ে আসতে শুরু করেছে৷ প্রবল চাপে পড়ে কর্মচ্যুত শিক্ষকদের বাম রদ্দিমার্কা হগব নেতাদের কাজে লাগিয়ে কর্মচ্যুতদের বিকল্প কর্মসংস্থান হবে কিনা সন্দীহান সবাই৷ দুই গোষ্ঠীর আন্দোলনে আরো জটিল সমস্যা কর্মচ্যুত শিক্ষকদের নিরসন হবেনা ৩১ শে ডিসেম্বরের মধ্যে বলাই বাহুল্য৷ কর্মচ্যুত শিক্ষক বিদ্রোহের আশঙ্কায় চাপানউতোর শুরু হয়েছে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে৷
তেলিয়ামুড়া সংযোজন ঃ চাকুরীচ্যুত শিক্ষকদের সিংহভাগই সুকলে যাচ্ছেন না৷ তাতে সুকলের পঠন পাঠন মারত্মকভাবে ব্যহাত হচ্ছে৷ এই পরিস্থিতিতে বার্ষিক পরীক্ষার মুখ্য ছাত্রছাত্রীদের মারাত্মক সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়েছে৷
অম্পি বাজার ব্লক থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে তেলিয়ামুড়া অমরপুর রাস্তার পাশে তেতুইবাড়ী হাই সুকলটি৷ বর্তমান ষষ্ট শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত৷ ছাত্র ছাত্রীদের সংখ্যা ২৫০ জন৷ শিক্ষক শিক্ষিকার সংখ্যা ৯ জন৷ রাজ্য সরকারের ভূল সিদ্ধান্তের দৌলতে ৮ জন শিক্ষক শিক্ষিকা ১০৩২৩ এর মধ্যে রয়েছে৷ তাই ৮ জন শিক্ষক সুকলে আসেন না৷ এদিকে ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত পঠন পাঠন মাসে দুইটি ক্লাসের বেশি হয়না৷ কারণ বিগত কয়েক মাস ধরে ১০৩২৩ এর অধীন শিক্ষক শিক্ষিকারা সুকলে আসেন না৷
সবচেয়ে বড় ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে আগামী শিক্ষাবর্ষে ওই সুকলের প্রায় ৮৪ জন ছাত্র ছাত্রী মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবার প্রস্তুতি নিচ্ছে৷ বিগত কয়েক মাস ধরে মাসে দুটি ক্লাস ছাড়া আর হয় না৷ ওই এলাকার ছাত্রছাত্রীরা অতিরিক্ত টিউশন নেবার জন্যে পরিবারিক ভাবে অর্থের দিক দিয়ে তেমন শক্ত নয়৷ তাই ওই সকল এলাকার জনজাতি অংশের ছাত্র-ছাত্রীরা শিক্ষার জন্যে কেবল মাত্র নির্ভর করে থাকতে হয় সুকলের পঠনপাঠনের উপর৷ প্রতিদিন ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে দ্বাদশ শ্রেণীতে পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীরা সুকলে হাজির থাকলেও প্রতিদিন দুই তিন জন শিক্ষক শিক্ষিকা ছাড়া আর কেও আসেন না৷ প্রতিদিন কোন না কোন শ্রেণীতে ১-২টি ক্লাস হয়৷
এদিকে রাজ্য সরকারের ভূল সিদ্ধান্ত হোক, সুপ্রীম কোর্টের সঠিক রায় হোক, দুয়ের মধ্যে এই রাজ্যের ছাত্রছাত্রীরা আজ বিপাকের মুখে৷ এখন দেখার বিষয় ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ গড়ার জন্যে বর্তমানে সরকার কি পদক্ষেপ গ্রহন করে৷
2017-12-07