কলকাতা, ১ ডিসেম্বর (হি.স.) : আধার লিঙ্ক নিয়ে ফের কেন্দ্রকে নিশানা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের৷ ফের প্রশ্ন তুললেন “ব্যাঙ্ক ও মোবাইলে আধার লিঙ্ক কেন?” শুক্রবার হাড়োয়ায় তিনি এই সঙ্গে তিনি অভিযোগ করেন, বিজেপি-র কোনও কাজ নেই, শুধু বড় বড় কথা।
এর আগেও সর্বক্ষেত্রে আধার সংযুক্তিকরণ নিয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকারের সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তা, একশো দিনের কাজেই হোক, বা অন্য প্রয়োজনে৷ গত ১৬ জুন আধার নিয়ে কেন্দ্রের সমালোচনায় মুখর হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আধার নিয়ে তাঁর টুইট, ১০০ শতাংশ মানুষের হাতে আধার কার্ড না পৌঁছলে, তা বাধ্যতামূলক করা উচিত নয়। তিনি লেখেন, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলার ক্ষেত্রে আধার কার্ড বাধ্যতামূলক হলে সবথেকে বেশি সমস্যায় পড়বে সাধারণ গরিব ও প্রান্তিক মানুষেরা। তাই বাধ্যতামূলক করার আগে আধারকার্ড ১০০ শতাংশ মানুষের কাছে যাতে পৌঁছয় তা নিশ্চিত করা উচিত সবার আগে।
গত ২১ জুলাই তিনি বলেন, বাচ্চা জন্মালেই আধার দরকার। এটা কোনও কথা হল! তার মণিই তো তখনও স্থির হয়নি! এখন তো কেন্দ্র যেখানে পারছে আধার লিঙ্ক করতে বলছে। সে বাথরুমে গেলেও আধার, বিয়ে করতে গেলেও আধার।
গত ২৫ অক্টোবর তিনি এক সমাবেশে বলেন, “আমি চ্যালেঞ্জ নিয়ে বলছি, মোবাইল নম্বরের জন্য আধার কার্ড দেব না। তাতে যদি আমার নম্বর কেটে দেয়, কেটে দেবে। আমাকে এত লোককে রিপ্লাই দিতে হবে না। ব্যক্তিগত গোপনীয়তা আমার অধিকার। আধার নম্বর দিলেই সব তথ্য ফাঁস হয়ে যাবে।” মঞ্চে উপস্থিত দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, “আমি আধার কার্ড দেব না।
এর দু’দিনের মাথায় নজরুল মঞ্চে উপস্থিত কর্মী-নেতা-মন্ত্রীদের সামনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “কেন্দ্র কথায় কথায় বলছে আধার কার্ড চাই।“ এর জবাবে ৩১ অক্টোবর বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে বলেন, “দেশের ফেডেরাল স্ট্রাকচার-কে সম্মান করুন, নয় পদত্যাগ করুন” । তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী আধার লিঙ্কের বিরোধিতা করেছেন কারণ তা হলে আধার লিঙ্ক হলে ভুয়ো অ্যাকাউন্টে যে টাকা রয়েছে তাও শেষ হয়ে যাবে। তখন তৃণমূলের নেতাদের চা খাওয়ার পয়সাও জুটবে না।“
শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী হাড়োয়ায় বললেন, “আধার লিঙ্ক করলে অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা উধাও হতে পারে৷ ব্যাঙ্কের টাকা উধাও হলে কি কেন্দ্র দায় নেবে? মোবাইল যদি ব্যবহার না করতে দেয় করব না৷ কিন্তু আধার লিঙ্ক করাব না৷”
নাক কাটার হুমকি নিয়েও এ দিন সরব হন মুখ্যমন্ত্রী৷ তিনি প্রশ্ন করেন, “চার বছর হয়ে গেল কেন্দ্র কী করেছে? কেউ যদি কাজ করে আমায় নাক-কান কাটার কথা বলতেন, তবে আমি মেনে নিতাম৷ কোনও কাজ নেই, শুধু বড় বড় কথা৷”
2017-12-01