কলকাতা,৪ ডিসেম্বর ( হি.স.) : আগামী ২৩ ডিসেম্বর থেকে রাজ্যে সফর শুরু করছেন সদ্য বিজেপি-তে যোগ দেওয়া মুকুল রায় । যাত্রা চলবে টানা ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত ।ফলে, শীত যতই পরুক পশ্চিমবঙ্গে রাজনীতির উত্তাপও থাকবে ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি । মুকুল রায়ের এই এক মাসের কর্মসূচি এই রাজ্যে বিজেপিকে আরও বেশি আলোচনায় রাখবে । এই নিয়ে এইদিনই মুরলিধর সেন লেনে বৈঠকে বসলেন কৈলাশ বিজয় বর্গীয়, দিলীপ ঘোষ, স্বায়্ন্তন বসুরা । শুরুতেই প্রায় ১১ টা জেলায় ঘুরবেন মুকুল বাহিনীরা । তাই, এবার রাজনীতির উত্তাপও জাঁকিয়ে পড়বে আগামী কয়েকটা মাসে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পূর্ব পরিকল্পনা মতো শীত থাকতে থাকতেই রাজ্যে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচন । তাই এই শীতে উত্তুরে হাওয়া যতই থাকুক রাজনীতির হাওয়াও থাকবে । সামনে গুজরাত নির্বাচন । একই সঙ্গে হিমাচল প্রদেশের সঙ্গে ফল ঘোষণা ১৮ ডিসেম্বর । আগাম সমীক্ষার ফল বলছে ভাল ফল করবে বি জে পি । আবার গুজরাতের চলতি হাওয়া দেখে রাজনৈতিক মহলের একাংশের বক্তব্য, জয় পেলেও ভয় কাটবে না বি জে পি-র। কেউ কেউ তো বিজেপির তুলনায় রাহুল, হার্দিকদের এগিয়ে রাখছেন। শুধু জয় নয় ভাল জয় চাই বিজপি -র। কারণ, এই রাজ্য নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহর রাজ্য। এখানকার ফল বলে দেবে আগামী লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপির তথা মোদীর জনপ্রিয়তায় কতটা জোয়ার, কতটা ভাটা আসতে পারে। আর এই ফলের উপরে নির্ভর করছে অন্যান্য রাজ্যে বিজেপি-র আগাম পরিকল্পনা কেমন হবে । গুজরাতে যদি বিজেপির ফল দুর্দান্ত কিছু হয় তবে দ্বিগুণ উৎসাহ নিয়ে সামনেই বিধানসভা ভোট থাকা ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গের উপরে ঝাঁপিয়ে পরবে বি জে পি । কিন্তু মনে রাখা দরকার অমিত শাহরা গুজরাতে ধাক্কা খেলে তবে বি জে পি-র কলিঙ্গ কিংবা বঙ্গ আক্রমণ আরও জোরদার হবে । গত লোকসভা নির্বাচনে বি জে পি গুজরাতে সবকটি আসনেই জয় পায় । সেখানে নতুন করে আসন বাড়ানোর উপায় নেই । তাই অন্য রাজ্যে নির্ভরতা বেশি । উত্তরপ্রদেশে ভাল ফল করলেও আগেই লোকসভায় সেখানে প্রায় সব আসনে দাপট দেখিয়েছে পদ্ম । এখন তাই গুজরাতে বিজেপি ফল খারাপ করুক আর ভাল বাংলার দিকে নজর পরবেই । কেন্দ্রের ক্ষমতায় ফের নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে যেতে বি জে পি নেই এমন রাজ্যে শক্তি বাড়ানোই হবে বড় লক্ষ্য । এর মধ্যে রয়েছে এই রাজ্য । আর তাতে মুকুল রায়ের তোলা ‘বিশ্ববাংলা’ অভিযোগই নেবে মুখ্য ভূমিকা । কারণ, তৃণমূল কংগ্রেসের ‘মূল’ দিদির উপরে বিশ্বাসে আঘাত হানাই বি জে পি-র প্রধান টার্গেট । আর সেটাই করবেন মুকুল রায় । জেলায় জেলায় ঘুরে ঘুরে। এই সফরের সময়ে তৃণমূল কংগ্রেসের নজরদারি বাড়বে নিজেদের উপরেই । কোথায় কোন নেতা কাছে এলেন, কে যোগাযোগ করলেন এসব আলোচনায় থাকবে । আবার কোথায় কোথায় মুকুলের টানে সমাবেশে ভিড় হল, কোথায় কোথায় পাল্টা সমাবেশ করতে হবে তা নিয়েও ব্যস্ত থাকতে হবে তৃণমূল কংগ্রেসকে । মুকুল রায়ের রাজনৈতিক শিক্ষায় দিদিমণি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই বিরোধী হিসেবে কী ভাবে খবরে থাকতে হয় তা তাঁর অজানা নয় । যেখানে সমাবেশে লোক টানতে পারবেন না সেখানেও কী করে খবরে থাকতে হয় তা দিদিমণির কাছেই শিখেছেন মুকুল । নিশ্চয়ই প্রয়োগ করবেন। এই ৩০ দিনের সফরে কতটা ফল তিনি দেখাতে পারবেন তা এখনই হলপ করে বলা যাবে না । তবে, এটা নিশ্চিত রাজ্যে পারদ যতই নামুক শীতের , রাজনীতির উত্তাপ বাড়তে থাকবেই ।
2017-12-04