রাজ্যে শান্তির পরিবেশ নষ্ট করার চক্রান্ত শুরু হয়েছে ঃ মুখ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৩০ নভেম্বর৷৷ উন্নয়নের ক্ষেত্রে যোগাযোগ ব্যবস্থা হচ্ছে খুব গুরুত্বপূর্ণ৷ যোগাযোগ ব্যবস্থাকে বাদ দিয়ে অগ্রগতি সম্ভব নয়৷ তা সড়ক, রেল, বিমান বা টেলি যোগাযোগ যাই হোক না তা সমান গুরুত্বপূর্ণ৷ আজ পুরাতন আগররতলার বলদাখালে চন্দ্রপুর-আগরতলা সড়কে হাওড়া নদীর উপর ‘অনিল সরকার সেতু’-র উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার একথা বলেন, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিধানসভার উপাধ্যক্ষ পবিত্র কর৷ সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক রামু দাস, আগরতলা পুর নিগমের মেয়র ড প্রফুল্লজিৎ সিনহা, ডেপুটি মেয়র সমর চক্রবর্তী, পুরাতন আগরতলা পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যান সবিতা দাস ও পূর্ত দপ্তরের মুখ্য বাস্তুকার সোমেশ দাস প্রমুখ৷ হাওড়া নদীর উপর এই আর সি সি ব্রীজটি নির্মাণ করেছে পূর্ত দপ্তর৷ ৭২ মিটার দীর্ঘ ও ১২ মিটার প্রস্ত এই ব্রীজ নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৫৭৯ লক্ষ টাকা৷ সময় লেগেছে চার বছর দশ মাস৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, জাতীয় সড়কের উপর না হলে ব্রীজ নির্মাণে ভারত সরকার টাকা দিচ্ছে না৷ তাই বলে ত্রিপুরা সরকার হাত গুটিয়ে বসে নেই৷ ১৯৭৮ সালে রাজ্যে বামফ্রন্ট সরকার ক্ষমতায় এসেই সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়৷ রাজ্যে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে না পারলে পানীয় জল, সেচ, বিদ্যুৎ পরিষেবা গ্রামে নিয়ে যাওয়াও যাবে না৷ গ্রামের উন্নতি না হলে গ্রামীণ মানুষের আর্থ সামাজিক বিকাশ না ঘটলে সার্বিক বিকাশ সম্ভব নয়৷ তাই সরকার গ্রামীণ পরিকাঠামো তহবিল (আরআইএফ) থেকে ঋণ নিয়ে রাজ্যের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নে ধারাবাহিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে৷
মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার বলেন, অনেক আন্দোলনের ফলে রাজ্যে রেল এসেছে আগরতলা পর্যন্ত৷ তা সাব্রুম পর্যন্ত সম্প্রসারিত হবে রাজ্যে রেলের জন্য যে আন্দোলন হয়েছে – তা এই ইতিহাস৷ এক সময় সাব্রুমের মানুষ বিশ্বাস করতেন না রেল সাব্রুম পর্যন্ত যাবে৷ আমাদের দাবী আন্দোলন বাস্তবে রূপ পাচ্ছে৷ এখন সাব্রুমের মানুষও বিশ্বাস করেন রেল যাবে সাব্রুম পর্যন্ত৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এন এফ রেলের নতুন দায়িত্ব প্রাপ্ত জেনারেল ম্যানেজার গতকাল আমার সাথে কথা বলে গেছেন৷ তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ২০১৯ এর মার্চ মাসের মধ্যে সাব্রুম রেল পৌঁছাবে৷ আমরা বলেছি এই কাজটা ২০১৮ এর জুন জুলাই মাসে শেষ করার জন্য চেষ্টা করুন৷
তিনি বলেন, এই যে উন্নয়ন হচ্ছে তা সম্ভব হয়েছে রাজ্যে শান্তি সম্প্রীতি রয়েছে বলেই৷ সন্ত্রাসবাদী দৌরাত্মে এক সময় কি পরিস্থিতি হয়েছিলো রাজ্যের৷ এ রাজ্যের মানুষ তা ভুলে যাননি৷ সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে শান্তিকামী মানুষের সহযোগিতায় ক্রমাগত লড়াইয়ের ফলে তাদের কোণঠাসা করা হয়ে গেছে৷ রাজ্যে শান্তি এসেছে৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সুস্থিতির এই পরিবেশ নষ্ট করার চক্রান্ত শুরু হয়েছে৷ ধর্মে-বর্ণে, জাতি-উপজাতির সম্প্রীতি বিনষ্ট করার জন্য ষড়যন্ত্র হচ্ছে৷ সবাইকে সতর্ক থেকে এই চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে মুখ্যমন্ত্রী আহ্বান জানিয়েছেন৷
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করে বিধানসভার উপাধ্যক্ষ পবিত্র কর বলেন, আগরতলা -পুরাত আগরতলার মধ্যে সংযোগকারী সেতু এটি৷ রাজন্য আমলে এখানে একটি প্রশস্ত সড়ক ছিলো৷ বলদাখালের এই জায়গায় ছিলো খেয়াঘাট৷ ১৯৯৭ র সালে পশ্চিম চাম্পামুড়ার সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতিতে এখানে কাঠের সেতু নির্মাণ হয়েছিলো৷ আজ স্থায়ী সেতু গড়ে ওঠায় চন্দ্রপুর, পুরাতন আগরতলা, পুরাতন চাম্পামুড়া, মধ্য চাম্পামুড়া, পশ্চিম চাম্পামুড়া, আড়ালিয়া সহ সদর ও জিরানীয়া মহকুমা, জম্পুইজলা ব্লক এবং সিপাহীজলা জেলার সাথে জাতীয় সড়কে যোগাযোগ প্রশস্ত হলো৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *