নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১১ নভেম্বর৷৷ রাজ্যে এসেই ঝড় তুলে দিলেন বিজেপির তিন সাংসদ৷ তাতে, নির্বাচনী উত্তাপ আরও বেড়েছে বলেই মনে

করা হচ্ছে৷ বিজেপির সংসদীয় প্রতিনিধি দলের তিন সদস্য মিনাক্ষি লেখি, সরোজ পান্ডে এবং প্রহ্লাদ প্যাটেল শনিবার রাজ্যে এসেই সন্ত্রাস কবলিত বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছেন৷ আক্রান্ত বিজেপি কর্মী সমর্থকদের সাথে দেখা করেছেন৷ আক্রান্তদের সাথে দেখা করার পর তাঁরা হুংকার দিয়ে বলেন, শাসক দলের সন্ত্রাস কোনভাবেই বরদাস্ত করা হবেনা৷ এইভাবেই সন্ত্রাস চললে কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপ কেউ আটকাতে পারবেনা৷ তাঁদের বক্তব্য, দিল্লি ফিরে গিয়ে রাজ্যের অস্থির পরিস্থিতি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে জানানো হবে৷ শুধু তাই নয়, সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে ত্রিপুরায় সন্ত্রাসের সমস্ত ঘটনা তুলে ধরা হবে৷
এদিন সাংসদ মিনাক্ষি লেখি সদরের বিভিন্ন সন্ত্রাস কবলিত এলাকা পর্যবেক্ষণ করেছেন৷ সাংসদ সরোজ পান্ডে বিশালগড়ে এবং সাংসদ প্রহ্লাদ প্যাটেল দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলায় সন্ত্রাসের ঘটনাবলির পর্যবেক্ষণ করেছেন৷ প্রত্যেকেই আক্রান্ত এবং নির্যাতিতদের খোঁজ খবর নিয়েছেন৷
পর্যবেক্ষণ চলাকালীন তিন সাংসদই সংবাদ মাধ্যমের কাছে রাজ্য সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছেন৷ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি রাজ্যে নিয়ন্ত্রণের বাইরে সেই বিষয়টি উল্লেখ করে তাঁদের বক্তব্য, কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপ ছাড়া এই রাজ্যে আগামী বিধানসভা নির্বাচন পর্যন্ত গণতন্ত্র রক্ষা করা সম্ভব নয়৷
ত্রিপুরায় ক্রমাগত চলতে থাকা বাম সন্ত্রাসের ফলে প্রতিদিন রাজ্যের কোথাও না কোথাও বিজেপি কার্যকর্তারা বাম ক্যাডার বাহিনীর দ্বারা আক্রমণের শিকার হচ্ছে৷ প্রতিদিন যেখানে শাসক দলের নেতা ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সমর্থক নেতা ও কর্মীরা প্রচুর সংখ্যায় বিজেপিতে যোগদান করছেন তখন ক্ষমতা হারানোর ভয়ে দিশেহারা সিপিআই(এম) শেষ অস্ত্র হিসাবে তাদের ক্যাডার বাহিনী ও দলদাস কিছু পুলিশকে দিয়ে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস শুরু করেছে বলে অভিযোগ করেছে বিজেপি৷ রাজ্যের এই পরিস্থিতি দিনের পর দিন আরো খারাপ অবস্থার দিকে ধাবিত হচ্ছে৷ রাজ্যে ক্রমবর্ধমান চলতে থাকা এই বামন্ত্রাসের বাস্তবিক হাল সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে আজ বিজেপির তিন সদস্যের এক প্রতিনিধি দল রাজ্যে এসেছে৷ সাংসদ মিনাক্ষী লেখি
আজ রাজ্যে এসেই প্রথমে জিবি হাসপাতালে চলে যান এবং সিপিএম ক্যাডার বাহিনীর আক্রমনের ফলে আহত বিজেপি কর্যকর্তাদের খোঁজখবর নেন৷ সেখান থেকে তিনি খয়েরপুরে চলে যান এবং সেখানে গিয়ে বাম সন্ত্রাসের শিকার বিজেপি কর্মীদের সাথে কথা বলেন৷ তিনি জানান রাজ্য এক ভয়াভহ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে৷ খয়েরপুর থেকে ফিরে এসে মিনাক্ষি লেখি প্রেস ক্লাবে একটি আইনজীবি সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন৷ অন্যদিকে সাংসদ প্রহ্লাদ প্যাটেল আজ দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলার জোলাইবাড়িতে ধর্ষণ ও খুনের শিকার দুই জনজাতি নাবালিকা প্রিয়াঙ্কা রিয়াং ও সুপ্রিয়া মগের পরিবারের সদস্যদের সাথে দেখা করে তাদের কাছ থেকে ঘটনার সমস্ত তথ্য জানেন৷ তিনি বলেন, এই রাজ্যে পুলিশের ভূমিকা হতাশাজনক এবং পুলিশ প্রশাসন সম্পূর্ণরূপে দলদাসে পরিণত হয়েছে ও সামগ্রিকভাবে রাজ্যে আইন শৃঙ্খলা ভেঙ্গে পড়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন৷ তাছাড়া রাজ্য সরকারের দুর্নীতি নিয়েও তিনি তীব্র আক্রমণ করেন৷ তারপর তিনি শান্তিরবাজার থেকে ধনপুরে চলে যান এবং সেখানে দুসৃকতিদের হাতে নিহত বিএসএফ জওয়ান দীপক কুমার মণ্ডলের স্মৃতির উদ্দেশ্যে শ্রদ্ধাঞ্জলি দেন ও সেদিনের ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ শুনেন৷ উনার সাথে আজ বিজেপির রাজ্য সভাপতি বিপ্লব কুমার দেব, সহ সভাপতি সুবল ভৌমিক, সহ সভাপতি রামপদ জমাতিয়া উপস্থিত ছিলেন৷ অন্যদিকে, বিশালগড়ে মুড়াবাড়ীতে সন্ত্রাস কবলিত এলাকা সফর করেছেন বিজেপির সাংসদ সরোজ পান্ডে৷ শ্রীমতি পান্ডে সেখানে আক্রান্ত বিজেপি নেতা কর্মীদের বাড়িতে যান৷ তাদের সাথে কথা বলেন এবং বিজেপি পার্টি অফিসটিও দেখে আসেন৷