নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৭ নভেম্বর৷৷ গত ২৪শে নভেম্বর তৈদু থেকে তেলিয়ামুড়া যাওয়ার পথে তৈদু শাখার গ্রামীণ ব্যাঙ্কের চার জন কর্মী সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা নাগাদ অপহৃত হন৷ ধারণা করা হচ্ছে মুক্তিপণ আদায়ের লক্ষ্যে কিছু অপরিচিত দুসৃকতকারী এই অপহরণ করে৷ ত্রিপুরা সরকারের স্বরাষ্ট্র দপ্তর থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে৷ উল্লেখ্য, তাঁদের তিন জন ছোট গাড়িতে এবং একজন বাইকে চড়ে আসছিলেন৷
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, এই ঘটনার পর খোঁজাখঁুজি শুরু হয়েছে এবং অপহৃত কর্মীদের উদ্ধারে কম্বিং অপারেশন চলছে৷ সীমান্ত বাহিনীকে সীমান্ত সীল করে দিতে অনুরোধ করা হয়েছে৷ ইতিমধ্যে অপহৃত ব্যক্তিদের ব্যবহৃত গাড়ি ও বাইক উদ্ধার করা হয়েছে৷ অপহৃতদের খুঁজে বের করতে সমস্ত ধরণের প্রচেষ্টা চলছে৷
গত ২৬ নভেম্বর দিল্লী থেকে ফিরে মুখ্যমন্ত্রী ঘটনাটি নিয়ে পর্যালোচনা করেন৷ আজও মুখ্যমন্ত্রী এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত পুলিশ কি কি ব্যবস্থা নিয়েছে সে সম্পর্কে খোঁজখবর নেন এবং অপহৃত ব্যক্তিদের উদ্ধারে সম্ভাব্য যাবতীয় পদক্ষেপ নিতে পুলিশকে নির্দেশ দেন৷
প্রসঙ্গত, অফিস থেকে বাড়ি ফেরার পথে ম্যানেজার সহ ব্যাঙ্কের চারজন কর্মী অপহৃত হয়েছিলেন৷ ঘটনার ৭২ ঘন্টা কেটে গেলেও পুলিশ এখন পর্যন্ত তাঁদের উদ্ধার বা কোথায় তাঁরা রয়েছেন তার হদিশ পায়নি৷ এদিকে অপহৃতদের পরিবারে মুক্তিপণের অঙ্ক বাড়িয়ে ফোন এসেছে বলে জানা গেছে৷ ফলে অপহৃতদের পরিবারের লোকজন আতঙ্কে ভুগছেন৷ অন্যদিকে,রবিবার সন্ধ্যায় আমবাসা পুলিশ সুপারের সরকারী আবাসনের কাছাকাছি এলাকা থেকে ব্যাঙ্ক ম্যানেজারের গাড়িটি উদ্ধার করা হয়েছে৷ তাছাড়া তেলিয়ামুড়ার মহারানীপুর এলাকা থেকে অপহৃত ব্যাঙ্ক কর্মী সুব্রত দেববর্মার বাইকটি উদ্ধার করা হয়েছে৷ বাইক ও গাড়ি দুই জায়গা থেকে উদ্ধারের ঘটনায় পুলিশের তদন্তে আরও জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে৷
পুলিশ জানিয়েছে, তৈদু থেকে আগরতালয় আসার পথে গ্রামীণ ব্যাঙ্কের ম্যানেজার তন্ময় ভট্টাচার্য, ডেপুটি ম্যানেজার রক্তিম ভৌমিক, সুজিত দেব এবং চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী সুব্রত দেববর্মাকে অপহরণ করা হয়েছিল৷ তৈদু গ্রামীণ ব্যাঙ্কের এই চার কর্মী একটি গাড়ি ও একটি বাইকে করে ছয়টা নাগাদ বাড়ি ফিরছিলেন৷ জানা গেছে, সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের উল্টোদিকে একটি পানের দোকান থেকে পান খেয়ে সুজিত দেব ও সুব্রত দেববর্মার বাইকে এবং রক্তিম ভৌমিক ম্যানেজার তন্ময় ভট্টাচার্যের গাড়িতে করে রওয়ানা হন৷ রাত দশটা পর্যন্ত তন্ময়বাবু বাড়িতে না পৌঁছলে মোবাইলে কোনও যোগাযোগ না হওয়ায় তাঁর পরিবার উদ্বিগ্ণ হয়ে পড়েন৷ পূর্ব থানায় ঘটনাটি জানানো হয়৷ এর পরই দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়৷ খবর পাঠানো হয় তেলিয়ামুড়া থানায়৷ থানা থেকে পুলিশ বধুরাইপাড়ায় সুব্রত দেববর্মা বাড়ি, রক্তিম ভৌমিক এবং সুজিত দেবের বাড়িতে যোগাযোগ করে তাঁদেরও কোন হদিশ না পেয়ে রাত দেড়টা নাগাদ তল্লাশি অভিযানে নামে৷ কিন্তু এখন পর্যন্ত পুলিশ কোনও খোঁজ পায়নি তাঁদের৷ এদিকে সংশ্লিষ্টদের পরিবারে ফোন করে অপহরণকারীরা মুক্তিপণ হিসাবে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করেছে৷ এ বিষয়ে পুলিশ মহানির্দেশকের বিবরণ, প্রতি পরিবারের কাছে ৫ থেকে ১০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছে বলে অপহৃতদের পরিবার থেকে বলা হয়েছে৷ কিন্তু আজ মোট মুক্তিপণের অর্থ ৪০ লক্ষাধিক টাকার উপরে উঠেছে বলে তাঁদের পরিবার সূত্রে জানা গেছে৷ অপহরণকারীদের প্রকৃত পরিচয় এখনও জানতে পারেনি পুলিশ৷ কোনও জঙ্গি সংগঠনও অপহরণের দায় স্বীকার করেনি এখনও৷
2017-11-28