হোজাই (অসম), ৪ডিসেম্বর (হি.স.) : হোজাই জেলার বিভিন্ন প্রত্যন্ত গ্রামে বুনো হাতির তাণ্ডবে বিপন্ন হয়ে উঠেছে নাগরিক জীবন। অন্যান্যদিনের মতো শনি ও রবিবার রাত থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত প্রায় ৭০ থেকে ৮০টি হাতির দল বিক্ষিপ্তভাবে হোজাই জেলা সদর শহর লাগোয়া ফকিরাবস্তি, তেলিবস্তি, উদয়পুর, সাগরবস্তি-সহ বিভিন্ন গ্রামে হামলা চালিয়েছে। হাতির সন্ত্ৰাস থেকে রক্ষা পেতে গ্রামের মানুষজন মশাল, আতসবাজি ইত্যাদি পুড়িয়ে হাতির দলকে তাড়াতে ব্যর্থ চেষ্টা চালাচ্ছেন। ইতিমধ্যে জেলার লংকা এবং অন্যান্য এলাকায়ও বুনো হাতির দল শনিবার রাত থেকে তাণ্ডব চালিয়েছে। লংকার কৃষ্ণনগর অঞ্চলে ব্যাপক উপদ্ৰব সৃষ্টি করে শ শ বিঘা ধান খেতের ফসল নষ্ট করে দেওয়ার পাশাপাশি লণ্ডভণ্ড করেছে কয়েকটি বসতঘর। হাতির উপদ্ৰবে এলাকায় আতংক বিরাজ করছে। ৭০-৮০টির হাতির বিশাল দল বিক্ষিপ্তভাবে গত বৃহস্পতি, শুক্র, শনি এবং রবিবার রাতে জনবহুল পাঞ্জাবিবস্তি, চামবাড়ি, হাওয়াইপুরের গোঁহাগাঁও, গোসাঁইগাঁও, পিপলপুখুরিতে ঢুকে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে। এতে বিভিন্ন গ্রামের কয়েকটি বসতবাড়ি সম্পূর্ণ ধূলিস্যাত করে দেওয়ায় গৃহস্থরা সর্বস্বান্ত হয়ে গেছেন। নষ্ট করে দিয়েছে বিঘার পর বিঘা খেতের ফসল।তবে কোনও হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ব্যাপক। গ্রামগুলির জনসাধারণ জানিয়েছেন, গত প্রায় এক সপ্তাহ ধরে গোটা অঞ্চলে প্রায় প্রতি রাতে হাতির দল খাদ্যের সন্ধানে নেমে এসে বিস্তর উপদ্রব করছে। এরা লামডিং বনাঞ্চল থেকে খাদ্যের সন্ধানে জনবসতি এলাকায় ঢুকে সন্ত্রাসরাজ কায়েম করেছে বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ। এরা লংকা এবং হাওয়াইপুর রেল স্টেশন সংলগ্ন রেল লাইন পার হয়ে অবাধে যাতায়ত করছে। প্রথমে লংকার নিকটবর্তী পাসভণ্ডার, পাঞ্জাবিবস্তি, শ্যামবরিয়া অঞ্চলে প্ৰবেশ করে ব্যাপক হাঙ্গামা করছে। হাতি দলটি বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত হয়ে হামলা চালাচ্ছে। বসতঘরের পাশাপাশি কুশিয়ার ও ধান খেতে পড়ে সব দুরমুশ করে দিচ্ছে। বরদলঙের পার্শ্ববর্তী কৃষ্ণনগর অঞ্চলে একাধারে ১০টি বসতঘর পুরো ধূলিস্যাত করে দিয়েছে হাতির দল। এতে সর্বস্বান্ত হয়েছেন মন্টু মালাকার (নিতাই), প্ৰেমধনি দাস, লনি দাস, কৃষ্ণ দাস, রবীন্দ্ৰ দাস, কৃষ্ণ মালাকার, মনিন্দ্র দাস, অমূল্য দাস, অৰ্জুন দাস, গুনুসিন্ধু দাস, উমাপদ মালাকার ও রবীন্দ্ৰ দাস। অন্যদিকে ডাওলঙের মালাকারবস্তির মুকুল মালাকার, সুধন্য মালাকার, রূপক মালাকার, সত্যেন্দ্র ব্ৰিজ, সনাতন মালাকার, রেখা মালাকার, স্বপন মালাকার, নিরু মালাকার, মানিক মালাকার এবং সুভাষ মালাকারের ঘরও ভেঙে তছনছ করে দিয়েছে দামালেরা।
2017-12-04